অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে শিগগিরই নতুন নির্দেশনা: উপদেষ্ট
Published: 17th, February 2025 GMT
পেট্রোল বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে শিগগিরই নতুন নির্দেশনা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে মামলা-জরিমানা আদায় করলে মামলা করতে নির্দেশনা দেওয়ার ৬ দিনের মাথায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে তা স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি গভীরভাবে পরীক্ষা করে শিগগির এ ব্যাপারে একটা নতুন নির্দেশনা দেওয়া হবে।
থ্রি হুইলার যানবাহনের বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের কি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘থ্রি হুইলার প্রধান সড়কে চলবে না। কিন্তু অন্য সড়কে চলবে। এটার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় একটা নীতিমালা তৈরি করছে এবং এই নীতিমালার অধীনে তারা কাজ করবে।’
পেট্রোল বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে চিঠি দেওয়া হলো, এরপর তা আবার প্রত্যাহার করলেন কেন? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, চিঠি প্রত্যাহার করার কয়েকটা কারণ আছে। একটা হলো যাত্রীর একটা বক্তব্য আছে- মিটারে যাচ্ছে না।
‘‘আর যে চালক তারও একটা বক্তব্য আছে- আমরা মিটারে পরিবহন করতে পারবো না, কারণ আমাদের জমার পরিমাণ বেশি। তারপর আমাদের এখানে ঘুষ দিতে হয়, ওখানে ঘুষ দিতে হয়। তারপর এখন নাকি একটা পুরাতন সিএনজি পেতে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা লাগে। নতুন সিএনজি দেওয়া হচ্ছে না। এ জন্য এটাকে আপাতত স্থগিত করেছি বিষয়গুলো আমরা পরীক্ষা করবো,’’ বলেন উপদেষ্টা।
সিএনজি চালকরা গতকাল মিটার খুলে ফেলেছেন, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘না না, এটা হবে না। আইন তো আমরা পরিবর্তন করিনি। আইন যে ইয়ে আছে, সেটা আছে। কিন্তু এই জিনিসটাকে আমরা আরো একটু গভীরভাবে পরীক্ষা করে শিগগির এ ব্যাপারে একটা নতুন নির্দেশনা দেব।’’
আপনারা আগে পর্যালোচনা না করে কেন চিঠি দিলেন এবং আন্দোলন হওয়ার পর কেন পিছু হটলেন? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মিটারের ভাড়া তো আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারণ করেনি, এটা আগেই নির্ধারণ করা। ওই জন্য যে জিনিসটা আমরা বলতে চাই- এই জিনিসটা একটু পর্যালোচনা করার জন্য আমরা দিয়েছি এবং এ ব্যাপারে আমরা নতুন নির্দেশনা দেব।’’
সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমি বলেছি প্রতিদিন খবরের কাগজে উঠে ২-৩টা মৃত্যু কিংবা মাস শেষে ৩০০-৪০০ জনের মৃত্যু, এটা আমাকে খুব ব্যথিত করে। আমি বলেছি এটা (সড়ক দুর্ঘটনা কমানো) আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট আম দ র স এনজ
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।