এমসি কলেজে শিক্ষার্থী পেটানোর ঘটনায় পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল, সমাবেশ
Published: 21st, February 2025 GMT
সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে মিজানুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে পেটানোর প্রতিবাদে সিলেটে পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ হয়েছে। আজ শুক্রবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার এসব কর্মসূচি থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় নগরের কাজলশাহ এলাকা থেকে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এমসি কলেজে মিজানুর রহমানকে পেটানোর ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত এ মিছিল নগরের চৌহাট্টা এলাকায় এসে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শেষ হয়। কর্মসূচিতে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবের আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক হোসেন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল–পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রদল নেতা দেলোয়ার বলেন, ‘এমসি কলেজে এক মেধাবী ছাত্রের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। মব জাস্টিট হয়েছে। এই কালচার থেকে সরে আসুন। ছাত্রলীগ অতীতে কুকর্ম করেছে, এখন কোনো ছাত্রসংগঠন যেন ক্যাম্পাসকে আর কলুষিত না করে। গুপ্ত রাজনীতিকে মানুষ পছন্দ করে না। ছাত্রদল এসব প্রতিহত করবে। অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সব সময় ছাত্রদল বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। এমসি কলেজের শিক্ষার্থী পেটানোর ঘটনায় যে বা যারা সম্পৃক্ত, সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
গতকাল বিকেলে মিজানুরের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে নগরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট মহানগর শাখা। কর্মসূচিতে সংগঠনের সিলেট মহানগরের সভাপতি হুসাইন আহমদ, পূর্ব জেলা সভাপতি মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান, পশ্চিম জেলা সভাপতি শেখ রেদওয়ান হোসেন, সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বেলাল আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আজ শুক্রবার বাদ জুমা নগরের আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে ছাত্রশিবির একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। এটি নগরের চৌহাট্টা এলাকায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এমসি কলেজে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ছাত্রশিবিরের ওপর অন্যায়ভাবে দায় চাপানো, কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা এবং তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছাত্রের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ছাত্রশিবিরের মিছিলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও সিলেট মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শাহীন আহমদ। এ সময় সিলেট মহানগরের সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে মহানগর ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল–পরবর্তী সমাবেশে শাহীন আহমদ বলেন, ‘এমসি কলেজের দুই পক্ষের হতাহতের ঘটনার দায় শুরু থেকেই ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। ছাত্রদল নতুন বাংলাদেশে আবারও ট্যাগিংয়ের রাজনীতি সক্রিয় করে নির্যাতন ও সন্ত্রাস কায়েম করতে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশে আর ত্রাসের রাজত্ব চলবে না উল্লেখ করে শাহীন আহমদ আরও বলেন, ট্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন-নিপীড়ন চলবে না। আধিপত্যের নামে নব্য ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, বুধবার রাত ১২টার দিকে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থী মো.
তবে কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাঈল খান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নন। ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে তৃতীয় একটি পক্ষ কলকাঠি নাড়াচ্ছে। মূলত কলেজ ছাত্রাবাসে মিজানুর রহমান নামের ওই শিক্ষার্থী ও একই কলেজের জাকিরুল ইসলাম নামের অন্য একজন শিক্ষার্থী নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছেন। এতে দুজনই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন উপস থ ত ছ ল ন কল জ ছ ত র র র ওপর ছ ত রদল ন আহমদ কল জ র র ঘটন নগর র ইসল ম স গঠন ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’