আশালঙ্কার অসাধারণ সেঞ্চুরি, হারল অস্ট্রেলিয়া
Published: 12th, February 2025 GMT
শ্রীলঙ্কায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি সারছে অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কা সফরে থাকা দলটাকেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের মিশনে নামাবে অজিরা। স্টিভ স্মিথের ওই দল দুই ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কার কাছে ৪৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা ৪৬ ওভারে ২১৪ রান তুলে অলআউট হয়। জবাবে ৩৩.
শ্রীলঙ্কাকে এক হাতে জিতিয়েছেন দলটির অধিনায়ক আশালঙ্কা। ১৩৫ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর টেলেন্ডার ইশান মালিঙ্কাকে নিয়ে ৭৯ রানের জুটি গড়েন লঙ্কান অধিনায়ক। নিজে খেলেন ১২৬ বলে ১২৭ রানের অসাধারণ ইনিংস। ১৪টি চার ও পাঁচটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
শ্রীলঙ্কা শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে। ৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। ৩১ রানে পড়ে চতুর্থ উইকেট। পঞ্চমে উইকেট জুটিতে আশালঙ্কা ও দুনিথ ওয়েল্লালাগের ৭৭ রানের জুটি হয়। ওয়েল্লালাগে ৩৪ বলে ৩০ রান করেন। বাকি গল্পটা আশালঙ্কার।
জবাব দিতে নেমে অস্ট্রেলিয়া শূন্য রাতে প্রথম ও ৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায়। ঠিক ৩১ রানে শ্রীলঙ্কার মতো চতুর্থ উইকেট হারায় তারা। মাঝখানে অ্যালেক্স কেরি ও অ্যারন হার্ডি ৫২ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু তাদের কেউ আশালঙ্কা হতে পারেননি। কেরি ৩৮ বলে ৪১ রান করে ফিরে যান। হার্ডি ৩২ রানের ইনিংস খেলেন। শেন অ্যাবট ও অ্যাডাম জাম্পা ২০ রান করে যোগ করে হারের ব্যবধান ছোট করেন।
শ্রীলঙ্কার হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন মহেশ থিকসানা। তিনি ৪০ রানে ৪ উইকেট নেন। তবে প্রথম দুই উইকেট নিয়ে ধাক্কাটা দেন আসিথা ফার্নান্দো। দুই উইকেট নেন ওয়েল্লালগে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অ্যাবট ৩টি এবং স্পেন্সার জনসন, অ্যারন হার্ডি ও নাথান এলিস দুটি করে উইকেট নেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বছরে ৬ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম
দেশে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৬ লাখ অপরিণত (প্রিম্যাচিওর) শিশু। জন্মের সময় গর্ভকাল পূর্ণ না হওয়ায় এসব নবজাতকের ঝুঁকি থাকে নানা জটিলতায় পড়ার, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে বেশি। তাই নবজাতকদের মৃত্যু হ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান। তিনি বলেন, মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের মাধ্যমে দেশের পাচঁটি হাসপাতাল মা ও নবজাতক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা পেয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টার কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করে নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।
বিএমইউর নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশে বছরে ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বছরে অপরিণত ৬ লাখ শিশু জন্মায়। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বিএমইউর ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসসুম বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গত ১০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এটি প্রতিরোধে আমাদের উদ্যোগ নেই। কেনো কমানো যাচ্ছে না এবিষয়েও কোনো গবেষণা হয় না। তবে সচেতনতা, প্রসূতি সেবা এবং মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রম জোরদার করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অপরিণত শিশুর জন্মের পেছনে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্যের অবনতি, অপুষ্টি, সময়মতো প্রসবপরিচর্যার অভাব, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও প্রসবকালীন জটিলতা। এ ছাড়া ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবন এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণও অন্যতম কারণ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর গবেষণা ও উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান।