বেক্সিমকো গ্রুপের চালু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও সম্পদ বিক্রি করে শ্রমিক–কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধে জটিলতা দেখা দিয়েছে। কারণ, এসব শেয়ার ও সম্পদ ব্যাংকের কাছে বন্ধক রয়েছে। ফলে শেয়ার বিক্রির জন্য কোনো কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে পারেনি সরকার।

বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকসের মালিকপক্ষের শেয়ার বিক্রি করে গ্রুপটির বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পাওনা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেয় বেক্সিমকো শিল্পপার্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসা পরিস্থিতি পর্যালোচনা–সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। এ কমিটির প্রধান শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল চলতি মাসের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে গ্রুপটির বন্ধ কারখানার শ্রমিক–কর্মচারীর পাওনা পরিশোধ করা হবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক গত ৩০ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে শেয়ার বিক্রির বিষয় নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংক, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঋণদাতা সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকের প্রতিনিধিরা। কিন্তু সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ বুধবার আবারও বৈঠক ডেকেছেন সচিব নাজমা মোবারেক।

জানতে চাইলে নাজমা মোবারেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বেক্সিমকো গ্রুপের দুই কোম্পানির শেয়ার বিক্রির একটা উপায় বের করার চেষ্টা করছি।’

এদিকে শেয়ার বিক্রি ও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কোনো কূলকিনারা না হওয়ায় আজ আবারও বৈঠকে বসছে এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত এ–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ার ও সম্পদ বিক্রি করতে আদালতের অনুমতি লাগবে। তারপর সম্ভাব্য ক্রেতা খুঁজতে হবে। আদালতের অনুমতি নিয়ে এসব শেয়ার ও সম্পদ বিক্রি করা হলেও যেহেতু সেগুলো ব্যাংকের কাছে বন্ধক, তাই নিয়ম অনুযায়ী বিক্রির অর্থ চলে যাবে ব্যাংকের কাছে। তাই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা জটিল ও সময়সাপেক্ষ।

বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান। তিনি ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১৩ আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ। এসব ঋণের বড় অংশই এখন অনাদায়ি।

* শেয়ার বিক্রি হবে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকসের উদ্যোক্তাদের * বেক্মিমকো ফার্মার ১৩ কোটি বা ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তাদের, যার বাজারমূল্য ১,০৩৩ কোটি টাকা * শাইনপুকুর সিরামিকসের ৭ কোটি ৩৫ লাখ শেয়ার উদ্যোক্তাদের হাতে, যার বাজারমূল্য ৮৭ কোটি টাকা * বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ৩১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চালু ৩টি, বন্ধ ১৬টি, লে–অফ ১২টি

বেক্সিমকো গ্রুপের দেনা–পাওনাবিষয়ক সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গ্রুপটির কাছে জনতা ব্যাংকের ২৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ৪২৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ৪২০ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ৯৮৭ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩১৫ কোটি, ইউসিবির ৩৩৩ কোটি, এবি ব্যাংকের ৯৩৮ কোটি, এক্সিম ব্যাংকের ৪৯৭ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৬১ কোটি, ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ৯৪ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংকের ৭৮ কোটি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিআইএফএফএলের ৮৭ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।

বিএসইসির মুখপাত্র মো.

রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের পরিমাণ

বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকস দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি। শেয়ারধারণ–সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, বেক্সিমকো ফার্মার প্রায় ৪৫ কোটি শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা–পরিচালকদের কাছে আছে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি বা ৩০ শতাংশ শেয়ার। গত সোমবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৭৬ টাকা ২০ পয়সা। এই দামে কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের শেয়ার বিক্রি করা হলে তাতে পাওয়া যেতে পারে ১ হাজার ৩৩ কোটি টাকার মতো।

এ ছাড়া শাইনপুকুর সিরামিকসের প্রায় ১৪ কোটি ৭০ লাখ শেয়ারের মধ্যে অর্ধেক বা ৭ কোটি ৩৫ লাখ শেয়ার রয়েছে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে। গত সোমবার কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১১ টাকা ৮০ পয়সা। সেই হিসাবে এই দামে উদ্যোক্তাদের শেয়ার বিক্রি করা হলে তাতে পাওয়া যাবে প্রায় ৮৭ কোটি টাকার মতো। যদিও উদ্যোক্তাদের এসব শেয়ারও ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিল উদ্যোক্তারা।

এ অবস্থায় তাই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা শেয়ার বিক্রি করে কীভাবে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। এ বিষয়ে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেক্সিমকোর শেয়ার ও সম্পদ বিক্রি করে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের। ব্যাংক অবৈধভাবে যদি ঋণ দিতে পারে তাহলে শেয়ার বিক্রির টাকা কেন শ্রমিকদের দেবে না।

ঋণের ১৭ শতাংশ বন্ধকি সম্পদ

সম্প্রতি বেক্সিমকোর শিল্পপার্কের আওতাধীন কোম্পানিগুলোকে দেওয়া ঋণ ও ঋণের বিপরীতে জামানতের তথ্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিকে। কমিটি সূত্রে জানা গেছে, যথাযথ জামানত ছাড়াই বেক্সিমকো গ্রুপকে ঋণ নিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। গ্রুপটির ৩১ প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ব্যাংকঋণ ২৮ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। এই ঋণের বিপরীতে জমি, ভবন, যন্ত্রপাতি, শেয়ার, স্থায়ী আমানত (এফডিআর) মিলিয়ে বন্ধক রয়েছে ৪ হাজার ৯৩২ কোটি টাকার সম্পদ। সেই হিসাবে বন্ধক থাকা সম্পদ মোট ঋণের ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।

বেক্সিমকো যেসব কোম্পানির নামে ঋণ নিয়েছে, তার মধ্যে ১২টির কোনো অস্তিত্ব নেই। এই ১২ কোম্পানির নামে ঋণ রয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক অস্তিত্বহীন এসব কোম্পানির বিপরীতে ঋণ দিয়েছে।

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নতুন যোগ দিয়েছেন। তাই বেক্সিমকোর ঋণের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানেন না। তবে তিনি সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছেন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বেক্সিমকো শিল্পপার্কের ৩১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্তমানে চালু আছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো পিপিই এবং আর আর ওয়াশিং। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৬টি বন্ধ ও ১২টি লে–অফ (সাময়িক বন্ধ) ঘোষণা করা হয়েছে। রপ্তানির ক্রয়াদেশ না থাকা ও কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে না পারায় গত ১৭ ডিসেম্বর ১২টি কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিগুলো হচ্ছে বেক্সিমকো ফ্যাশনস, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস, ক্রিসেন্ট ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন, এসকর্প অ্যাপারেলস, এসেস ফ্যাশনস, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস, শাইনপুকুর গার্মেন্টস, আরবান ফ্যাশনস, ইয়েলো অ্যাপারেলস, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজ, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ এবং প্রিফিক্স ফ্যাশনস।

এ ছাড়া বন্ধ ১৬টি কোম্পানি হচ্ছে অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস, বে সিটি অ্যাপারেলস, কসমোপলিটন অ্যাপারেলস, উন্টার স্প্রিং গার্মেন্টস, ট্রপিক্যাল ফ্যাশনস, প্লাটিনাম গার্মেন্টস, পিয়ারলেস গার্মেন্টস, হোয়াইট বে অ্যাপারেলস, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস, স্কাইনেট গার্মেন্টস, পিংক মেকার অ্যাপারেলস, কাঁচপুর অ্যাপারেলস, স্প্রিফুল অ্যাপারেলস, কোজি অ্যাপারেলস এবং অটোস্প্রে অ্যাপারেলস।

এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জানতে বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) ওসমান কায়সার চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রপ্তানির আড়ালে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সালমান এফ রহমানসহ ২৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমতি না নিয়ে অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং ও আর আর হোল্ডিং লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২৩ জানুয়ারি বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, তাঁর ছেলে পরিচালক শায়ান ফজলুর রহমান ও চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমানের নামে থাকা ১ হাজার ৯৬৭ শতাংশ জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন। এ সম্পদের অর্থমূল্য দেখানো হয়েছে ৯ কোটি ৫১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। তাঁদের নামে থাকা ৬৮টি স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৬০টির মালিকানাই শায়ান ফজলুর রহমানের নামে, যেগুলো দোহার এলাকায় অবস্থিত।

সরকারের শেয়ার বিক্রির উদ্যোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ উদ্যোগ পুরোপুরি আইনগত কি না, তা আগে পরীক্ষা করতে হবে। আমার মনে হয়, শেয়ার বিক্রি করে দিলে দুটি কোম্পানিই দুর্বল হয়ে পড়বে। সরকারের উচিত হবে চালু কোম্পানিকে বাঁচিয়ে রাখা এবং পাওনা পরিশোধে আরও ভালো কোনো বিকল্প খুঁজে বের করা।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র ম ন টস অ য প র লস এফ রহম ন র ব পর ত ঋণ ন য় ছ ফ য শনস উপদ ষ ট পর শ ধ ঋণ র ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ