হিলি সীমান্তে বিএসএফের বাধায় ৭ দিন ধরে বন্ধ রেললাইনে নিরাপত্তা দেয়ালের নির্মাণকাজ
Published: 17th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের হিলিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় সীমান্তঘেঁষা রেললাইনের কালভার্টে ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল (নিরাপত্তা দেয়াল) নির্মাণকাজ সাত দিন ধরে বন্ধ আছে। এ বিষয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠকের পরও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় কাজটি নিয়ে অনেকটাই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের লোকজন হিলি সীমান্তের ২৮৫ নম্বর মেইন পিলারের ১৮/৫ নম্বর সাব-পিলারের কাছে রেলওয়ের একটি কালভার্ট-সংলগ্ন ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল নির্মাণ করতে যান। এ সময় বিএসএফের সদস্য ওই কাজে বাধা দেন। পরে বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার বিকেলে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কাছে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। ফলে সাত দিন ধরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা দেয়ালের নির্মাণকাজটি বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেলওয়ে ব্রিজের অ্যাপ্রোচ ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। এটি মূলত ইটের গাঁথুনি। গ্রাউন্ড লেভেল থেকে রেললাইন পর্যন্ত প্রায় দুই ফুট উচ্চতার দেয়াল। এর মধ্যে প্রায় এক থেকে দেড় ফুট দেয়াল মাটির নিচেই থাকবে। এটি সংস্কার নয়, নতুন গাঁথুনি হবে। রেললাইন দিয়ে ট্রেন গেলে ব্যালাস্ট (পাথর) সরে যায়। আর এই পাথর ধরে রাখার জন্য রেললাইন থেকে সাড়ে তিন ফুট দূরে ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল তৈরি করা হয়। এক সপ্তাহ ধরে সেখানে কাজ করার চেষ্টা চলছে। তবে বিএসএফ বারবার বাধা দিচ্ছে।’
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট (আইসিপি) বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শাহাদাত হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কালভার্টের কী প্রবলেম, আমি তো কালভার্টের কোনো প্রবলেম বুঝিনি। আপনারা এগুলো উদ্ভট তথ্য কোথায় পান বলেন দেখি। এগুলো তথ্য আপনারা যাদের কাছে কালেক্ট করেন, তাদের কাছ থেকে আসল তথ্যটা জানতে হবে। এখানে রেললাইনের পশ্চিম পাশে এক ফুট উচ্চতার পাথর ধসে যায়, সেখানে ভিট (গাঁথুনি) দেবে। এখন আপনারা জানতে আসছেন রেলব্রিজ নিয়ে কী প্রবলেম হইছে? এগুলো তো সঠিক না, আর সঠিক তথ্যও না, সঠিক কোনো কথাও না।’
রেলওয়ে কালভার্টে কী ঘটেছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘কিছুই ঘটেনি। ওরা (রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ) কাজ করবে রেলওয়ের, যেহেতু সীমান্তের পাশে, বিএসএফ জিনিসটা দেখবে। তাদের (বিএসএফ) একটা দায়িত্ব আছে না। সীমান্তের পাশে কী হয়, এটার ব্যাপারে বিএসএফ দেখবে। আমরা যদি সীমান্তের স্থাপনা দেখতে পারি, কিন্তু তারা কি আমাদের স্থাপনা দেখবে না। যেহেতু এটা সীমান্তের ৫০ গজের মধ্যে কাজ, তারা (বিএসএফ) তো প্রোটেকশন দেবেই। আমরা তাদের প্রোটেকশন দেওয়া থেকে পরিত্রাণ করব, এ জন্যই তো আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম ন তরক ষ ব এসএফ র লওয় রবল ম
এছাড়াও পড়ুন:
তেঁতুলিয়া সীমান্তে পুশইনের সময় ভারতীয় নাগরিকসহ আটক ৫
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার পেদিয়াগঞ্জ সীমান্তে পুশইনের সময় পাঁচজনকে আটক করেছে বিজিবি। শনিবার সকালে পেদিয়াগঞ্জ বিওপির সদস্যরা তাদের আটক করে। তাদের তিনজন বাংলাদেশি ও দুইজন ভারতীয় নাগরিক।
বিজিবি জানায়, তেঁতুলিয়া পেদিয়াগঞ্জ বিওপির সীমান্তের মেইন পিলার ৪৩০/২ এস থেকে প্রায় ৭০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গুচ্ছগ্রাম থেকে ভারতের প্রতিপক্ষ ১৩২/পুরোহিতগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা চান্দাপাড়া এলাকা থেকে বিএসএফের পুশইন করা দুইজন নারী ও তিনজন পুরুষকে আটক করে বিজিবির টহলদল।
আটক বাংলাদেশিরা হলেন- যশোরের শার্শা থানার বড় কলোনি গ্রামের মারফত আলীর ছেলে কোরবান গাজী (৩৩), অভয়নগর থানার ডাকহিদিয়া শ্যামলনগর গ্রামের মৃত মকবুল শেখের ছেলে তরিকুল শেখ (৪২) ও নড়াইল সদর থানার গোবরা বাজারের বীরগ্রাম গ্রামের মৃত ঈশ্বর গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের মেয়ে শ্রী বন্দনা রানী বিশ্বাস (৩৭)।
ভারতীয় নাগরিকরা হলেন- মোছা. নাজমা (২৭) এবং মোছা. ফারজানা (২৩)। নাজমা পালঘর জেলার বুড়িগুলি থানার কান্দেওয়ালি গ্রামের ইয়াসিন সরকারের মেয়ে এবং ফারজানা পালঘর জেলার ধানিউ থানার পালঘাট ভাসাই গ্রামের মারফত আলী গাজীর মেয়ে।
আটককৃত ব্যক্তিদের তেঁতুলিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।