সীমান্ত সহযোগিতার নতুন অঙ্গীকার বিজিবি–বিএসএফের
Published: 20th, February 2025 GMT
সীমান্ত হত্যা ও সীমান্তে বেড়া দেওয়া নিয়ে যখনই কোনো প্রশ্ন উঠবে, তখনই বিজিবি ও বিএসএফ যৌথ আলোচনার ভিত্তিতে দ্রুত তার মীমাংসা করবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। নয়াদিল্লিতে দুই বাহিনীর তিন দিনের এই বৈঠকে সীমান্ত হত্যা ও বেড়া দেওয়ার বিষয় দুটিই প্রাধান্য পেয়েছে।
বৈঠকের শেষ দিনে আজ বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, সীমান্তে বেড়া দেওয়ার বিষয়টি বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে। সীমান্তের দেড় শ মিটার ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ হিসেবে স্বীকৃত। সেটা মেনে নিতে হবে। ওই এলাকায় স্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করা যায় না। ১৫০ মিটারের বাইরে কোনো স্থাপনায় আপত্তি নেই। তিনি বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যৌথ উদ্যোগে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত।
বিজিবির মহাপরিচালক আরও বলেন, বেড়া দেওয়া নিয়ে আপত্তি দেখা দিলে বা প্রশ্ন উঠলে দুই বাহিনী যৌথভাবে এলাকা পরিদর্শনের পর সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ১৯৭৫ সালের দুই দেশের সীমান্ত চুক্তি পুনর্বিবেচনা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কারণ, সেই আলোচনা এই বৈঠকের বিচার্য বিষয় ছিল না।
দুই বাহিনীর বৈঠকের পর আজ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যেকোনো ধরনের সীমান্ত সমস্যা মেটাতে দুই বাহিনী সমন্বিতভাবে তৎপর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বিজিবির মহাপরিচালক আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত। মিডিয়ার সৃষ্টি। তিনি বলেন, বিজিবির আওতায় যেসব এলাকা পড়ে, সীমান্তের ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত সেখানে কোথাও দুর্গাপূজার সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যেগুলো ঘটেছে তার চরিত্র ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক। বহু ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা জানিয়েছেন, তাঁরা ভীত, সন্ত্রস্ত। বিজিবি তাঁদের সুরক্ষার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে।
ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ বৈঠকে বিএসএফের মহাপরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরী ও বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী নিজেদের মধ্যে দলিল বিনিময় করেন। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে বিএসএফের সদর দপ্তরে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আশর ফ জ জ ম ন স দ দ ক ব এসএফ র
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।