ঢাকার উত্তরায় জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বসন্ত উৎসব’ হয়নি। আজ শুক্রবার পয়লা ফাল্গুনে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে এই উৎসব হওয়ার কথা ছিল। আয়োজকেরা বলছেন, ওখানকার কিছু মানুষের বাধার মুখে তাঁরা এই উৎসব করতে পারেননি।

আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় অনুষ্ঠিত ‘বসন্ত উৎসব’-এর সমাপনী বক্তব্যে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী এ কথা জানান।

৩১ বছর ধরে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করে আসছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদ। এবার চারুকলা অনুষদের বকুলতলা, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে তাদের বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপনের কথা ছিল। তবে বকুলতলা ও বাহাদুর শাহ পার্কে এই উৎসব হলেও উত্তরায় হয়নি।

বকুলতলায় উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে মানজার চৌধুরী বলেন, যথারীতি পুলিশের অনুমোদন নেওয়া, সিটি করপোরেশনে টাকা জমা দেওয়াসহ নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু করেছেন। কিন্তু ‘ওখানকার (উত্তরার) কিছু মানুষের বাধার মুখে’ এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে পারেননি।

‘কিছু মানুষ’ কারা তা মানজার চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা দিতে সবাই হাজির হন। কিন্তু আয়োজকেরা আসেননি। বাধা দেওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়নি বলে তিনি জানান। আয়োজকেরা এই অনুষ্ঠানের জন্য আগেই অনুমতি নিয়েছিলেন বলেন তিনি।

চারুকলায় বসন্ত উৎসবের সমাপনী বক্তব্যে মানজার চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে সব ফুল ফুটুক। শুধু একটি ফুল দিয়ে বাগান সাজালে সেটি বাগান হয় না। বাগানে শত ফুল ফুটতে দিতে হবে। এই ফোটার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেটিই তবে সবার বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মূল বিষয় ছিল সমতা, বাংলাদেশে সেটি এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি বলে আক্ষেপ জানান ।’

মানজার চৌধুরী আরও বলেন, ‘যখন দেখা যায় জয়পুরহাটে মেয়েদের খেলা বন্ধ হয়ে যায়, সাতক্ষীরায় উদীচীর স্টল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, টাঙ্গাইলের মধুপুরে লালনের উৎসব বন্ধ হয়ে যায়, তখন মনটা ব্যথিত হয়। তখন সংস্কৃতি হুমকির মুখে দাঁড়ায়। এই সংস্কৃতি আজকের নয়, হাজার বছর লালন করে দেশবাসী এখানে নিয়ে এসেছে। এই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধের জন্য, বাংলাদেশের জন্য।’

অনুষদের বকুলতলায় ‘বসন্ত উৎসব’-এর সমাপনী বক্তব্য দেন জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের সহসভাপতি কাজল দেবনাথ। তিনি বলেন, ‘কোকিল সবার জন্য গান করে, ফুল সবার জন্য ফোটে। পাহাড়ি, বাঙালি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন ভাষাভাষী—সবাই মিলে শান্তিতে বাংলাদেশে বাস করতে হবে। সাম্য যেন অধরা না থাকে। বাংলাদেশ দেশ হোক সবার জন্য।’

বকুলতলায় ‘বসন্ত উৎসব’-এর সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি স্থপতি সফিউদ্দিন আহমদ।

বকুলতলায় উৎসব

সকাল সাড়ে ৭টায় বকুলতলায় রাগ বসন্তে ‘বসন্ত উৎসব ১৪৩১’ শুরু হয়। রাগ বসন্ত পরিবেশন করেন সুস্মিতা দেবনাথ। সরোদে ছিলেন ইসরা ফুলঝরি খান ও তবলায় আপন বিশ্বাস।

তারপর একে একে চলে দলীয় সংগীত, একক সংগীত, দলীয় নৃত্য, একক আবৃত্তি। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, নৃত্যম, স্বপ্নবিকাশ কলা কেন্দ্র, তপস্যা, বেনুকা ললিতকলা কেন্দ্র, বাংলাদেশ গৌড়ীয় নৃত্য একাডেমি, মম কালচারাল একাডেমিসহ অনেক সংগঠন ও ব্যক্তি এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কয়েকটি দলও এসব অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। টানা চলা এই অনুষ্ঠান শেষ হয় দুপুর ১২টায়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী ও আহসান দিপু।

বকুলতলার এই বসন্ত উৎসব দেখতে ভোর থেকেই মানুষের সমাগম ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মানুষের উপস্থিতিও। শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের আগমন ছিল এখানে। সবার সাজেও ছিল বসন্তের ছোঁয়া। হলদে শাড়িতে কেউ খোঁপায় গুঁজেছেন হলুদ গাঁদা, কেউবা কানে। আবার কেউ হাতে পরেছেন গাঁদা ফুলের মালা। অনেকের মাথায়ও ছিল বাহারি ফুলের রিং। পুরুষদের অনেকের পরনে ছিল পাঞ্জাবি। তাতে ছিল হলুদের ছোঁয়া। নাচের তালে তালে ছিল নানা রঙের খেলাও।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫