রংপুর, দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে নারীদের ফুটবল খেলার আয়োজনে বাধাদানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নারী আন্দোলনের কর্মীরা। তাঁরা ঘরে-বাইরে, মাঠে ও সাইবার জগতে নারীর নিরাপত্তা চেয়েছেন।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

নারী আন্দোলনের কর্মীদের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন অধিকারকর্মী মারজিয়া প্রভা। সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা নিত্রা, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, আলোকচিত্রী জান্নাতুল মাওয়া, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক তানিয়াহ মাহমুদা তিন্নী, অধিকারকর্মী জাকিয়া শিশির, হিল উইমেনস ফেডারেশনের সেক্রেটারি রীতা চাকমা, লেখক লাবণী মণ্ডল, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক সুস্মিতা রায় সুপ্তি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ নাজিফা জান্নাত, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নুজিয়া হাসিন রাশা এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের অর্থ সম্পাদক নওশীন মুস্তারিন সাথী।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি রংপুরের তারাগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অপতৎপরতায় নারীদের ফুটবল খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে একই ঘটনা দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে ঘটেছে। অথচ কিছুদিন আগেই সরকার নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের একুশে পদকে ভূষিত করেছে।

মৌলবাদের এই অপতৎপরতা দেশব্যাপী নারীদের কোণঠাসা করছে বলে মনে করছেন বক্তরা। তাঁরা বলেন, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের উপদেষ্টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং নারী অধিকারকর্মী থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীকে সাইবারসহ নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ গণ-অভ্যুত্থান কোনো একক লিঙ্গের, একক ধর্মের এবং একক জাতির মানুষের ছিল না।

বক্তারা আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরের শাসনামলে নারীর অবস্থা যেমন ছিল, ফ্যাসিবাদ হটিয়ে গণ-অভ্যুত্থান হওয়ার পরেও নারীর তেমনই অবস্থা আছে। এখনো নারীর ওপর নিপীড়ন ও বিচারহীনতার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

প্রতিবাদ সমাবেশে তিন দফা দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো রংপুর, দিনাজপুর, জয়পুরহাটে নারীর ফুটবল খেলার আয়োজনে বাধাদানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং খেলার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; ঘরে-বাইরে, মাঠে ও সাইবার জগতে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং সম্পত্তিতে নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুনতারাগঞ্জে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধের ডাক, উত্তেজনা ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ফ টবল খ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিমন্সের চোখে মিরাজের অসুস্থতা ‘মধুর সমস্যা’

গলের মেঘলা আকাশ আর টানা বৃষ্টির মাঝে বাংলাদেশ টেস্ট দলের প্রস্তুতি শুরু হলো রোববার। শুরুর দিনেই একটি দুশ্চিন্তা—অসুস্থতার কারণে অনুশীলনে ছিলেন না ওয়ানডে অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের চোখে এটি আবার ‘মধুর সমস্যা’।

বাংলাদেশ কোচের মতে, মিরাজের সমস্যা সুযোগ করে দেবে অন্য কারও। তবে মিরাজও যে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন, সেটিও জানিয়েছেন সিমন্স। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন মিরাজের সর্বশেষ অবস্থা, ‘গত দুই দিনে সে অনেকটাই ভালো আছে। আমরা দেখব সন্ধ্যায় ওষুধের পর সে কেমন থাকে। আশা করি, কাল অনুশীলন করতে পারবে এবং খেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’

সিমন্স যোগ করেছেন, ‘এটা (মিরাজের অসুস্থতা) নিশ্চয়ই চিন্তার। তবে একজনের সমস্যা অন্যজনের জন্য সুযোগ এনে দেয়। দলের সবাই চায় মিরাজ সুস্থ হয়ে উঠুক, কিন্তু তারা এ–ও জানে, যদি মিরাজ না-ও খেলতে পারে, তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে। এটা সমস্যা, তবে সমস্যাটা মধুর।’

মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবেমেহেদী হাসান মিরাজ

এদিন অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে নিয়েও কথা বলেন সিমন্স। ২০১৩ সালে গলে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকের কাছে বড় কিছু প্রত্যাশা করছেন না কোচ। তাহলে কী চাওয়া সিমন্সের? বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘আমি চাই সে যেন খেলাটা উপভোগ করে। ওই ইনিংস যেমন সে আনন্দ নিয়ে খেলেছিল, এবারও যেন সেটাই করে, তা-ই চাই। মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই—সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবে।’

সম্প্রতি ওয়ানডে অধিনায়কত্বে হঠাৎ পরিবর্তন এনে নাজমুল হোসেনের বদলে মিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। সিমন্স মনে করেন, টেস্টে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নাজমুলের ওপর পড়বে না, ‘আমি একেবারেই মনে করি না যে এটি ওকে প্রভাবিত করবে। মাঠে নামলে নাজমুল শুধু ক্রিকেট নিয়েই ভাবে, বাইরের বিষয় আমরা দেখি। তাই এটা ওর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না।’

বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ