Risingbd:
2025-06-16@08:33:32 GMT

গোমতী নদীতে পলো বাওয়া উৎসব

Published: 16th, February 2025 GMT

গোমতী নদীতে পলো বাওয়া উৎসব

পলো দিয়ে মাছ ধরা উৎসব হচ্ছে গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্য। সেই ঐতিহ্য উৎসব পালনে প্রতিবছর এই সময় এলেই কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী কটকবাজার এলাকায় নানা স্থান থেকে গোমতির পাড়ে জড়ো হন শত শত মানুষ।

কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ উৎসব আগের মতো জাঁকজমক না হলেও গান ও হৈ-হুল্লোড়ে কোনো কমতি ছিল না গোমতিতে। উৎসব দেখতে ভিড়ে করেন উৎসুক জনতা। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় মৎস্য শিকারিদের ভিড়।

রবিবার (১৬ ফ্রেরুয়ারি) দুপুর, গোমতি নদীর কটকবাজার এলাকায় চারদিকে ফাগুনের ঝিরিঝিরি হাওয়া বইছে। ধুলো উড়ছে। গোমতীর পাড়ে জড়ো হয়েছেন বেশ কয়েকজন। কারও হাতে পলো, কারও হাতে কনুই জাল। কেউবা এসেছেন বেড় জাল নিয়ে। 

বছরের ফাল্গুন মাসে গোমতী নদীর পানি কমে তলানিতে জমা হয়। তখন এর বুকে চলে মৎস্য শিকার উৎসব। এমনই এক উৎসবে যোগ দিতে আজ রবিবার জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মৎস্য শিকারিরা ভিড় জমান।

কেউ কনুই জাল ছুড়লেন। কেউ হাতের পলো চেপে ধরলেন পানিতে। কিছুক্ষণ পরই শোনা গেল উল্লাস। কারও জালে ধরা পড়ছে কার্প, কারও জালে বাগাড়। কেউ পলোতে চেপে ধরছেন বড় রুই মাছ।

চৌদ্দগ্রাম থেকে আসা আমিন মিয়া গোমতীর টিক্কারচর ব্রিজের নিচে অন্তত ৭ কেজি ওজনের একটি কার্প মাছ পেয়েছেন। তিনি বললেন, ‘‘আমি যহন পলোডা লইয়া বাড়িত থাইক্কা আই হেসুমকালা আমার মাইয়াডা কয়, আব্বা দোয়া পইড়া দিলাম। তুমি একটা বড় মাছ পাইবা। আমার মাইয়ার কথাডা ফলছে। মাইয়ার জামাইডা বাইত আইছে। এত্ত বড় মাছটা দেখলে অক্করে বেজায় খুশি হইবো।’’

বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় মৎস্য শিকারিদের ভিড়।

কালের পরিক্রমায় নদীতে মাছের সংখ্যা কমে এলেও মৎস্য শিকারিদের উৎসবে ভাটা পড়েনি এতটুকু। হুল্লোড় এবং মজায়ও ছিল না কোনো ভাটা। 

নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট থেকে আসা শৌখিন শিকারি কালা মিয়া বলেন, ‘‘দুই ঘণ্টা পলোডা চাপছি। আৎকা একটা লাড়া দিল। আরও চাপ দিয়া ধরছি। আমার ভাই শামীম আর আমি চার কেজি ওজনের মাছটা পাড়ো তুলছি।’’

দেবিদ্বার থেকে আসা কৃষক রহমত মিয়া বলেন, ‘‘চার কেজি ওজনের একটা বাগাড় মাছ পাইছি। মানুষে বাগাড়টা কিনতে চায়। আমি বেচি নাই। মাছতো বেচতাম পাইরাম কিন্তু কিন্না খাইতাম পারতাম না। টেকার লোভ করি নাই।’’

এই বিষয় ইতিহাসবিদ ও গবেষক আহসানুল কবীর বলেন, ‘‘গোমতীতে মাছ ধরার উৎসবটি আমাদের শত বছরের ঐতিহ্য। একসময় এই নদীতে বড় বোয়াল, বাগাড়, চিতল, কালিবাউশ, রুই-কাতলা পাওয়া যেত। সেগুলো নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে বিক্রি হতো।”

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক সুমি আক্তার বলেন, “সময়ের পরিক্রমায় কমেছে গোমতীর পানি ও মাছের আনাগোনা। এখন যৎসামান্য কিছু মাছ পাওয়া যায়। যদি গোমতীকে শাসন না করে পরিকল্পনা অনুযায়ী খনন করা যেত, তাহলে গোমতী তার আগের রূপ ফিরে পেত এবং জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ হতো।’’

ঢাকা/রুবেল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মৎস য শ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ

ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।

রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।

অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা। 

বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো। 

বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া। 

আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না। 

বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’

বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা। 

উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। 

রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কপালে ১৩টি এবং থুতনিতে ৪টি সেলাই করা লাগে
  • দেশের পর এবার বিদেশেও ঈদের সিনেমার মুক্তি
  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’