গাজীপুরের শ্রীপুরে ছুটির বকেয়া টাকা পরিশোধসহ বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের সলিং মোড় এলাকা অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকেরা। চার ঘণ্টা পর দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে চলে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকার ক্রাউন ওলেন ওয়্যার কারখানার শ্রমিকদের ২০২৩ ও ২০২৪ সালের ছুটির টাকা বাকি পড়ে আছে। এর পাশাপাশি ঈদ বোনাস, টিফিন বিল, হাজিরা বোনাস দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। এ ছাড়া কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই, শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ বন্ধ করা এবং শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণের জড়িত এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টা থেকে ওই এলাকার ক্রাউন ওলেন ওয়্যার কারখানার মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকেরা। এ সময় ওই সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বেলা ১টায় কারখানা কর্তৃপক্ষ কিছু দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তাঁরা সড়ক থেকে সরে গিয়ে কারখানার আশপাশে অবস্থান নেন।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের একজন আমেনা খাতুন বলেন, ‘আমাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও তারা তা‌ করছেন না।’ অপর শ্রমিক মো.

শরিফুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার কিছু কর্মকর্তা অত্যন্ত বাজে আচরণ করেন। এসব বন্ধ করে তাঁদের সব বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।

একই কারখানার অপর শ্রমিক তানিয়া আক্তার বলেন, এমনিতেই স্বল্প টাকা বেতন পান তাঁরা; তার ওপর যদি বিভিন্ন সুযোগ–সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে শ্রমিদের জীবন যাপন করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা মূল ফটক বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান করছেন।

শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাব–জোনের ইনচার্জ মো. আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন দাবি আদায়ের জন্য শ্রমিকেরা রাস্তা অবরোধ করেছিল। পরে আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে সমাধান করেছি। বেশির ভাগ দাবি মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর পর শ্রমিকেরা রাস্তা ছেড়ে চলে আসে। কারখানার মালিক এসে বাকি দাবিদাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এখন সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর শ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের