ঘোষণার পরদিনই স্থগিত নড়াইল জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটি
Published: 11th, February 2025 GMT
ঘোষণার পরদিনই নড়াইলে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওই কমিটি স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়। এর আগে গতকাল সোমবার ওই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
আজ বিকেল পাঁচটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো.
দলীয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইল জেলা কৃষক দলের আগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় গতকাল তা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। একই বিজ্ঞপ্তিতে নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুককে আহ্বায়ক, শোয়েব মিনাকে সদস্যসচিব ও ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম রুবেলকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান জাফির তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হাসান বাবুল। আজ আবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সদ্য ঘোষিত ওই আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। নিবেদিতদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সখ্য থাকা চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুককে আহ্বায়ক করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। অনেকেই আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে থাকা হিমায়েতের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে সমালোচনা করেন। একপর্যায়ে আজ দুপুরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির অভিযোগে সহযোদ্ধাদের হাতে অবরুদ্ধ ছাত্র সমন্বয়ক ফাহিম
রংপুরের পীরগাছায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তারই সহযোদ্ধারা।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুর ১টার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জন ছাত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসে তাকে প্রায় ২ ঘণ্টার মতো অবরুদ্ধ রেখে বিচার দাবি করেন। পরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ছাত্ররা অভিযোগ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তারা সবাই সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। তারা সবাই মাহিমের সহযোদ্ধা ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রতিনিধি বা মুখপাত্র হিসেবে ফারদিন এহসান মাহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সুযোগে মাহিম বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন।
আরো পড়ুন:
রাজবাড়ীতে ২ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
মাদারীপুরে মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
এছাড়া, পীরগাছা জেএন হাইস্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। এই খেলাকে কেন্দ্র করে সরকারিভাবে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা বুঝিয়ে পেয়েছে মর্মে কয়েকজন খেলোয়ারের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হলেও কাউকে কোনো টাকা বা খেলাধুলা সামগ্রী দেওয়া হয়নি। পুরো টাকা ফাহিম আত্মসাৎ করেছেন।
শীতের কম্বল, ঈদের ভিজিএফ স্লিপ নিয়েও তিনি দুর্নীতি করেছেন। এসব অপকর্মের সঙ্গে তার বাবা, বোন ও পরিবারের লোকজন জড়িত। তার বোনের নামে তিনি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ নিয়েছেন।
অভিযোগকারীরা জানান, দীর্ঘদিন থেকে ফাহিম এসব অপকর্ম করছে। আজকে এসবের প্রতিবাদ করতে তারা ইউএনও অফিসে এসেছেন। ইউএনওর নিকট তারা মাহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। ইউএনও তা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ছাত্ররা জানান, আজ থেকে পীরগাছা উপজেলায় ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কেউ পরিচয় দিতে পারবেন না। কোথাও কোনো প্রয়োজন হলে সব ছাত্ররা একসঙ্গে কাজ করবেন।
অভিযোগের বিষয়ে ফারদিন এহসান মাহিম বলেন, “যখন কোনো ব্যক্তি দায়িত্বে থাকে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ থাকবেই। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা লিখিতভাবে তারা দায়ের করুক। সেটা তদন্ত হোক, তা আমিও চাই। আমারও হয়তো কিছু ভুল আছে।”
তিনি বলেন, “আমি সাংগঠনিকভাবে সবার সঙ্গে প্রথম দিকে যোগাযোগ রাখলেও পরে যোগাযোগ রাখতে পারিনি। এ জন্য ভুল বুঝাবুঝি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।”
ফারদিন এহসান মাহিম বলেন, “খেলার টাকার বিষয়ে যাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হোক। তদন্তে যদি আমি দোষী হই তাহলে আমি মাথা পেতে নেব।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, “ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অভিযোগগুলো লিখিতভাবে দিতে বলা হয়েছে। এবিষয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্ত করে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ