ঢাকায় প্লাস্টিক পণ্যের আন্তর্জাতিক মেলা শুরু বুধবার
Published: 10th, February 2025 GMT
ঢাকার পূর্বাচলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আগামী বুধবার চার দিনব্যাপী ১৭তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মেলা শুরু হচ্ছে। এই মেলায় দেশি–বিদেশি আট শতাধিক স্টল থাকবে। এতে স্বাগতিক বাংলাদেশ, চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে। বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) এবং হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইয়োকার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস যৌথভাবে মেলাটির আয়োজন করছে।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে বিপিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি সামিম আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন বাণিজ্যসচিব মো.
বিপিজিএমইএর সভাপতি সামিম আহমেদ বলেন, মেলায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য, প্যাকেজিং উপকরণ, প্লাস্টিক মোল্ড, ক্রোকারিজ, খেলনাসামগ্রী, ওষুধশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ, প্লাস্টিকের আসবাব, মেলামাইন পণ্য, তৈরি পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় পণ্য, পিপি ওভেন ব্যাগ ইত্যাদি পণ্য প্রদর্শন করবে। অন্যদিকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো প্লাস্টিক ইনজেকশন মোল্ডিং মেশিন, পিপি ওভেন ব্যাগ মেশিন, প্যাকেজিং মেশিন, ফ্লেকসোগ্রাফিক প্রিন্টিং মেশিন, পেট ব্লো মেশিন ও প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির মেশিন বা যন্ত্র প্রদর্শন করবে।
বিপিজিএমইএ জানায়, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্লাস্টিক পণ্যের বাজারের আকার ছিল ৬২ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। বিশাল এই বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশ থেকে ১০ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়। এমন তথ্য দিয়ে বিপিজিএমইএর সভাপতি বলেন, দেশ-বিদেশে প্লাস্টিকের বাজার বড় হচ্ছে। অটোমোবাইল, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস খাতের প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ছে। রপ্তানিতে এ খাতের সম্ভাবনা থাকলেও তৈরি পোশাকের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না।
সামিম আহমেদ বলেন, সরকার দীর্ঘদিন ধরে নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে গত বছর সহায়তা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশে নির্ধারণ করায় রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাবে পড়েছে। এ ছাড়া প্লাস্টিকের খেলনার ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিপিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এ এস এম কামাল উদ্দিন, ফেরদৌস ওয়াহেদ ও শাহেদুল ইসলাম, বর্তমান পর্ষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন, সহসভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক, পরিচালক এ টি এম সাঈদুর রহমান প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতার নাম
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সিস্টেম জালিয়াতি করে সঞ্চয়পত্রের ২৫ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক আবুল খায়ের মো. খালিদ বাদী হয়ে গতকাল বুধবার মামলাটি করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন মো. আরিফুর রহমান, মোহাম্মদ মারুফ এলাহী, আল আমিন ও মহিউদ্দিন আহমেদ। তাঁদের মধ্যে আরিফুর রহমানকে আজ সন্ধ্যায় মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মতিঝিল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মামলার আসামিদের মধ্যে মোহাম্মদ মারুফ এলাহী এই চক্রের হোতা। তিনি ছাত্রদলের বিগত কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। তার আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল শাখার আহ্বায়ক ছিলেন।
মোহাম্মদ মারুফ এলাহীর বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, মারুফ এলাহী আগের কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে তাঁর কোনো পদপদবি নেই।
এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে টাকা তুলে নেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত সোমবার মহা হিসাব নিরীক্ষণ কার্যালয়ের হিসাব নিরীক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুর আলম তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এস এম রেজভীর আয়কর রিটার্ন পূরণ করতে গিয়ে দেখেন তাঁর নামে কেনা ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ১৩ অক্টোবর তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু রেভজী সঞ্চয়পত্র তুলে নেওয়ার কোনো আবেদন করেননি। পরে গ্রাহকের মুঠোফোন নম্বর পরিবর্তন, টাকা লেনদেনের সীমা ২ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা করাসহ নানাভাবে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ২৩ অক্টোবর সঞ্চয়পত্রের ওই ২৫ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও দুই ব্যক্তির নামে থাকা ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল চক্রটি। কিন্তু ব্যর্থ হয় তারা।
কীভাবে এই জালিয়াতি
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো গ্রাহক সঞ্চয়পত্র কেনার সময় যে ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেবেন, সেই হিসাবেই সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও আসল টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া যে অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা হয়, কোনো তথ্য পরিবর্তন, সুদ বা আসল নেওয়ার জন্য অবশ্যই সেই অফিসে আবেদন করতে হয়। আবেদন পাওয়ার পর গ্রাহকের দেওয়া মোবাইল নম্বরে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) যায়। উপস্থিত গ্রাহক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীকে তৎক্ষণাৎ সেই ওটিপি দেখানোর পর তা ব্যবহার করে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে তথ্য পরিবর্তন করা হয়। সব ক্ষেত্রে সার্ভারে ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বা প্রমাণ থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, তাঁদের ওখানে যেসব কর্মকর্তার কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাসওয়ার্ড ছিল, তাঁদের কাছ থেকে পাসওয়ার্ড নিয়ে এই জালিয়াতি করা হয়েছে