চায়ের সঙ্গে কোন খাবার খেলে কী সমস্যা হতে পারে
Published: 8th, February 2025 GMT
সকালে বা বিকেলে ধোঁয়া ওঠা এককাপ চা প্রশান্তি দেয়, মন চাঙা করে। তবে চায়ের সঙ্গে প্রায়ই আমরা নানা রকম ‘টা’ বা নাশতাও খাই। তখন চা খাওয়া হয়ে যায় ‘চা-নাশতা’। কিন্তু কিছু খাবার খেলে চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণসহ অন্যান্য গুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই চায়ের সঙ্গে খাওয়া চলবে না, এমন সব খাবার সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো।
চায়ের সঙ্গে দুধজাতীয় খাবার, যেমন পায়েস, ফিরনি, দই খাওয়া যাবে না। কারণ, চায়ের ট্যানিন দুধের ক্যাসিন প্রোটিনের সঙ্গে মিশে হজমে সমস্যা করে। আবার চায়ের অ্যাসট্রিজেন্সি দুধের প্রোটিনের সংস্পর্শে এসে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে দেয়। অনেকেরই দুধ–চা পছন্দ, সেটাও যতটা সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
ক্রিমজাতীয় খাবার, যেমন ক্রিমরোল, পেস্ট্রি, ক্রিম দেওয়া বনরুটি চায়ের সঙ্গে খান অনেকে। ক্রিমযুক্ত খাবার খেলে পেটের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে পেট ভরা ভরা লাগা, বমিও হতে পারে। অনেকেরই মালাই–চা পছন্দ, পুষ্টির দিক বিবেচনা করে এসব খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
চায়ের সঙ্গে বিভিন্ন মিষ্টিজাতীয় খাবার, যেমন কেক, পেস্ট্রি, বিস্কুট খাওয়া যাবে না। কারণ, মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে রক্তে চিনি বা শর্করার মাত্রা খুব দ্রুত বেড়ে যায়। তা ছাড়া চায়ের সঙ্গে এসব খাবার খেলে ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা হ্রাস পায় এবং চায়ের ওজন কমানোর গুণ নষ্ট হয়।
চায়ের সঙ্গে বিভিন্ন ভাজাপোড়া খাবার বেশ জনপ্রিয়। এসব ভাজাপোড়া শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং হজমের সমস্যাসহ বুক জ্বালাপোড়া, অন্ত্রের প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়।
চায়ের সঙ্গে টকজাতীয় ফল (কমলা, আঙুর ইত্যাদি) খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। টকজাতীয় খাবারের সাইট্রাস অ্যাসিড চায়ের অ্যাসট্রিজেন্সির সঙ্গে মিশে তিতকুটে স্বাদ সৃষ্টি করে। শুধু তা–ই নয়, সাইট্রাস অ্যাসিড চায়ের, বিশেষ করে গ্রিন–টির অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ক্যাটেচিন হজম হতে দেয় না।
চায়ের সঙ্গে অতিরিক্ত ঝালজাতীয় খাবার খেলে ক্যাপাসাচিনের সঙ্গে চায়ের অ্যাসিড মিশে হজমে সমস্যা করে।
অনেকে দুধ চা খেতে পছন্দ করেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।