যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে চালক ও সেখানে থাকা ৯ জন যাত্রীর সবাই নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড বিধ্বস্ত ওই বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছে। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার বরফাচ্ছন্ন সাগরের উপরে পড়ে থাকা বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এতে থাকা ১০ জনের সবাই প্রাণ হারিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের আলাস্কার প্রধান ক্লিন্ট জনসনও এই দুর্ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এখন আমাদের তদন্তে মনোযোগ দিতে হবে ও দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে কাজ শুরু করতে হবে।

এদিকে আলাস্কা পুলিশের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি ছিল মার্কিন বিমান পরিষেবা সংস্থা বেরিং এয়ারের একটি সেসনা ক্যাটাগরির বিমান। এ ক্যাটাগরির বিমানগুলো ছোট আকারের হয়।

কোস্ট গার্ডের তথ্যানুযায়ী, বিমানটির ধ্বংসাবশেষ আলাস্কার নোম শহর থেকে ৩৪ মাইল (৫৫ কিমি) দক্ষিণ-পূর্বে পাওয়া যায়। তারা দুর্ঘটনাস্থলের একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে তুষারের মধ্যে বিধ্বস্ত বিমান ও উদ্ধারকারী দলকে দেখা যাচ্ছে।  

সেসনা ২০৮বি গ্র্যান্ড কারাভান মডেলের বিমানটি বেসরকারি সংস্থা বেরিং এয়ার পরিচালিত একটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এটি নিখোঁজ হয়। বিমানটি আলাস্কার ইউনালাকলিট থেকে ১৫০ মাইল দূরে নোম শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল।  

কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা বেঞ্জামিন ম্যাকইনটায়ার-কোবলে জানান, রাডার ডেটা অনুসারে বিমানটি হঠাৎ করেই উচ্চতা ও গতি হারায়। তবে এর কারণ সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। দুর্ঘটনার সময় এলাকায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং প্রতিকূল আবহাওয়া ছিল। বিমানটিতে থাকা যাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের ইতোমধ্যে খবর দেওয়া হয়েছে, তবে নিহতদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সাম্প্রতিক দুটি দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করছেন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে একটি দুর্ঘটনা ঘটে ওয়াশিংটন ডিসির কাছে; মাঝ আকাশে একটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার ও একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের সংঘর্ষে ৬৭ জন মারা যান। অপর দুর্ঘটনাটি ঘটে ফিলাডেলফিয়ায়, একটি মেডেভ্যাক জেট বিধ্বস্ত হয়ে সেই যাত্রায় সাতজন প্রাণ হারান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন আল স ক

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ