১৮ বছর পর পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি পদে আব্দুল গণি বসুনিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আবুল হোসেন মো. তোবারক নির্বাচিত হয়েছেন। আব্দুল গণি বসুনিয়া এর আগের কমিটির সদস্যসচিব এবং আবুল হোসেন মো. তোবারক যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

গতকাল সোমবার রাতে দেবীগঞ্জ অলদিনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোটাভুটি শেষে কমিটির নাম ঘোষণা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন।

সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে আইয়ুব আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে তৌকির আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে হারুন অর রশীদ ও নজরুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। ছয় সদস্যের এই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ডেলিগেট, কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এতে ৬৭৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য পদগুলোতে আলোচনা সাপেক্ষে নেতা নির্বাচন করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের দেবদারুতলায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে সংগীত ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়া অতিথিরা বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। পরে সম্মেলন উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আইয়ুব আলীর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আব্দুল গণি বসুনিয়ার সঞ্চালনায় প্রথম অধিবেশনের সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরহাদ হোসেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম উদ্বোধক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২০০৬ সালে দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে আবু তোরাব সরকার সভাপতি এবং হাসমত আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই কমিটি নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা মতবিরোধও ছিল। এরপর ২০১৯ সালে আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। এতে আবু তোরাব সরকার আহ্বায়ক এবং আব্দুল গণি বসুনিয়াকে সদস্যসচিব করা হয়। প্রায় তিন বছর আগে আহ্বায়ক আবু তোরাব সরকার মারা যান। এর পর থেকে রহিমুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়ায় তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পর থেকে আইয়ুব আলী ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব ল ইসল ম ব এনপ র সরক র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ