সরকারের কর্তৃত্ব না থাকলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ভেস্তে যাবে: এবি পার্টির চেয়ারম্যান মঞ্জু
Published: 17th, February 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। পুরো বিশ্বের কাছে তিনি সুপরিচিত। তিনি আমাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। কিন্তু শাসক হিসেবে তাঁর যে দৃঢ়তা দরকার, সেটির অভাব দেখতে পাচ্ছি। সরকারের কর্তৃত্ব না থাকলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরির আকাঙ্ক্ষা ভেস্তে যাবে।’ আজ সোমবার সন্ধ্যায় এবি পার্টি, চট্টগ্রাম নগরের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম নগরের কাজির দেউড়িতে অবস্থিত সিজেকেএস শপিং কমপ্লেক্সে রোটারি ক্লাব অব চট্টগ্রামের হলকক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। ‘দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজনীতি কেমন হওয়া চাই’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা ও সংগঠক সমাবেশে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই এ দেশের মানুষের বাক্স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ হয়েছিল। তিন বছরের ব্যবধানে আমাদের ডাস্টবিনের খাবারের জন্যও কুকুরের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। ওই সময় মানুষ ভাত পাননি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘নব্বইতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, এমন বন্দোবস্ত হয়েছিল। এর ফল পেয়েছি। পাঁচ বছর পর পর সরকার বদল হয়েছে। একবার আওয়ামী লীগ ও একবার বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে। এই দুই দলকে মানুষ গ্রহণ করল না কেন? মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুর্নীতি দেখল। চাঁদাবাজি, মারামারি, দলীয়করণ অনেকটা একই রকমভাবে হয়েছে। সরকার বদল হয়; কিন্তু চাঁদাবাজি বন্ধ হয় না।’
প্রধান উপদেষ্টাকে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে উল্লেখ করে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আগামী দিনের রাজনীতি কেমন হবে, সে প্রসঙ্গ টেনে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আগামী দিনে দলাদলি, টাকা ও স্লোগানের রাজনীতি আর চলবে না। মানুষ প্রশ্ন করতে শিখে গেছে। মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন ঘটে গেছে।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান লে.
সভায় দলটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘সংস্কার বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে সেটি আমরা মেনে নেব না। সংস্কার হতে হবে। সংস্কারগুলো হলে দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হবে। যাঁরা নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়া করছেন, তাঁদের বলতে চাই, মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলটির জাতীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, সাম্য ও মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে এবি পার্টি বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই লক্ষ্য থেকে এবি পার্টি পিছপা হবে না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত র র জন সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী