পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থা ‘সংকটজনক’
Published: 23rd, February 2025 GMT
ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থা এখন ‘সংকটজনক’ বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান। হাঁপানি, নিউমোনিয়াসহ আরো বেশকিছু শারীরিক জাটিলতা নিয়ে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তিনি রোমের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে ভ্যাটিকান জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিসের অবস্থা এখন সংকটজনক। তিনি বিপদমুক্ত নন। প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় পোপকে রক্ত দিতে হয়েছে।
এত অসুস্থতার মধ্যেও ৮৮ বছর বয়সী এই ধর্মগুরু সজাগ রয়েছেন। এমনকি তিনি চেয়ারেও বসতে পারছেন বলে জানানো হয়। কিন্তু নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য তাকে ‘উচ্চমাত্রায়’ অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
ভূমধ্যসাগরে স্বপ্নের সমাধি গোপালগঞ্জের ৩ যুবকের
ভূমধ্যসাগরে মৃত্যু
রাজৈরে নিহত ১০ জনের পরিবারে চলছে মাতম
বিবিসি জানিয়েছে, রোমের জেমেলি হাসপাতালে পোপ ফ্রান্সিসের উভয় ফুসফুসে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা চলছে।
পোপ ফ্রান্সিস তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোলামেলাভাবে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেছেন, তাই ভ্যাটিকান প্রতিদিনের বিবৃতি প্রকাশ করা শুরু করেছে। তবে বিবৃতিগুলোর সুর এবং দৈর্ঘ্য ভিন্ন হয়ে থাকে, যার ফলে পোপ-পর্যবেক্ষকদের মাঝে মাঝেই কিছু বোঝার চেষ্টা করতে হয়।
কিন্তু পোপ পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে স্পষ্ট বিবৃতি এবং এটি অস্বাভাবিকভাবে বিস্তারিত। তবে কোনো পূর্বাভাস দিতে রাজি হয়নি ভ্যাটিকান।
বেশ কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্ট অনুভব করার পর পোপকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় প্লুরিসি (ফুসফুসের চারপাশে প্রদাহ) হওয়ার কারণে এবং ২১ বছর বয়সে তার ফুসফুসের একটি অংশ অপসারণের কারণে তিনি বিশেষ করে ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন।
পোপ ফ্রান্সিস ২০১৩ সালে রোমান ক্যাথলিক চার্চের ২৬৬তম পোপ হন। তিনি পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের উত্তরসূরি নির্বাচিত হন। গত এক হাজার বছরে পোপ ফ্রান্সিসই প্রথম ব্যক্তি যিনি ইউরোপীয় না-হওয়া সত্ত্বেও ক্যাথলিক ধর্মের সর্বোচ্চ পদে পৌঁছেছেন।
আর্জেন্টাইন এই ব্যক্তিকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ব্রঙ্কাইটিসের কারণে তিনি তিন রাত হাসপাতালে কাটিয়েছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ খবরটি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিকদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
ক্যাথলিক চার্চের জন্য চলতি বছরটি একটি ব্যস্ত জুবিলি বছর, যেখানে রোমে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে এবং পোপের জন্য অনুষ্ঠানের একটি বড় সময়সূচি রয়েছে। তিনি নিষ্ক্রিয় থাকা উপভোগ করার জন্য পরিচিত নন। হাসপাতালে থাকা সত্ত্বেও, তার চিকিৎসকরা বলেছেন যে, তিনি এই সপ্তাহে চ্যাপেলে প্রার্থনা করতে গিয়েছিলেন এবং তার চেয়ারে বসে পাঠ করছিলেন।
তবে পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থার অবনতির সর্বশেষ তথ্য জানানোর আগেই ভ্যাটিকান বলেছিল, তিনি রবিবার তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে প্রার্থনা পরিচালনা করতে জনসমক্ষে উপস্থিত হবেন না। যার মানে, তিনি টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের জন্য এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না।
শুভাকাঙ্ক্ষীরা রোমের জেমেলি হাসপাতালের বাইরে পোপের জন্য মোমবাতি, ফুল এবং চিঠি রেখে যাচ্ছেন। ইতালীয় এক ব্যক্তি বিবিসিকে বলেছেন, “আমরা রোমে পোপের খুব কাছাকাছি অনুভব করি। আমরা সর্বশেষটি খবরটি দেখেছি এবং আমরা চিন্তিত।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প প ফ র ন স স র শ র র ক অবস থ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
খামেনিকে হত্যায় সংঘাত বাড়বে না, বরং অবসান ঘটাবে: নেতানিয়াহু
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার আশঙ্কার বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানি শীর্ষ নেতার হত্যায় ‘সংঘাত বাড়বে না, বরং অবসান ঘটাবে’।
তিনি বলেন, ‘ইরানি নেতার হত্যার সম্ভাব্য পরিকল্পনা ইরান ও ইসরায়েল মধ্যকার চলমান সংঘাতকে ‘আরও বাড়িয়ে তুলবে না, বরং সংঘাতের অবসান ঘটাবে’।
এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়, খামেনিকে হত্যার লক্ষ্যবস্তু করার চিন্তা আছে কিনা। প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরান দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। ইরান ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধ’ চায় এবং ইসরায়েলে পরমাণু যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েল এই আগ্রাসন ঠেকাচ্ছে। এটা ঠেকাতে হলে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই হবে। আমরা যা প্রয়োজন, তাই করছি।
ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েল বিজয় অর্জন করতে যাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার ইসরায়েলি বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিজয় অর্জনের পথে। এর আগে, তেহরানের আকাশ ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন’ করার দাবি করেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী কর্মকর্তারা। সেইসঙ্গে, ইরানের মিসাইল লঞ্চার বা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ যন্ত্রের ‘এক-তৃতীয়াংশ ধ্বংস'’করে দেওয়ারও দাবি করেন তারা।
সেই দাবিই পুনর্ব্যক্ত করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের দু'টি লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। পারমাণবিক হুমকি নির্মূল এবং ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি নির্মূল করা।
ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদেরকে ইরান হামলার লক্ষ্যবস্তুে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেন নেতানিয়াহু। বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনের সময় সেখানে উপস্থিত সেনাদের উদ্দেশে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ধন্যবাদ। সৃষ্টিকর্তার সাহায্যে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো এবং সফল হব। বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত আমরা (যুদ্ধ) চালিয়ে যাব।’