সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ঘরের মধ্যে চেতনানাশক ছিটিয়ে একটি পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞান করার পর সোনার গয়না ও টাকা লুট করা হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার দক্ষিণ চুপড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অচেতন অবস্থায় ওই পরিবারের চার সদস্যকে আজ সোমবার সকালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অচেতন ব্যক্তিরা হলেন দক্ষিণ চুপড়িয়া গ্রামের সার ও কীটনাশক বিক্রেতা মুজিবর রহমান (৫৫), তাঁর স্ত্রী মেহেরুন্নেছা (৪৫), তাঁদের মেয়ে ফারজানা আক্তার (২৫) ও জামাতা মনির খান (৩০)। এ সময় ঘরে ফারজানা ও মনিরের কন্যাসন্তান সওদামণি থাকলেও সে বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত আছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন মুজিবুর রহমানের ভাতিজা ও ঝাউডাঙা ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, বাড়ির পাশে সার ও কীটনাশকের একটি দোকান আছে তাঁর চাচার। গতকাল রাত ১১টার পর তাঁর চাচা মুজিবর রহমান, চাচি মেহেরুন্নেছা, চাচাতো বোন ফারজানা ও ভগ্নীপতি মনির খান খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাঁর আরেক চাচাতো ভাইয়ের ছেলে অসুস্থ হলে মুজিবর রহমানকে ডাকাডাকি করা হয়। তবে ঘর থেকে কারও সাড়া পাওয়া যায়নি।

আজ সকালে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক মুজিবুর রহমানের দোকানে সার কিনতে এসে না পেয়ে বাড়িতে যান। তখন দেখা যায়, মুজিবুর রহমান দরজার মুখে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে ঘরে ঢুকে দেখেন, সবাই ঘরের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। দোতলার চিলেকোঠার দরজা ও নিচের ঘরের জানালা খোলা। ওয়ার্ডরোব, আলমারি, শোকেস ভাঙা। বিভিন্ন জিনিসপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। ধারণা করা হয়, গভীর রাতে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জানালা দিয়ে চেতনানাশক ছিটিয়ে পরিবারের চারজনকে অচেতন করে সোনার গয়না, নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছেন। তবে মুজিবর রহমানের চেতনা না ফেরা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে না।

মুজিবুর রহমানের শ্যালক ঝাউডাঙা ডিগ্রি কলজের শিক্ষক মো.

ইদ্রিস আলী বলেন, খবর পেয়ে আজ সকালে ভগ্নিপতিসহ চারজনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তিনি। অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাঁর বোন মেহেরুন্নেছার চার ভরি ওজনের সোনার গয়না, ভাগনি ফারজানার পাঁচ ভরি সোনার গয়না ছাড়াও ভাগনি জামাইয়ের ব্যাংক থেকে তুলে রাখা টাকা ও ভগ্নিপতি মুজিবর রহমানের ব্যবসার টাকা মিলিয়ে দেড় লাখ টাকা নগদ নিয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অসীম কুমার সরকার বলেন, মুজিবর রহমানসহ তাঁদের পরিবারের চারজনের চেতনা কখন ফিরবে, তা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। তবে মনির খানের শিশুসন্তান আশঙ্কামুক্ত আছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ও সদর হাসপাতালে উপপরিদর্শক মেহেদী হাসানকে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ব র রহম ন স ন র গয়ন র রহম ন র পর ব র র র সদস

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ