প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে ধান ক্রয় ও খাদ্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ৫০০ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি গুদাম তৈরি হয় ১৯৮১ সালের ২৪ ডিসেম্বর। কয়েক বছর ঠিকঠাক মতোই চলে ধান ক্রয় ও সংরক্ষণ।

১৯৯৯ সালের দিকে কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় এ গুদামের কার্যক্রম। কাজ হারা হয় অন্তত ৫০-৬০ শ্রমিক। বর্তমানে ২২ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরে এসে কৃষকের ধান বিক্রি করতে হয়। এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত খাদ্যগুদামটি চালু করার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

অন্তত ২৬ বছর ধরে বন্ধ থাকা এ সরকারি খাদ্যগুদামটি হালুয়াঘাট উপজেলার শাকুয়াই ইউনিয়নের শাকুয়াই বাজারে। গুদামটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কংস নদী। গুদামটি উদ্বোধনের পর কয়েক বছর আমতৈল, নড়াইল ইউনিয়নের আংশিক, বিলডোরা ও আমতৈল ইউনিয়নের আংশিক এলাকার প্রান্তিক চাষিরা সহজে তাদের উৎপাদিত ধান নিয়ে আসতে পারত। ধান বিক্রির জন্য আসা জনসমাগম দেখে শাকুয়াই মোড়ে গড়ে ওঠে বিভিন্ন দোকানপাট।

তবে কোনো কারণ ছাড়াই প্রায় ২৬ বছর আগে হঠাৎ করে গুদামের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় কৃষকদের। এখন রাস্তাঘাট উন্নত হলেও শাকুয়াই, বিলডোরা, নড়াইল, স্বদেশী ইউনিয়নের হাজারো কৃষককে অন্তত ২২ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে উপজেলা সদরের গুদামে ধান বিক্রি করতে হয়। এদিকে ন্যায্য মূল্য না থাকায় এবং ২২ কিলোমিটার ঘুরে ধান বিক্রি করতে গেলে গুনতে হয় বাড়তি খরচ। তাই উপজেলা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে অনাগ্রহ কৃষকের। স্থানীয় হাট-বাজারে ধান বিক্রি করতে গিয়ে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন কৃষক।

খাদ্যগুদামের ভবনটি এখনও মজবুত রয়েছে। চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জুয়াড়ি, মাদকসেবী ও যৌনকর্মীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে এলাবাসীর। এ ছাড়া দখল হয়ে গেছে অনেক জায়গা। গুদামের তালা ভেঙে অনেক বছর আগে ওজন মাপার যন্ত্র ও বেশ কিছু সরঞ্জাম চুরি করে নিয়ে গেছে চোরচক্র। স্টাফ কোয়ার্টার ও নিয়ন্ত্রক কার্যালয়টি অবৈধভাবে দখল করে বসবাস করছেন অনেকেই।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমার বাবা এই গুদামের ঝাড়ুদার ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর আমি সেই দায়িত্ব পাই। তবে বন্ধ হওয়ার পর বেতন বা সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছি। কার্যক্রম না থাকায় পরিবার নিয়ে গুদামের স্টাফ রুমে থাকছি। পাশাপাশি গুদামের সামনে একটি চায়ের দোকান দিয়ে তা দিয়েই কোনো রকম চলছি। গুদামটি যদি চালু হতো, তাহলে অনেকেরই কর্মসংস্থান হতো।’

ভাট্টা গ্রামের প্রান্তিক চাষি আজমত আলীর ভাষ্য, আগে নদী পথে নৌকায় করে ধান নিয়ে যেতেন তারা। এখন তো গুদামে ধান ক্রয় করা হয় না। এ কারণে হালুয়াঘাট বাজারে ধান নিয়ে যেতে হয়। এ গুদাম যদি চালু হতো তাহলে কৃষকের বিশাল উপকার হতো।

প্রবীণ কৃষক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজগর আলী খান রুপক জানান, এ গুদামটি ফের চালু হলে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি খাদ্য ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস আলী খানের ভাষ্য, উপজেলা সদর থেকে এই ইউনিয়ন ২২ কিলোমিটার দূরে। কৃষকের কথা চিন্তা করে তৎকালীন বিএনপি সরকার এই এলাকায় একটি খাদ্যগুদাম নির্মাণ করে। এতে শুধু শাকুয়াই নয়, বিলডোরা, স্বদেশী ও নড়াইল ইউনিয়নের কৃষকরাও এই গুদামে ধান বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু আকস্মিক বন্ধ হয়ে গেছে গুদামটি।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হাসান আলী মিয়া বলেন, ‘আমি এই উপজেলায় দু’বছর ধরে কর্মরত রয়েছি। এর মধ্যে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথাও বলেছি। সামনে বোরো মৌসুমের মধ্যে আমরা গুদামটি চালু করতে পারি কিনা সে বিষয়ে চেষ্টা করছি। এ গুদামটি চালু হলে আমাদেরও সুবিধা হবে। বিশেষ করে সংগ্রহ মৌসুমে ওই এলাকা থেকে ধান ক্রয় করা আমাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। গুদামটি চালু হলে ওই অঞ্চলের কৃষকরাও ন্যায্য মূল্যে ধান দিতে পারবেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ২২ ক ল ম ট র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ