দিনাজপুরের হিলিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় সীমান্তঘেঁষা রেললাইনের কালভার্টে ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল (নিরাপত্তা দেয়াল) নির্মাণকাজ সাত দিন ধরে বন্ধ আছে। এ বিষয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠকের পরও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় কাজটি নিয়ে অনেকটাই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের লোকজন হিলি সীমান্তের ২৮৫ নম্বর মেইন পিলারের ১৮/৫ নম্বর সাব-পিলারের কাছে রেলওয়ের একটি কালভার্ট-সংলগ্ন ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল নির্মাণ করতে যান। এ সময় বিএসএফের সদস্য ওই কাজে বাধা দেন। পরে বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার বিকেলে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কাছে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। ফলে সাত দিন ধরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা দেয়ালের নির্মাণকাজটি বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেলওয়ে ব্রিজের অ্যাপ্রোচ ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। এটি মূলত ইটের গাঁথুনি। গ্রাউন্ড লেভেল থেকে রেললাইন পর্যন্ত প্রায় দুই ফুট উচ্চতার দেয়াল। এর মধ্যে প্রায় এক থেকে দেড় ফুট দেয়াল মাটির নিচেই থাকবে। এটি সংস্কার নয়, নতুন গাঁথুনি হবে। রেললাইন দিয়ে ট্রেন গেলে ব্যালাস্ট (পাথর) সরে যায়। আর এই পাথর ধরে রাখার জন্য রেললাইন থেকে সাড়ে তিন ফুট দূরে ব্যালাস্ট প্রোটেকশন ওয়াল তৈরি করা হয়। এক সপ্তাহ ধরে সেখানে কাজ করার চেষ্টা চলছে। তবে বিএসএফ বারবার বাধা দিচ্ছে।’

হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট (আইসিপি) বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শাহাদাত হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কালভার্টের কী প্রবলেম, আমি তো কালভার্টের কোনো প্রবলেম বুঝিনি। আপনারা এগুলো উদ্ভট তথ্য কোথায় পান বলেন দেখি। এগুলো তথ্য আপনারা যাদের কাছে কালেক্ট করেন, তাদের কাছ থেকে আসল তথ্যটা জানতে হবে। এখানে রেললাইনের পশ্চিম পাশে এক ফুট উচ্চতার পাথর ধসে যায়, সেখানে ভিট (গাঁথুনি) দেবে। এখন আপনারা জানতে আসছেন রেলব্রিজ নিয়ে কী প্রবলেম হইছে? এগুলো তো সঠিক না, আর সঠিক তথ্যও না, সঠিক কোনো কথাও না।’

রেলওয়ে কালভার্টে কী ঘটেছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘কিছুই ঘটেনি। ওরা (রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ) কাজ করবে রেলওয়ের, যেহেতু সীমান্তের পাশে, বিএসএফ জিনিসটা দেখবে। তাদের (বিএসএফ) একটা দায়িত্ব আছে না। সীমান্তের পাশে কী হয়, এটার ব্যাপারে বিএসএফ দেখবে। আমরা যদি সীমান্তের স্থাপনা দেখতে পারি, কিন্তু তারা কি আমাদের স্থাপনা দেখবে না। যেহেতু এটা সীমান্তের ৫০ গজের মধ্যে কাজ, তারা (বিএসএফ) তো প্রোটেকশন দেবেই। আমরা তাদের প্রোটেকশন দেওয়া থেকে পরিত্রাণ করব, এ জন্যই তো আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম ন তরক ষ ব এসএফ র লওয় রবল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে খুঁটি উপড়ে ফেলে বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ
  • পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক