দিনাজপুরে মাসব্যাপী ঐতিহ্যবাহী চেরাডাঙ্গী পশু মেলা শুরু, আগের সেই জৌলুশ নেই
Published: 7th, February 2025 GMT
‘দেশ স্বাধীনের পর থিকা এই মেলা যত দিন করছনো নিয়ম কারণ (কানুন) সব ঠিক আছলো। এইবার কেনবা দেখেছো আরেক মতন। হারা মেলাত ঘোড়া আনছি সাতটা। গাঢ়াক (ক্রেতা) নাই, মাল আনছি নেওয়াইও (ক্রেতা) নাই। হারা আছি রোববার থাকি। আইজ বিশুতবার (বৃহস্পতিবার)। কাহো নওছে না, কাক দেইম। এইটা (একটা ঘোড়া দেখিয়ে) কিনছো মুই সোহাত্তর (সত্তর হাজার)। এখন দাম কহচে ত্রিশ-বত্রিশ। তে কেংকা করি টিকিমো আর কেংকা করি বাঁচিমো।’
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুর সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী চেরাডাঙ্গী পশু মেলায় এভাবেই কথা বলছিলেন ঘোড়া ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন ওরফে দুলু (৬০)। তিন পুরুষ ধরে ঘোড়ার ব্যবসা করেন তিনি। ৭৮ বছর বয়সী এই মেলায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিবার ঘোড়া বিক্রি করতে আসেন। তবে কয়েক বছর ধরে ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। এইবার ব্যবসার অবস্থা আরও নাজুক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাসব্যাপী এই পশু মেলার উদ্বোধন করা হয়। যদিও উদ্বোধনের দুই দিন আগে থেকেই উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘোড়া নিয়ে মেলায় আসছেন ব্যবসায়ীরা। বাঁশের খুঁটিতে ঘোড়া বেঁধে রেখে মেলায় তাঁবু করেছেন তাঁরা। ভালোবেসে ঘোড়াগুলোর নামও দিয়েছেন পিয়া রানী, পপি, বিজলী, রাস্তার রাজা, সুইটি, পারলে ঠেকাও, কিরণমালা। ক্রেতা-বিক্রেতার পাশাপাশি ঘোড়া দেখতে এসেছেন বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থী। শাহি মেজাজে দাঁড়িয়ে থাকা ঘোড়াগুলোও যেন দর্শনার্থীদের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে একেকটি ছোট ঘোড়ার দাম ডাকা হচ্ছে ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা। মাঝারি ঘোড়া ৩০ থেকে ৫০ হাজার এবং অপেক্ষাকৃত বড় ঘোড়ার দাম ডাকা হচ্ছে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। ঘোড়দৌড় খেলার ঘোড়ার দাম এক লাখ থেকে দুই লাখ। আবার হালচাষের জন্য প্রতি জোড়া ঘোড়ার দাম এক থেকে দেড় লাখ টাকা। কেউ প্রয়োজনে কিনতে এসেছেন, কেউ শখ করে আবার কেউবা বদল করবেন বলে ঘোড়া নিয়ে মেলায় এসেছেন। ঘোড়ার পিঠে চড়ার শখ মিটিয়ে নিচ্ছেন কেউ। তবে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।
উদ্বোধনের দিনেই শিশু-কিশোরদের ভিড়। নাগরদোলায় চড়তে হইহুল্লোড়। বৃহস্পতিবার দিনাজপুর সদর উপজেলায় ঐতিহাসিক চেরাডাঙ্গী মেলায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
১০ ও ১১ মে সিটি ব্যাংকের সব সেবা বন্ধ থাকবে
ডেটা সেন্টার স্থানান্তরের কাজ সম্পন্ন করতে লেনদেনসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম দুই দিন বন্ধ রাখবে সিটি ব্যাংক। আগামী ৯ মে রাত ১২টা থেকে ১১ মে রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে ব্যাংকটিকে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ–সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, ডেটা সেন্টার স্থানান্তর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য আগামী ৯ মে রাত ১২টা থেকে ১১ মে রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে সিটি ব্যাংককে সম্মতি দেওয়া হলো।
১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করা সিটি ব্যাংকের গ্রাহক গত বছর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখে। ২০০৭ সালে ব্যাংকটির গ্রাহক ছিল ৬৮ হাজার। ব্যাংকটির কর্মকর্তার সংখ্যা এখন ৫ হাজার ৩২১ জন। দেশের সবচেয়ে বেশি সাত লাখ ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক রয়েছে সিটি ব্যাংকের। ব্যাংকটির ক্রেডিট কার্ডের ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত বছর শেষে ব্যাংকটির আমানত বেড়ে হয়েছে ৫১ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। আর ঋণ ছিল ৪৪ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। গত বছর শেষে হাজার কোটি টাকা মুনাফার মাইলফলক ছুঁয়েছে সিটি ব্যাংক। ব্যাংকটি গত বছর শেষে সমন্বিত মুনাফা করেছে ১ হাজার ১৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত মুনাফার পরিমাণ ছিল ৬৩৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৩৭৬ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ বেড়েছে।