নারীর অগ্রযাত্রায় অন্যতম বাধা সহিংসতা
Published: 12th, February 2025 GMT
বেইজিং ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনায় নারীর অগ্রযাত্রায় ১২টি ইস্যুকে চিহ্নিত করা হয়। এই ইস্যুগুলোর মধ্যে নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবেলায় বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়। এ বছর বেইজিং ঘোষণার ৩০ বছর পূর্তি হচ্ছে, তবে নারীর অগ্রযাত্রায় এখনো কিছু বাধা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যার মধ্যে নারীর প্রতি সহিংসতা অন্যতম।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে বেইজিং+৩০: নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তরুণ সমাজের ভাবনা বিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।
কর্মশালায় বেইজিং ঘোষণার প্রেক্ষাপট উপস্থাপনা করেন আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম। তিনি বলেন, নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশীয় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে নারী আন্দোলনের অব্যাহত কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয় এবং নারীবান্ধব নীতিমালা গ্রহণে বেশকিছু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে ১৯৯৫ সনের বেইজিং ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা অন্যতম।
সংগঠনের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, বেইজিং কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার প্রতি ৫ বছর পরপর নারীর অগ্রগতির দিকগুলো পুনরায় পর্যালোচনা করতে হয়, যেখানে নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়। সকল প্রকার সহিংসতা রোধ করতে কোন কোন বিষয়গুলো প্ররোচিত করে এবং করণীয় কী- এই দিকগুলোর প্রতি আমাদের জোর দিতে হবে।
কর্মশালায় গত বছর নভেম্বর মাসে বেইজিং+৩০ নিয়ে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়া প্যাসিফিক মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে যোগদানের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অনারারি প্রফেসর ড.
আলোচনা শেষে কর্মশালায় পাঁচটি দলে বিভক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা নারীর প্রতি সহিংসতা (সাইবার সহিংসতা) গৎবাঁধা রীতিনীতি, যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন: অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক এবং বাল্যবিয়ে ও কন্যা শিশু অনুষ্ঠিত দলীয় কাজে অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের মতামতও সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করেন। দলীয় কাজ পরিচালনায় সহযোগিতা করেন ঢাবির উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ফারিয়া জাহান, মহিলা পরিষদের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার এবং সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আফরুজা আরমান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।