পারিবারিক কলহের জেরে বরগুনার পৌর শহরে এক গৃহবধূকে ছুরি মেরে তাঁর স্বামী হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার পৌরসভার বাগানবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূ খুন হন। ঘটনার পর তাঁর স্বামী থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত আসমা বেগম (৩০) আবুল কালামের স্ত্রী। এ দম্পতি দুই ছেলে–মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। আসমা বেগম শহরের একটি বেসরকারি ব্যাংকে পরিছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন। তিনি বরগুনার চান্দখালী এলাকার বকুলতলী নামক এলাকার ইউনুস মিয়ার মেয়ে। আবুল কালাম (৩৫) চায়ের দোকানি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসমা বেগমের চাকরি পেতে কিছু টাকা খরচ হয়েছিল। সেই টাকা দিয়েছিলেন আবুল কালাম। এ জন্য স্ত্রীর বেতনের টাকা দাবি করতেন আবুল কালাম। তবে আসমা বেগম টাকা দিতে চাইতেন না। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড় লেগে থাকত। গতকাল রাত আটটার দিকে স্ত্রীকে ছুরি মেরে বাসা থেকে চলে যান আবুল কালাম। পরে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ আসমা আক্তারকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্মরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাসার মালিক মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা সাতটার পর আমার বাসার লোকজন ফোন দিয়ে জানান, ভাড়াটিয়াদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে, দ্রুত চলে আসার কথা বলেন। এসে দেখি, আসমা আক্তারকে মেরে ওর স্বামী বাসা ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁদের বাচ্চারা কান্নাকাটি করছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯ নম্বরে (জাতীয় জরুরি নম্বর) ফোন দিই। তারপর পুলিশ আসে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনার পর আবুল কালাম বরগুনা সদর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছেন। এখনই আবুল কালামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না। কারণ, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রীর চাকরি নেওয়ার ব্যাপারে আবুল কালাম সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। পরে স্ত্রী চাকরির বেতনের টাকা দিচ্ছিলেন না। এ কারণেই হয়তো এ হত্যাকাণ্ড।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারে পিবিআইর হাজতখানা থেকে আসামির লাশ উদ্ধার

মৌলভীবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাজতখানার ভেতর থেকে মোকাদ্দুস (৩২) নামে আসামির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে পিবিআই।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে মৌলভীবাজার জেলা শহরের টিভি হাসপাতাল সড়কে পিবিআইর হাজতখানা থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। 

মোকাদ্দুস কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি আলোচিত লিটন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৯ আগস্ট কমলগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের ধানক্ষেত থেকে লিটন নামের এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে মোকাদ্দুস পলাতক ছিলেন। রবিবার রাত ৮টার দিকে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন মোকাদ্দুস। পরে তাকে লিটন হত্যার মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করে থানা পুলিশ।

পিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর খাওয়া-দাওয়া শেষে মোকাদ্দুসকে ৭-৮ জন আসামির সঙ্গে হাজতখানায় রাখা হয়। সোমবার ভোর ৬টার দিকে ডিউটি অফিসার গিয়ে দেখেন, মোকাদ্দুস নিজের লুঙ্গি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও মোকাদ্দুসের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

১১ সেপ্টেম্বর লিটনের বাবা সাত্তার মিয়া অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ মামলায় শামিম নামের আরেকজনকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। 

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পিবিআইর পুলিশ সুপার মো. জাফর হুসাইন বলেছেন, লিটন হত্যা মামলার তদন্ত আমাদের হাতে। মোকাদ্দুস রবিবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোমবার সকালে হাজতখানায় আত্মহত্যা করেন তিনি। বিষয়টি আমরা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি।

ঢাকা/আজিজ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • মৌলভীবাজারে পিবিআইর হাজতখানা থেকে আসামির লাশ উদ্ধার