অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ হারার পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) দলের ওপর বেশ কিছু কঠোর নিয়ম আরোপ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতীয় ক্রিকেটাররা স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে রাখার সুযোগ পাবেন না।  

বিসিসিআইয়ের নতুন ভ্রমণনীতিতে বলা হয়েছে, ন্যূনতম ৪৫ দিনের সফরে ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরা সর্বোচ্চ ১৪ দিন সঙ্গে থাকতে পারবেন। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভারতের সফর তিন সপ্তাহের হওয়ায় ক্রিকেটারদের পরিবারকে সঙ্গে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।  

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সিনিয়র-জুনিয়র সবার জন্যই এই নিয়ম কার্যকর হবে। বিসিসিআইয়ের এক সূত্র বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, 'নিয়মে পরিবর্তন হলে সেটা ভিন্ন বিষয়। তবে এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ক্রিকেটারদের স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে থাকার অনুমতি নেই। যেহেতু সফরের মেয়াদ এক মাসের কম, তাই বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদি কোনো ক্রিকেটার পরিবারকে সঙ্গে রাখতে চান, তাহলে তার খরচ নিজেকেই বহন করতে হবে।'  

বোর্ডের এমন সিদ্ধান্ত ক্রিকেটারদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। কেননা, এর আগে বড় টুর্নামেন্ট বা দীর্ঘ সিরিজে পরিবারকে সঙ্গে রাখার সুযোগ পেয়েছেন তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র ট ক হল পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরে এনসিপির সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বে শিল্পপতি, বৈষম্যবিরোধীদের প্রত্যাখ্যান

মাদারীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ৩১ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিল্পপতি শহিদুল ইসলাম হাওলাদারকে। গতকাল রোববার রাত ২টার দিকে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কমিটি প্রকাশ করা হয়। তবে তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের বাদ দিয়ে বহিরাগতদের দলটিতে স্থান দেওয়ার অভিযোগ এনে এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্বে পাঁচজনকে রাখা হয়েছে। তাঁরা হলেন অমিত হাসান, শেখ নাজনিন আহমেদ, হাফেজ মোহাম্মাদ হাসিবুল্লাহ, আজগর শেখ ও নেয়ামত উল্লাহ। বাকি ২৫ জনকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। আগামী তিন মাস অথবা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগপর্যন্ত এই সমন্বয় কমিটি অনুমোদন করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।

গঠিত সমন্বয় কমিটিকে পকেট কমিটি উল্লেখ করে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁরা এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত যোদ্ধা বা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই রাতের আঁধারে এই সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নন। যাঁরা আন্দোলনে ছিলেন না, তাঁরাই কমিটির প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন।

মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধান সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম হাওলাদারকে আমরা কখনো আন্দোলনে দেখিনি। তাঁর বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সবাই এসসিপির এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি, এটিকে কোনো বৈধতা দিচ্ছি না।’

এনসিপির একাধিক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পাওয়া শহিদুল ইসলাম হাওলাদার ঢাকায় থাকেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ডাসার উপজেলার পূর্ব কমলাপুর এলাকায়। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ও হাওলাদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আগে কোনো রাজনৈতিক দলের পদে তিনি ছিলেন না। শহিদুল ইসলাম ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৈয়দ আবুল হোসেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন।

এ ছাড়া কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী অমিত হাসান আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি লীগের মাদারীপুর পৌরসভা শাখার সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। সেই সঙ্গে মাদারীপুর সদর উপজেলার গণ অধিকার পরিষদের সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে সদ্য পদত্যাগকারী শাহিন ভূঁইয়া নামের একজনকে এনসিপি সমন্বয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কে এম কাউসার নামের আরেক সদস্য যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় সংসদের শ্রম ও কর্ম সংস্থার সম্পাদক ছিলেন।

এ সম্পর্কে শহিদুল ইসলাম আজ সোমবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আন্দোলনে শুরু থেকে আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম। জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা নেয়ামত ও জুলাই যোদ্ধা যাঁরা আছেন, সবার সঙ্গে যোগাযোগ আছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এনসিপি জেলা সমন্বয় কমিটিতে আমাকে প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ এনসিপির এই সমন্বয় কমিটিকে প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সত্যি নয়। এখানে দুই-একজন ছাড়া সবাই এই কমিটিকে গ্রহণ করেছেন।’

মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ‘প্রধান সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলামকে আমরা কেউ সমর্থন জানাইনি। তাঁর সঙ্গে আমার কমিটির ব্যাপারে আলাপও হয়নি। এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটি বাতিল করে পুনরায় গঠনের দাবি জানাচ্ছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ