সাবেক আইজিপি বেনজীরের বক্তব্যের প্রতিবাদ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের
Published: 8th, February 2025 GMT
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি বলেছে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ কারও সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করাকে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন।
আজ শনিবার বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো.
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ এই পলাতক কর্মকর্তার (বেনজীর) বক্তব্য পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত সব সদস্যকে ক্ষুব্ধ করেছে। ২০২৪–এর জনতার অভ্যুত্থানে হাজার হাজার মানুষ নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের আলোকবর্তিকা স্থাপন করেছে, পুলিশ বাহিনী সেই আলোকবর্তিকার আলোতে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়চিত্তে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সে লক্ষ্যেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মামলা তদন্ত ও অন্যান্য কাজে বর্তমান সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, পলাতক ও দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বেনজীরের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অবাস্তব বক্তব্যকে পুলিশ সদস্যরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। বিগত সরকারের আমলে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে প্রত্যেক পুলিশ সদস্য দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞ। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ কারও সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করাকে এই বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য অত্যন্ত ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন।
প্রসঙ্গত, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অনুসারীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে অংশ নেন। সেখানে দেওয়া তাঁর বক্তব্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জামালপুরে সমাজচ্যুতির ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন অভিযুক্ত মাতব্বররা
জামালপুর শহরে সাতটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘটনায় ভুল স্বীকার করে ভুক্তভোগীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত মাতব্বররা। ঢাকঢোল পিটিয়ে ও মাইকিং করে সমাজচ্যুতির ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন পর রোববার রাতে বসে নতুন সালিশ বৈঠক। এতে সেই মাতব্বররা নিজেদের ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একসঙ্গে বসবাসের অঙ্গীকার করেন। পরে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়, সাতটি পরিবারের বিরুদ্ধে নেওয়া আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
পারিবারিক বিরোধের জের ধরে জামালপুর শহরের দাপুনিয়া পশ্চিমপাড়ায় গত শুক্রবার রাতে বসে সালিশ বৈঠক। এতে ঘোষণা করা হয়, ‘মরহুম আজিজুল হক, ইসমাইল হোসেন মৌলভি, মুনসুর মিয়া, মানিক, জানিক, মজিবর ও নান্নুর পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে। এসব পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কেউ মেলামেশা, লেনদেন বা সামাজিক সম্পর্ক রাখতে পারবে না। এ নিষেধ অমান্যকারীকেও একঘরে করে দেওয়া হবে।’ পরে মাইকে এলাকাজুড়ে তা প্রচার করা হয়। এতে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পরদিন বিকেলে ইসমাইল হোসেন, মুনসুর মিয়াসহ ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে জামালপুর সদর থানায় অভিযোগ দেন। তারা জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে প্রভাবশালীরা সালিশ ডেকে একতরফাভাবে মুনসুর মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন। জরিমানার টাকা না দেওয়ায় সাত পরিবারকে সমাজচ্যুতির ঘোষণা দিয়ে একঘরে করে রাখা হয়েছে।
এই অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয় পুলিশ প্রশাসন। রোববার রাত ১০টার দিকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে এলাকার কয়েকশ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, উভয় পক্ষ এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের অঙ্গীকার করেছে। অভিযোগকারীরা তাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।