রাবিতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত, ‘হামলার’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ
Published: 17th, February 2025 GMT
স্লেজিং (কটু কথা) করাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষকসহ ২০ জন আহত হন। এরই প্রেক্ষিতে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্লেজিং (কটু কথা) করার প্রেক্ষিতে ‘হামলার’ প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। আগামী তিনদিনের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
রোববার বিকেলে শেখ কামাল স্টেডিয়ামে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ ও গণিত বিভাগের খেলা হয়। খেলায় গণিত বিভাগ তিন রানে জয়ী হয়। স্টেডিয়ামে উভয়পক্ষের সমর্থকেরা পাশাপাশি অবস্থান নেয়। খেলা শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সমর্থকেরা স্টেডিয়াম ত্যাগ করার সময় স্লেজিং করা নিয়ে গণিত বিভাগের সমর্থকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। পরে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সমর্থকেরা স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে গণিত বিভাগের সমর্থকের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে তারা স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের গেট ভেঙে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে দুই বিভাগের সমর্থকেরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সমর্থকেরা লাঠি-সোঁটা নিয়ে গণিত বিভাগের সমর্থকদের ওপর হামলা করেন। এতে গণিত বিভাগের অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে তারা প্যারিস রোডে জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন। দাবিগুলো হলো- প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে হবে। হামলায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। সেই সঙ্গে ওই বিভাগকে সকল ধরনের খেলাধুলা থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে। আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রশাসনকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মানববন্ধনে বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত হামলা। যেখানে আমাদের বিভাগের ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হয়েছেন। অপরদিকে ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের কোনো শিক্ষার্থীই আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। আমরা প্রহসনমূলক কোনো তদন্ত কমিটি চাই না। তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই ন্যাক্কারজনক হামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
গণিত বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও খেলায় আহত শহীদ আখতার বলেন, ‘খেলায় ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ছিল। অন্যদিকে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা শুরু থেকে চরম ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে আসছিল। ঠিক যখন আমরা জয়ের আনন্দে মেতে উঠব, তখনই তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। যা থেকে আমাদের বোনরাও রেহাই পায়নি। আমার চোখে চশমা না থাকলে হয়তো আজ আমি আপনাদের দেখতেও পেতাম না।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘গতকালকের ঘটনায় বেশকিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত। বিষয়টি তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাময়িকভাবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ স্থগিত করা হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণ ত ব ভ গ র আম দ র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী পালিত
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী মানববন্ধন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্রের সামনে পাহাড় রক্ষা পরিবেশ, উন্নয়ন সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মৌলভীবাজার জেলা পাহাড় রক্ষা পরিবেশ ও উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি ময়নুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রভাষক সেলিম আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন কমলগঞ্জ সরকারি গণমহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক হামিদা খাতুন, সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, নিছসা সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক রাসেল হাসান বক্ত, পরিবেশকর্মী সাজু আহমেদ, শাহারা ইসলাম রুহিন, শ্রমিক নেতা দুলাল মিয়া, ছাত্রনেতা লিটন গাজী, মিনহাজুল ইসলাম মুন্না, আব্দুল মতিন, মিসবাউর রহমান, আদিবাসী নেতা সুচিনগুল প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এখনও বাংলাদেশ সেই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারেনি। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয় হলেও দেশের স্বার্থরক্ষায় আন্দোলনকারীরা সরব রয়েছেন। ২৮ বছর পার হয়ে গেলেও দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণ আদায়ে সচেতন হয়নি সরকার। বিষয়টি আমলে নেয়নি কোম্পানি।