শনিবারের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি বাতিল, ইসরায়েলের হুঁশিয়ারি
Published: 12th, February 2025 GMT
আগামী শনিবার দুপুরের মধ্যে জিম্মিদের ফেরত দেওয়া না হলে গাজায় যুদ্ধবিরতি বাতিল এবং সেখানে আবার তীব্র লড়াই শুরু হবে বলে হামাসকে সতর্ক করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি গাজার ভেতরে এবং আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীকে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নতুন করে কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া স্থগিত করেছে হামাস। সংগঠনটির এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু এই নির্দেশ দেন।
নেতানিয়াহু বাদবাকি ৭৬ জিম্মির মুক্তির দাবি করেছেন নাকি শনিবার যে তিনজনকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, তাঁদের মুক্তির দাবি করেছেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। তবে এক মন্ত্রী বলেছেন, তিনি সবার মুক্তির কথা বোঝাতে চেয়েছেন।
গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সাহায্য আটকে দেওয়াসহ নানাভাবে ইসরায়েল তিন সপ্তাহের পুরোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে হামাস। যদিও এ দাবি অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের পর হামাস বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যেকোনো জটিলতা কিংবা বিলম্বের জন্য ইসরায়েল দায়ী।
হামাস এই সপ্তাহান্তে নির্ধারিত জিম্মিদের মুক্তি বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাব করেন, ইসরায়েল চুক্তিটি সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হবে এবং শনিবারের মধ্যে ‘সব জিম্মিকে’ ফিরিয়ে না দিলে গাজাকে নরকে পরিণত করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভার চার ঘণ্টার বৈঠকের পর নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বিবৃতিতে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হামাসের চুক্তি লঙ্ঘন এবং আমাদের জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্তের আলোকে গত রাতে আমি আইডিএফকে (ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী) গাজা উপত্যকার ভেতরে এবং চারপাশে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’
নেতানিয়াহু বলেন, যদি হামাস শনিবার দুপুরের মধ্যে আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যাবে। হামাসের চূড়ান্ত পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত আইডিএফ পুনরায় তীব্র লড়াই শুরু করবে। তাঁর এই আলটিমেটাম মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন পেয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হওয়ার কথা রয়েছে। এ সময় গাজার প্রায় ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে মোট ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। চুক্তির শর্তাবলির বাইরে হামাস পাঁচজন থাই জিম্মিকে হস্তান্তর করেছে।
বাকি ১৭ ইসরায়েলি জিম্মিকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২ শিশু, ১ নারী, ৫০ বছরের বেশি বয়সী ৫ পুরুষ এবং ৫০ বছরের কম বয়সী ৯ জন পুরুষ। উভয় পক্ষই জানিয়েছে, এই জিম্মিদের মধ্যে আটজন মারা গেছেন, তবে কেবল একজনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনট্রাম্পের বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যে কি গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে১৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনহামাসের জন্য নরকের সব দরজা খুলে দেওয়ার সময় এসেছে: ইসরায়েলের মন্ত্রী১১ ঘণ্টা আগে২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে সেখানে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। এ হামলার জবাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৮ হাজার ২১০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
গাজার বেশির ভাগ মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে পড়েছে। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয় সংকটে আছে গাজার মানুষ।
আরও পড়ুনজিম্মি-বন্দী বিনিময়ের দরজা খোলা আছে: হামাস১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র মন ত র ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
হাদিকে গুলির ঘটনা আ.লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ: নাহিদ
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
দুর্নীতি-সন্ত্রাসের অভিযোগ পেলে প্রার্থিতা বাতিল: নাহিদ
নাহিদ ইসলাম বলেন, “হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ।”
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা দেখছি।”
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় সব জায়গায় আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা, প্রশাসনিকভাবে প্রতিহত করা এবং ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার কথা বলেছি।”
পতিতরা নির্বাচন ঠেকাতে চাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনি পরিবেশ ফেরাতে হবে।”
নাহিদ বলেন, “আমরা সর্বাত্মকভাবে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখব বলেছি। হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।”
এর আগে সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠকে তিনটি দলের দুজন করে প্রতিনিধি অংশ নেন।
বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
এছাড়া এনসিপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ