দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে ২২ দিন ধরে পড়ে আছে ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রী। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগে কর্তৃপক্ষ সেসব গ্রহণ না করায় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য সংরক্ষণের মতো গুদাম না থাকায় মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড সার্জিক্যালের ছয় গ্রুপের ১২টি কার্যাদেশের মাধ্যমে কিনে আনা বিভিন্ন ওষুধ ও মালপত্র ২২ দিন ধরে হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেঝেতে পড়ে আছে। এসব অতিরিক্ত মালপত্র সংরক্ষণেরও কোনো গুদাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই। নিম্নমানের অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও বিভিন্ন সামগ্রীর বেশি পরিমাণে কিনে আনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতার কারণে এসব মালপত্র মেঝেতে ফেলা রাখা হয়েছে। এমনকি কার্যাদেশে সরবরাহ করা ওষুধের মেয়াদ দুই বছর থাকলেও কিছু ওষুধের মেয়াদ ইতোমধ্যে ছয় মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে।

জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেবিদ্বার সরকারি হাসপাতালে ওষুধ ও এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের জন্য ই-জিপিতে গত বছর ছয় গ্রুপের ছয়টি আইডিতে ২ কোটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড সার্জিক্যাল। সেই অনুযায়ী ওষুধ নন-ইডিসিএল, এমএসআর যন্ত্রপাতি, গজ-ব্যান্ডেজ-তুলা সামগ্রী, লিনেন সামগ্রী, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট সামগ্রী ও আসবাব সরবরাহ করার কথা।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মকর্তা জানান, ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করে সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.

আলী এহসান পছন্দের প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড সার্জিক্যালকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজটি পাইয়ে দেন। একই সঙ্গে প্রতিটি এমএসআর গ্রুপের জন্য ই-জিপির শর্ত না মেনে নন ইডিসিএলের ৫১টি আইটেমের স্থলে এক কার্যাদেশেই ৩৩ আইটেম এবং অন্যটিতে ২০টি আইটেমের দুটি করে কার্যাদেশ দেন। ই-জিপি শিডিউলে প্রতিটি গ্রুপের পণ্য সংখ্যা বা পরিমাণ নির্দিষ্ট ছিল। ই-জিপি শর্তাবলি অনুযায়ী প্রতিটি আইটেম শতকরা ২০ শতাংশ কমানো বা বাড়ানোর এখতিয়ার সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু সেখানে ১০ থেকে ১২ গুণ বেশি ওষুধ ও মালপত্র সরবরাহ করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, দরপত্র আহ্বানকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে ছিলেন তৎকালীন দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান। তিনি তাঁর পছন্দের ঠিকাদারকে দরপত্র পাইয়ে দিয়েছেন। তিনি দরপত্র মূল্যায়ন করার আগেই পাবনার ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হয়ে যান। 

মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা দরপত্র অনুযায়ী প্রাপ্ত ওষুধ ও মালপত্রে অসংগতি পাওয়ায় তা গ্রহণ করিনি।’

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আনাস ও জহিরুল ইসলাম জানান, দরপত্র অনুযায়ী ওষুধ ও মালপত্র সাপ্লাই ভাউচারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে। মূল্যায়ন কমিটি মূল্যায়ন শেষে মালপত্র সংগ্রহ করেছে।

জানতে চাইলে ডা. আলী এহসান বলেন, ‘আমি টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এখন বাকি কাজটা বর্তমান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাই করবেন। আমি দেবিদ্বারের জনগণের স্বার্থে দুটি চাহিদাপত্রের কার্যাদেশ একসঙ্গে দিয়েছি যাতে করে বরাদ্দের টাকা ফেরত না যায়।’ 

দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহিবুস ছালাম খানের ভাষ্য, অনিয়মের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স দরপত র আইট ম

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’

ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

শুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।

জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প