মাইনাস ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মেসির গোলে জিতল মায়ামি
Published: 20th, February 2025 GMT
ভয়াবহ তুষারপাতে বিপর্যস্ত অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপশ্চিমাঞ্চলের অঙ্গরাজ্য কানসাসের। এমন আবহাওয়ায় ঘর থেকে বেরোনোই কঠিন, সেখানে আবার ফুটবল!
তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে চলে যাওয়ায় আবহাওয়া অফিস কানসাস সিটির পরিবেশকে দুর্যোগপূর্ণ ঘোষণা করেছিল। ফলে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে স্থানীয় দল স্পোর্টিং কেসির বিপক্ষে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামির ম্যাচটা ২৪ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
আজ তুষারপাত না হলেও তাপমাত্রা মাইনাস ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল বাতাসের কারণে তা মাইনাস ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো অনুভূত হচ্ছে। এ ধরনের আবহাওয়ায় কখনোই খেলেননি মেসি। প্রচণ্ড ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়ায় এই ম্যাচেও তিনি না–ও খেলতে পারতেন। কিন্তু তীব্র শীতকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে মেসি খেললেন, গোল করলেন এবং মায়ামিকে জেতালেন।
কানসাস সিটির মাঠ চিলড্রেন’স মার্সি পার্কে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে মেসির গোলেই কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের প্রথম রাউন্ডের প্রথম লেগে ১–০ ব্যবধানে জিতেছে মায়ামি। নতুন মৌসুমে এটাই মেসিদের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।
দুই দলের ফিরতি লেগের ম্যাচটি হবে বাংলাদেশ সময় আগামী বুধবার সকালে মায়ামির মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে। প্রতিপক্ষের মাঠে জিতে আসায় শেষ ষোলোর পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে মায়ামি।
ম্যাচ জেতানো দৃষ্টিনন্দন গোলটা মেসি করেছেন প্রায় মাঝমাঠ থেকে সের্হিও বুসকেতসের উঁচু করে বাড়ানো পাস থেকে। কানসাস সিটির বক্সে ঢুকে বুক দিয়ে বল রিসিভ করেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। এরপর বাঁ পা থেকে ডান পায়ে নিয়ে স্পোর্টিং কেসির মিডফিল্ডার এরিক টমিকে ফাঁকি দিয়ে গোলকিপার জন পুলসক্যাম্পকে বোকা বানান।
২০২৫ সালে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে এটিই মেসির প্রথম গোল। এ নিয়ে টানা ২১ মৌসুম গোল পেলেন তিনি। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তাঁর গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ৮৫১।
কনকনে ঠান্ডা থেকে কিছুটা রেহাই পেতে মেসিসহ দুই দলের প্রায় সব খেলোয়াড় গ্লাভস, গলায় ওয়ার্মার ও লম্বা আকারের মোজা পরে খেলতে নেমেছিলেন। স্পোর্টিং কেসির খেলোয়াড়েরা এমন আবাহাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়লেও দক্ষিণ ফ্লোরিডার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় অভ্যস্ত মেসি ও তাঁর সতীর্থদের এই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছে।
এমন প্রতিকূল পরিবেশেও ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন মেসি। স্পোর্টিং কেসির কোচ পিটার ভারমেসও এক বাক্যে স্বীকার করেছেন, মেসির কারণেই তাঁর দলকে হারতে হয়েছে, ‘একজন ব্যক্তিই ছিল, যে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারত এবং সে সেটাই করেছে।’
ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাচেরানো মেসির গোল নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এক শব্দে, ‘চমৎকার!’ এরপর বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি সত্যিই গর্বিত। কারণ, আমার মনে হয়, এই পরিবেশে খেলা অসম্ভব ছিল। আপনারা জানেন, সে (মেসি) মানুষ নয়। যারা তাকে চেনে, তারা জানে, এটা স্বাভাবিক। কারণ, এ রকম গোল সে হাজারবার করেছে। তবে আমরা তাকে এখানে পেয়ে খুবই ভাগ্যবান।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।