বন্য হাতি সংরক্ষণ ও মানুষ-হাতির দ্বন্দ্ব নিরসনে সচেতনতা বাড়াতে রাঙামাটির শুভলংয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশে মাত্র ২০০টির বেশি বন্য হাতি রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৪০টি রাঙামাটির উত্তর বন বিভাগ এলাকায় বসবাস করে। তবে বাসস্থান ধ্বংস, খাদ্য সংকট ও বিচরণক্ষেত্র কমে যাওয়ার কারণে বন্য হাতিরা লোকালয়ে চলে আসছে, যার ফলে মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়ছে।

প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, হাতি থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে, আবার হাতির প্রাণও রক্ষা করতে হবে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং হাতির নিরাপদ আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে।

তিনি আরও জানান, হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব কমাতে নিরাপদ করিডোর তৈরি ও স্থানীয়দের সচেতন করার জন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকবে।

শুভলংয়ের কাচালংমুখ বন শুল্ক ও পরীক্ষণ ফাঁড়িতে অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী বন কর্মকর্তা: শ্যামল কুমার মিত্র, শুভলং বন শুল্ক ফাঁড়ির স্টেশন কর্মকর্তা: মো. শরিফুল ইসলাম, আইইউসিএন বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আবু হুরাইরাসহ আরও অনেকে।

বরুনাছড়ি ও কুরকুতিছড়ি এলাকার ১০ জন গ্রামবাসী এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের সনদপত্র, ভেস্ট, হ্যান্ডমাইক, টর্চলাইট ও হুইসেল প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে একটি হাতি সুরক্ষা দল গঠন করা হয়, যা হাতি রক্ষা ও মানুষের জানমাল নিরাপদ রাখতে কাজ করবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ