গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শোলাগাড়ী ঈদগাহ আলিম মাদরাসার বহুল বিতর্কিত ভূয়া অধ্যক্ষ মিনহাজ উদ্দিনকে নানা অভিযোগে অবশেষে অপসারণ করেছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে অপসারণের পরও তিনি নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন, ফলে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অধ্যক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত মোজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

জানা গেছে, মিনহাজ উদ্দিন ২০০৩ সালে তৃতীয় বিভাগে পাস করে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে যোগদান করেন, যদিও উক্ত পদে দ্বিতীয় বিভাগ বাধ্যতামূলক ছিল। তার বাবা ইদ্রিস আলী সরদার তখন ম্যানেজিং কমিটির সম্পাদক ছিলেন এবং প্রভাব খাটিয়ে ২০১২ সালে জাল সনদ ব্যবহার করে নিজেকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন। তবে অধ্যক্ষ হওয়ার পরও তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে বেতন-ভাতা উত্তোলন করতেন।

জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে এসব অনিয়ম প্রকাশের পর মাদরাসা বোর্ড তদন্ত চালিয়ে তার জালিয়াতির প্রমাণ পায়। এতে তার এমপিও বন্ধসহ বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া, এনটিআরসিএ-কে উপেক্ষা করে ২০১৯ সালে বিভিন্ন শূন্য পদে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য করেন তিনি। লাইব্রেরিয়ান পদেও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে, যেখানে শাহিদা বেগমের নামে অনুমোদন নিয়ে গোপনে শামিমা বেগম নামে অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর মিনহাজ উদ্দিনকে অপসারণ করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মোজহারুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়। তবে এ সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে মিনহাজ উদ্দিন নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোজহারুল ইসলাম বলেন, মিনহাজ উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম করে আসছেন। তার কর্মকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তিনি এখনো ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করছেন, যা খুবই দুঃখজনক।

অভিযুক্ত মিনহাজ উদ্দিন বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে অপসারণ করা হয়েছে। আমি উচ্চ আদালতে মামলা করেছি এবং রায়ের অপেক্ষায় রয়েছি। প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তালা দিয়েছি, তবে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, এভাবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম দর স

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ