মালয়েশিয়ায় ১১৩ বাংলাদেশি গ্রেফতার
Published: 18th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ দেশটি অবৈধ অভিবাসী উচ্ছেদে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে। চলমান এ অভিযানে গ্রেফতার হচ্ছেন অসংখ্য অভিবাসী। এ বিষয়ে বেরিতা হারিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অভিযানে ২৩৫ জন অভিবাসীকে গ্রেফতার করে অভিবাসন বিভাগ। এ সংখ্যার মধ্যে রয়েছেন ১১৩ জন বাংলাদেশি।
রাজ্যের অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্র থেকে রোববার পর্যন্ত রাজ্যের পাঁচটি জেলায় রিফ্লেক্সোলজি সেন্টার এবং কোংসি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মোট ২৩৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়।
মালয়েশিয়া, অভিবাসী, গ্রেফতার, বাংলাদেশমালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান, বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ২৩৫ অভিবাসী
জোহর ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর, দাতুক মোহাম্মদ রুশদি মোহাম্মদ দারুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত ডিসেম্বরে স্বেচ্ছাসেবী পুনর্বিন্যাস কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর, তার বিভাগ আর নিয়োগকর্তা, প্রাঙ্গণের মালিক এবং অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ এবং সুরক্ষা প্রদানকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে আপস করবে না।
তিনি বলেন, প্রথম অভিযানে, গত শুক্রবার মধ্যরাতে পাঁচটি জেলায় একযোগে অভিযান চালিয়ে ১৩০ জন বিদেশি এবং দুটি রিফ্লেক্সোলজি সেন্টারের নিয়োগকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তার মতে, জোহর বাহরুতে মোট ৯০ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যেখানে নয়জন অবৈধ অভিবাসী এবং দুজন নিয়োগকর্তা (বাতু পাহাত), ১২ জন অবৈধ অভিবাসী (মেরসিং এবং মুয়ার) এবং সেগামাতে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রথম অভিযানে ১৮টি কারখানা প্রাঙ্গণ এবং ভাগ করা আবাসন বসতির পাশাপাশি বাতু পাহাত, মার্সিং, মুয়ার এবং সেগামাতে ১৭টি রিফ্লেক্সোলজি কেন্দ্রে অভিযান চালানো হয়।
বাতু পাহাতে অভিযানে ৩২ এবং ৫৩ বছর বয়সী দুই স্থানীয় পুরুষ নিয়োগকর্তা, যারা একটি রিফ্লেক্সোলজি সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক এবং মালিক, তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে, যখন পাঁচটি জেলায় গ্রেফতার হওয়া ১৩০ জন অবৈধ অভিবাসীর বয়স ২১ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে।
মালয়েশিয়া, অভিবাসী, গ্রেফতার, বাংলাদেশমালয়েশিয়ায় সাঁড়াশি অভিযান, বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ২৩৫ অভিবাসী
গ্রেফতার অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা হলো চারজন চীনা নারী, পাঁচজন থাই নারী, ১৭ জন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ এবং ১৭ জন নারী, ছয়জন ভিয়েতনামী নারী, ২৩ জন মিয়ানমার পুরুষ এবং পাঁচজন নারী, দুইজন ভারতীয় পুরুষ, ৩৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ এবং ১৫ জন পাকিস্তানি পুরুষ রয়েছেন।
পরিচালক মোহাম্মদ রুসদি বলেন, সর্বশেষ রোববার রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অপারেশন চলাকালীন বাতু পাহাতের একটি শ্রমিক আবাসন কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়ে ১০৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, বৈধ পাস বা পারমিট ছাড়াই শেয়ার্ড হাউস বন্দোবস্তে বিদেশিরা বসবাস করছে বলে জনসাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়।
এই অভিযানে, ১৮ থেকে ৫৪ বছর বয়সী মোট ৩২৯ জন অভিবাসীর কাগজপত্র পরীক্ষারপর এদের মধ্য থেকে ১০৫ জন অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সংখ্যার মধ্যে রয়েছেন ৭৭ জন বাংলাদেশি।
তিনি বলেন, অভিযানে গ্রেফতার ২৩৫ জন অবৈধ অভিবাসীর সবাই ১৯৫৯/৬৩ সালের ইমিগ্রেশন আইন এবং ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের অধীনে অপরাধী। পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে গ্রেফতারদের পেকান নেনাস ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।
এনজে
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।