ঢাকায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবের বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা
Published: 9th, February 2025 GMT
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৬তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসূফ মাহবুবুল ইসলাম।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘ইরানের ইসলামি বিপ্লব: বিশ্বের জাতিগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশী ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আইয়ুব ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইস্টার্ন প্লাস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমীন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মদী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “১৯৭৯ সালে ইমাম খোমেইনী (র.
তারা বলেন, “ইরানের ইসলামী বিপ্লব সাধারণ কোন বিপ্লব নয়। এ বিপ্লব বিগত এক হাজার বছরের সেরা আদর্শিক বিপ্লব, যা ইরানি জাতির জন্য ফিরিয়ে আনে প্রকৃত স্বাধীনতা, সম্মান ও উন্নয়নের বিরতিহীন অগ্রযাত্রার সেই গৌরবের ধারা। দশকের পর দশক ধরে চলমান নানা ষড়যন্ত্র ও কঠিন অবরোধের মধ্যেও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে দেশটি। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।”
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে শক্তিশালী অবস্থান বলে দিচ্ছে দেশটি কতটা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। শিক্ষা, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন নেতৃস্থানীয় দেশের তালিকায় রয়েছে ইরান। বিশেষ করে আবিষ্কার ও উদ্ভাবন, ন্যানো প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সাবমেরিন বা ডুবো জাহাজ শিল্প, অ্যারোস্পেস, সামরিক ও বেসামরিক বিমান শিল্প, কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ সংক্রান্ত প্রযুক্তি, চিকিৎসা এবং কৃষিতে বিশ্বসেরা ১০টি দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে আজকের ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।
বক্তারা বলেন, “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে ইরানের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশটির অগ্রগতি আজ চোখে পড়ার মতো। টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং ২০২৫-এ বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে স্থান পেয়েছে ইরানের ৮১টি বিশ্ববিদ্যালয়।”
তারা বলেন, “ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া দেয়া হয়েছে, কঠিন অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এসব কিছুই ইসলামি ইরানের দুর্বার অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারেনি। ইরান তার শক্তি ও সামর্থ্যের কারণেই বিশ্বে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। যেদেশটি কোন অপশক্তির কাছে মাথানত করে না। তবে বিশ্বের মজলুম মানুষের পক্ষে দেশটির সহযোগিতার হাত সব সময় প্রসারিত। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষের পক্ষে ইরান যেভাবে সর্বশক্তি দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছে এমন নজির বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সব সময় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো ইরানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে রেখেছে। কিন্তু ইসলামের শত্রুদের সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে দেশটি যেভাবে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে চলেছে তা বিশ্বের জাতিগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।”
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।
সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।
জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।
আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।
এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।