ফাঁদে পা দিলে পলাতক আওয়ামী লীগ জায়গা পাবে
Published: 17th, February 2025 GMT
হঠাৎই পরিস্থিতি বেশ ঘোলাটে হয়ে গেল বলে মনে হচ্ছে। অবশ্য বলা যায়, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকে কখনোই পরিস্থিতি খুব পরিষ্কার ছিল না। একটা বিতর্ক তো অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ দেওয়ার দিনই দেখেছিলাম, এভাবে এ সরকারের শেখ হাসিনার নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নেওয়া ঠিক হয়নি। ৫ আগস্ট প্রকৃতপক্ষে, তাদের মতে, বিপ্লব হয়েছে। বিপ্লবী সরকারের শপথ নেওয়া উচিত ছিল শহীদ মিনারে আন্দোলনে কোনো শহীদের বাবার কাছ থেকে।
কিন্তু অধ্যাপক ইউনূস এই বিপ্লবের ধারণার সঙ্গে ছিলেন না। নিজের বেড়ে ওঠা, বিখ্যাত হওয়ার পুরো প্রক্রিয়াই ছিল গণতান্ত্রিক। তিনি প্রথম থেকেই মনে করতেন, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে এখন একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি চালু করতে হবে। সে কথা তিনি প্রকাশ্যে বলেছেনও বহুবার। কিন্তু তাঁর সঙ্গের অনেকেই, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা, র্যাডিক্যাল বা বিপ্লবী ধ্যানধারণার মানুষ ছিলেন।
আরও পড়ুনকেন এত দিন খুঁজে ধরে ফেলা হয়নি ‘ডেভিলদের’১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫পাঠক, একটু মনোযোগের সঙ্গে লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন, ছয় মাসে পরতে পরতে এই দুই ধরনের চিন্তার একটি দ্বন্দ্ব কাজ করেছে। মো.
এর মধ্যে অবশ্য সত্যতা আছে। কিন্তু আরেকটা সত্য এই যে ইউনূস সরকার যদি তাঁকে না চাইত, তাহলে তিনি থাকতে পারতেন না। যে শিক্ষার্থীদের অধ্যাপক ইউনূস তাঁর প্রাথমিক নিয়োগকর্তা বলে অভিহিত করেছিলেন, যাঁদের তিনি আগামীর ভবিষ্যৎ বলে মনে করেন, তাঁদের প্রচণ্ড বিরোধিতার পরেও সাহাবুদ্দিনকে সরানো হয়নি।
মাঝেমধ্যেই শিক্ষার্থীরা প্রকারান্তরে ইউনূস সরকারের বিরোধিতা করেছেন। অধ্যাপক ইউনূসের সরকার সেগুলো হয় নীরবে সহ্য করে নিয়েছে অথবা কৌশলে সেগুলোর মোকাবিলা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের বিষয়টি ধরা যেতে পারে।
জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের র্যাডিক্যাল চিন্তা আছে। সেই চিন্তা থেকেই ঘোষণাপত্রের কথাটি এসেছে। কিন্তু সময় বয়ে গেছে। ছয় মাস পর ঘোষণাপত্র খুব একটা অর্থ বহন করে না। অথচ শিক্ষার্থীরা এ ব্যাপারে সিরিয়াস। তাঁরা এটা না হওয়ার জন্য সরকারকেই দায়ী করেছেন।
মানুষ বলছে, যাঁদের ডেভিল বলা যায়, সেই রকম ব্যক্তিরা তো এখন দেশে নেই। তাঁদের অনেককেই ক্যান্টনমেন্টে রাখা হয়েছিল। কী করে যে সেখান থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশী দেশে পাড়ি জমালেন, সেটা আরব্য রজনীর কাহিনির মতো। এখন যাঁরা দেশে আছেন, তাঁরা তো কেউ বিগ ফিশ নয়। এখন মশা মারতে কামান দাগানো হচ্ছে। এটা কি কোনো ফল দেবে, নাকি অশ্বডিম্ব প্রসব করবে?সরকার কেমন ঠান্ডা মাথায় বিষয়টা মোকাবিলা করেছে। বলেছে, সবাই মিলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা তৈরি করবে। এখন অবশ্য আর এটাকে ঘোষণাপত্র বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে ডিক্লারেশন বা ঘোষণা। জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে সব কটি রাজনৈতিক দল মিলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কোন ঘোষণা রচনা করা সম্ভব হবে? সে তৎপরতা তো দেখছি না।
শুরু করেছিলাম একটি ঘোলাটে পরিস্থিতির কথা বলে। হঠাৎই দেশব্যাপী বাড়িঘর ভাঙচুর, আগুন লাগানো শুরু হয়ে গেল। শুরু হলো ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙা দিয়ে। এর পেছনে সরকারের অভ্যন্তরে যে দ্বন্দ্বের কথা বলছি, তার প্রভাব আছে। ১৫ বছর ধরে আওয়ামী সরকার ও তার দোসররা এই দেশের যে ক্ষতি করেছে, জনগণের ওপর যে নির্মম অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়েছে, তা ভয়াবহ।
মানুষের মধ্যে যে ক্রোধ তৈরি হয়েছে, তা হঠাৎই চলে যাবে—এ রকম ভাবার কোনো কারণ নেই। মানুষ তাদের প্রত্যাবর্তন আর দেখতে চায় না। কিন্তু সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিতে এ ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত হবে?
আগেও বলেছি যে ব্যাপারটা বেশি জটিল। ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণ কি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হবে? নাকি উগ্রভাবে বল প্রয়োগ করতে হবে? বুঝতে অসুবিধা হয় না যে অধ্যাপক ইউনূস এ ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে চান। কিন্তু টগবগ করে ফুটতে থাকা তরুণ শিক্ষার্থীরা তা মানবেন কেন?
পরাজিত ও পালিয়ে গিয়ে পাশের দেশে আশ্রয় নেওয়া স্বৈরাচারীর কথাবার্তা শুনে তরুণ শিক্ষার্থীরা ক্রোধে ফুঁসে উঠতেই পারেন। কিন্তু এ–ও তো ঠিক যে এভাবে স্বৈরাচার আমাদের উসকে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করতে পারে, যদি আমরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি।
আরও পড়ুনরহস্য এই যে, সরকারের কে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এ ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখলেন, যা হয়েছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ রকম ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়। পরদিন সরকারিভাবে এটাও ঘোষণা করা হলো যে বর্তমান পরিস্থিতিকে যদি কেউ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, তাহলে তাকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এল না। বরং জেলায় জেলায় আরও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগ নিশ্চয়ই গভীর অনুভব থেকে উঠে আসা। কালজয়ী এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা পৃথিবীর অন্যতম বাজে এক ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছি। এরপর এই অভ্যুত্থানের সফল পরিণতি হবে গণতন্ত্র নির্মাণে। আর সে জন্যই দরকার একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য মানসম্পন্ন জাতীয় নির্বাচন। আমরা সেই পথে অগ্রসর হচ্ছি।
নির্বাচন যাতে সত্যি সত্যি মানসম্পন্ন হয়, তার জন্য আমরা সংস্কারপ্রক্রিয়ায় এখন হাত দিয়েছি। এ সময়ের লড়াই বিক্ষোভধর্মী নয়, বরং বুদ্ধিবৃত্তির, আরও উন্নত প্রক্রিয়ার। এ জন্য দরকার একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। আমাদের কাছে দেশি–বিদেশি যারা পরাজিত হয়েছে, তারা আমাদের এই বিজয়যাত্রা মানতে চাইবে না। তারা আমাদের মানুষদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করবে। চেষ্টা করবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির। আমাদের সদাসতর্ক থাকতে হবে। তাদের ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না।
ব্যক্তিগতভাবে আমি পতিত স্বৈরাচারকে খুব বড় করে দেখতে চাই না। নিশ্চয়ই তারা সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী ছিল, বড় ছিল। কিন্তু গত ১৫ বছরে তারা যা করেছে, তাতে তাদের নৈতিক শক্তি শেষ হয়ে গেছে। পরে তারা যদি প্রকাশ্য হওয়ার সুযোগ কখনো পায়ও, গত ১৫ বছরের দুঃশাসনের পক্ষে বলার মতো তাদের কিছু থাকবে না। রাজনীতি কেবল গায়ের জোরে হয় না। এর জন্য নৈতিকভাবে শক্তিশালী বয়ান থাকা চাই। সেটা পতিত আওয়ামী স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের নেই। তারা জায়গা পেতে পারে যদি আমরা ভুল করি, ভুল করে তাদের জন্য জায়গা তৈরি করে দিই।
আবার আসি ঘোলাটে পরিস্থিতির আলোচনায়। বলছিলাম, সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে কাজকর্ম শুরু হয়ে গেছে। গঠিত ১৫টি সংস্কার কমিশনের ৬টি রিপোর্ট দিয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক হয়ে গেল। নিশ্চয়ই বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তৎপরতা।
কিন্তু এর আগেই সরকার অপারেশন ডেভিল হান্ট বলে তৎপরতা শুরু করেছে। এটি করতে হয়েছে সম্ভবত গাজীপুরে ছাত্রদের ওপর হামলা এবং তা নিয়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে। এর ওপরে কোনো তদন্ত হয়নি। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, একজন ‘ডেভিলও’ বাইরে থাকতে পারবে না।
কিন্তু মানুষ বলছে, যাঁদের ডেভিল বলা যায়, সেই রকম ব্যক্তিরা তো এখন দেশে নেই। তাঁদের অনেককেই ক্যান্টনমেন্টে রাখা হয়েছিল। কী করে যে সেখান থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশী দেশে পাড়ি জমালেন, সেটা আরব্য রজনীর কাহিনির মতো। এখন যাঁরা দেশে আছেন, তাঁরা তো কেউ বিগ ফিশ নয়। এখন মশা মারতে কামান দাগানো হচ্ছে। এটা কি কোনো ফল দেবে, নাকি অশ্বডিম্ব প্রসব করবে?
এখন আমরা এমন একটা সময় পার করছি, যখন লোক হাসানোর অবকাশ নেই।
● মাহমুদুর রহমান মান্না সভাপতি, নাগরিক ঐক্য
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক পর স থ ত সরক র র র জন য র জন ত আম দ র অবশ য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।