চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় যাওয়ার প্লে অফে আজ রাত ২টায় মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি ও রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটি ম্যানসিটির মাঠ ইতিহাদে হবে। দুই লেগের প্লে অফে যারা হারবে গ্রুপ পর্বেই বিদায় লেখা হবে তাদের। 

কাগজে-কলমে পেপ গার্দিওলার অধীনে সবচেয়ে বাজে বছর কাটাচ্ছে ম্যানসিটি। রদ্রির চোটে নাজেহাল দলটি। প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার লড়াই থেকে একপ্রকার ছিটকে গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে অফে এসেছে খুব কষ্টে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিতে। 

রিয়াল মাদ্রিদের মৌসুম যাচ্ছে ভালো-খারাপের মিশেলে। লিগ টেবিলে শীর্ষে আছে তারা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে এসি মিলান ও লিভারপুলের বিপক্ষে হেরে সেরা আট নিশ্চিত করে সরাসরি শেষ ষোলোয় যেতে পারেনি গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। বার্সার কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে সুপার কাপের ফাইনালে। 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে অফের প্রথম লেগে তাই চাপে থাকবে দু’দলই। রিয়াল মাদ্রিদ শক্তির বিচারে কিছুটা এগিয়ে থাকলেও প্রথম লেগে ম্যানসিটির মাঠে হারের স্বাদ পেতে পারে। 

তার অন্যতম কারণ দলটির ডিফেন্ডারদের ইনজুরি। এদের মিলিতাও মৌসুমের শুরুতে ইনজুরিতে পড়েছেন। অ্যান্তোনিও রুডিগার রিয়ালের রক্ষণভাগের ত্রাতা ছিলেন। তিনিও ইনজুরিতে। লম্বা সময় পর মাঠে ফিরেই আলাবা আবার ছিটকে গেছেন। ম্যানসিটির বিপক্ষে রিয়ালের একমাত্র বিশেষজ্ঞ সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার রাউল অ্যাসেনসিও। যার বয়স মাত্র ২১ বছর। রিয়ালের জার্সিতে খেলার অভিজ্ঞতা মাত্র ৪ মাসের। 

চুঁয়ামেনিকে দিয়ে রিয়াল কোচ আনচেলত্তি সেন্ট্রাল ডিফেন্সের দায়িত্ব পালন করালেও ফ্রান্স মিডফিল্ডার এখন পর্যন্ত ব্যর্থই। রিয়ালের ফুলব্যাকরাও আছেন ইনজুরিতে। সব মিলিয়ে ‘রক্ষণহীন’ দল নিয়ে ম্যানসিটির মাঠে খেলা সহজ হবে না ব্লাঙ্কোসদের। 

অন্য একটি কারণ ভিনিসিয়াস জুনিয়রের ফর্ম। ভিনি গত ১০ ম্যাচের ৮টিতে গোল পাননি। গত নভেম্বরের পর লিগে গোল নেই তার নামের পাশে। এমবাপ্পে ফর্মে ফিরতেই যেন হারিয়ে গেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। দু’বার করে ইনজুরি পড়েই হয়তো ছন্দ হারিয়েছেন তিনি। 

রিয়াল চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত বড় ম্যাচে ফ্লপ করেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুল ও এসি মিলানের বিপক্ষে হার এবং লা লিগায় বার্সার বিপক্ষে প্রথম লেগে ৪-১ গোলের হার ও সুপার লিগে ৪-০ গোলের হার সেটাই প্রমাণ করে। ম্যানসিটির বিপক্ষেও ‘বড় ম্যাচ ভীতি’ পেয়ে বসলে পার পাবে না ব্লাঙ্কোসরা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইনজ র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ