বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চান ছাত্রীরা, দিলেন সেদিনের ঘটনার ব্যাখ্যা
Published: 16th, February 2025 GMT
অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বহিষ্কৃত পাঁচ ছাত্রী। এ সময় প্রক্টরের পদত্যাগ ও বহিষ্কারাদেশের প্রত্যাহারসহ ছয় দাবি জানান তারা।
আজ রোববার বিকেল চারটায় নগরীর ষোলশহর স্টেশনে এক সংবাদ সম্মেলনে করেন তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রওজাতুল জান্নাত, সুমাইয়া শিকদার, উম্মে হাবিবা বৃষ্টি, মাইসারা জাহান ইশা ও জান্নাতুল মাওয়া মিথিলা। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুমাইয়া শিকদার।
সম্মেলনে জান্নাতুল মাওয়া মিথিলা বলেন, ‘সেদিন চার পাক্ষিক ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু রাতে মেয়েদের হলের সামনে ভাঙচুর চালানো হয়। তবে ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানানো মেয়েদেরকেই শুধু শাস্তির আওতায় আনা হলো। অথচ যারা ভাঙচুর করেছিলেন, যে শিক্ষার্থীরা হলের গেটে তালা দিয়েছিলেন তাদের কোনো শাস্তি দেওয়া হলো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেদিন ভাঙচুর শুরু হওয়ার সময় আমরা বারবার প্রক্টরকে কল করছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদেরকে বলেন, আমাদের ফোন কলে আসতে তিনি বাধ্য নন, প্রভোস্টের মাধ্যমে জানাতে হবে। যে প্রক্টরিয়াল বডি আমাদেরকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি তারাই আমাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। আমাদের শেখ হাসিনার দোসরসহ নানা কটু কথা বলে। এছাড়াও প্রক্টর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেয়েদেরকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।’
লিখিত বক্তব্যে ঘটনার বর্ণনা দেন সুমাইয়া শিকদার। এ সময় তিনি ছয় দফা দাবি পেশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও কোনো বহিষ্কারাদেশ পাইনি। অথচ চবিসাসের অনলাইন পেজে আমাদের নাম প্রকাশসহ ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারাদেশ সত্য কিনা আমরা তাও জানি না। সত্য হলে আমরা তিন কার্য দিবসের মধ্যে এর প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবি জানাচ্ছি। দাবি না মানা হলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
শিক্ষার্থীদের ছয় দাবি হলো- অন্যায়ভাবে করা বহিষ্কারাদেশ তিনদিনের মধ্যেই প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই বহিষ্কারাদেশের সঙ্গে জড়িত প্রক্টরিয়াল বডি অপসারণের আগে আর কোনো বিচার প্রক্রিয়া চালানো যাবে না। হামলাকারী ছাত্রদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সাংবাদিকতার নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে মেয়েদের অনুমতি ছাড়া ভিডিও ধারণকারী এবং আশোভনীয়, নারী বিদ্বেষী আচরণকারী ‘তথাকথিত’ সাংবাদিকদের (সব সাংবাদিকদের নয়) শান্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আক্রমণ ও ভাঙচুরকারী ছাত্রদের হামলা থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ প্রক্টরিয়াল বডির দায় স্বীকার করতে হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের নিয়ে অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার কারণে প্রক্টর তানভির মোহাম্মদ হায়দার আরিফ স্যারকে ভুল স্বীকার করে পদত্যাগ করতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।