ববিতে আন্দোলনরতদের ‘শিবির ট্যাগ’র অভিযোগে সমন্বয়ককে মারধর
Published: 15th, February 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ‘শিবির ট্যাগ’ দেওয়ার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে মারধর করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের সামনে একদল শিক্ষার্থী তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
ভুক্তভোগী মো. ইমরান আল আমিন ববির রসায়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। মারামারির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পরপরই উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় স্বৈরাচারের দোসর ও ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের অভিযোগ এনে উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান নেন । পরে আন্দোলন শেষ হলে ভুক্তভোগী ইমরানকে ডাকেন একদল শিক্ষার্থী। সেখানে কয়েক দফায় শিবির ট্যাগ নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীরা তাকে বেধড়ক মারধর করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (ভর্তি শিক্ষাবর্ষ) জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম (রকি) ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। অথচ ইমরান উপাচার্যের পক্ষে হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছে এবং স্বৈরাচারের দালালি করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শিবির ট্যাগ দিয়েছে। সেজন্য শিক্ষার্থীরা তার উপর ক্ষিপ্ত।”
ভুক্তভোগী ইমরান আল আমিন বলেন, “আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে আমি ঠিকমত কথা বলতে পারছি না। আমার উপর হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের বিচার চাই।”
অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম রকি মারধরে বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “আমি হামলা বা মারধর করিনি। ঘটনাস্থলের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম।”
তবে বাকি অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য ল ইসল ম ইমর ন
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস