যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’–এর মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি। তিনি বলেন, এই অভিযানে চাঁদাবাজ, মাদক কারবারী নয়, যারা অস্থিতিশীলতার সঙ্গে জড়িত, তাদের ধরা হবে।

পরিস্থিতি যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বাভাবিক হবে, তত দিন এই অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানান নাসিমুল গনি।

সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সুপারদের (এসপি) নিয়ে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্রসচিব।

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রসচিব সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পুলিশ নৈতিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তারা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। থানা পুড়ে গেছে। ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে সারা দেশের সেনাবাহিনী মোতায়েন আছে। আগে তারা দাঁড়িয়ে থাকত। এখন তারা দেশকে অস্থিতিশীলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবে।’

নাসিমুল গনি বলেন, দেশের স্থিতিশীল অবস্থাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। আগে যেভাবে অভিযান করা হতো, এবার সেভাবে করা হবে না। এ ক্ষেত্রে মানবাধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আয়নাঘর যেন আর তৈরি না হয়।

স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘ডেভিল হান্ট গতকাল শনিবার শুরু হয়েছে। এ অভিযানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেসব পকেট থেকে দেশকে আনস্টেবল করা হচ্ছে, সেগুলোকে নিউট্রালাইজ করা। আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে, ব্রিফ করা হয়েছে এবং কাজ চলমান রয়েছে।’

মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষায় কীভাবে আইন প্রয়োগ করা যায়, সে জন্য আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এ কর্মশালায় ১৫০ জন কর্মকর্তা থাকবেন। পুলিশ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অ্যাটর্নি জেনারেল, আইজিপি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, শিল্প উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন। ওই কর্মশালা থেকে ঠিক করা হবে, কীভাবে মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষায় আইন বাস্তবায়ন করা হবে। সরকার চায় পুলিশ কোমর সোজা করে দাঁড়াক।

নাসিমুল গনি বলেন, ‘যেসব দেশে বিপ্লব হয়েছে, সেসব দেশ পরাজিত শক্তিকে রাখেনি। আমরা এতটা অমানবিক হতে পারিনি। কেউ কেউ পালিয়ে গেছে, কেউ কেউ দেশে আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই অনেকেই অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’

এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বিদেশে বসে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ নানা ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, এ বিষয়ে সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে? জবাবে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ পুলিশকে উসকানি দিচ্ছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ সময় অন্য এক সাংবাদিক জানতে চান, কী দেখছেন? তখন নাসিমুল গনি বলেন, ‘সব কথা বলা যাবে না। তারা দায়িত্ব থাকার সময় পয়সা দিয়ে পুলিশ বাহিনীর কিছু করতে পারেনি। এখন বিদেশে বসে উসকানি দিয়ে কিছু করতে পারবে?’

এ সময় আরেক সাংবাদিক জানতে চান, গতকাল পুলিশের চার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে?

স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, যাঁরা জড়িত থাকবেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে। একজন ডিআইজিসহ চারজন এসপি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ রকম সামনে আরও গ্রেপ্তার করা হবে।

পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কী আলোচনা হলো, তা জানতে চাইলে নাসিমুল গনি বলেন, ‘বৈঠকে পুলিশ সুপাররা নানান ধরনের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। আমরাও কিছু নির্দেশনা দিয়েছি।’

গতকাল কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন, সামনে আর এ ধরনের কোনো গ্রেপ্তার হবে কি না, তা জানতে চাইলে নাসিমুল গনি বলেন, ‘আশা করা যায়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর উপদ ষ ট ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ