‘প্রচণ্ড ঠান্ডা। ইয়ালা বেজক্যাম্পে গিয়ে মনে হচ্ছিল আমি হয়তো আর পারব না। ওই সময় নিশাত আপা (দেশের প্রথম এভারেস্টজয়ী নারী নিশাত মজুমদার) বললেন, আর মাত্র ২০০ মিটার। কিন্তু তখন ২০০ মিটারকে আমার ২০০০ মিটারের মতো মনে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত এগোনো সম্ভব হয়েছিল নিশাত আপার অবিরাম উৎসাহের কারণে।’ কথাগুলো বলছিলেন প্রথমবারের মতো হিমালয় পর্বতমালায় পা রাখা পর্বতারোহী মৌসুমী আক্তার (এপি)। আজ সোমবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক আলাপচারিতায় নিজের পাহাড় অভিযানকে এভাবেই তুলে ধরলেন এই শিক্ষার্থী। স্বপ্ন তৈরি, স্বপ্ন বাস্তবায়নের উদ্যোগ আর স্বপ্ন জয় করতে অনুপ্রেরণা দিলে পাহাড়সম প্রতিবন্ধকতা যে পার হওয়া যায়, তার আক্ষরিক অভিজ্ঞতাই তিনি লাভ করেছেন।

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সুলতানার স্বপ্ন অবারিত: তরুণীর অগ্রযাত্রা’ শিরোনামে দেশের পাঁচ নারী পর্বতারোহীর সঙ্গে এই আলাপচারিতা অনুষ্ঠিত হয়। আলাপচারিতায় অংশ নেন নারীদের পাহাড় অভিযানের দলনেতা পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার, ইয়াছমিন লিসা, মৌসুমী আক্তার এবং অনলাইনে যুক্ত হন তাহুরা সুলতানা রেখা। আরেক পর্বতারোহী অর্পিতা দেবনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কারণে এই আলাপচারিতায় অংশ নিতে পারেননি। এ অভিযানে ট্রেকিং করেছেন মৌসুমি ও অর্পিতা। আর ক্লাইম্বিং করেন নিশাত মজুমদারসহ প্রশিক্ষিত দুই পর্বতারোহী ইয়াছমিন ও তাহুরা।

অভিযাত্রী সংগঠনের আয়োজনে নেপালের হিমালয় পর্বতমালার উদ্দেশে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে নারীদের দলটি। ঢাকায় ফিরে আসে ১৪ জানুয়ারি। লাংটাং অঞ্চলের ইয়ালা, সুরিয়া ও গোসাইকুণ্ড চূড়ায় গিয়েছিল দলটি। ৪ হাজার ৭০৭ মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে দলটি। এ অভিযানে সহায়তা করেছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও মাস্টারকার্ড। এ অভিযানের প্রতিপাদ্য ছিল নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ‘সুলতানা’স ড্রিম’ বা ‘সুলতানার স্বপ্ন’ বইটি।

শত বছরের বেশি আগে লেখা ‘সুলতানা’স ড্রিম’ বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে ধ্রুপদি নারীবাদী কল্পকাহিনির অংশ। নারীমুক্তির আকাঙ্ক্ষায় পূর্ণ এই বইটি রোকেয়ার সময়ের ধর্মীয় ও সামাজিক বাস্তবতায় অসম্ভব সাহসী। বইয়ে এমন একটি দেশের কল্পনা করা হয়, যেখানে নারীরা দেশ পরিচালনা করবে। বিজ্ঞান কল্পগল্পের আদলে লেখা ‘সুলতানা’স ড্রিম’ ১৯০৮ সালে কলকাতার এস কে লাহিড়ী অ্যান্ড সন্স থেকে বই আকারে প্রকাশিত হয়। তবে লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯০৫ সালে, মাদ্রাজের দ্য ইন্ডিয়ান লেডিজ ম্যাগাজিনে। ‘সুলতানা’স ড্রিম’ নিয়ে ২০২৩ সালে স্পেনের নারী পরিচালক মিগেল হার্নান্দেজ পূর্ণদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র তৈরি করেন। গত বছরের ১২ মে বইটিকে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ‘বিশ্বস্মৃতি’ বা ‘ওয়ার্ল্ড মেমোরি’র তালিকায় স্থান দিয়েছে।

আলাপচারিতায় অংশ নিয়ে দেশের প্রথম এভারেস্টজয়ী নারী নিশাত মজুমদার বলেন, পাহাড় ডাকে। যাঁরা পাহাড়ে যান, তাঁরাই শুধু সেই ডাক অনুভব করতে পারেন। কেউ যখন তাঁর সামর্থ্যের সবটুকু শেষ করে নিঃস্ব হন, তখন তিনি প্রকৃতির কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সেখান থেকে শুরু হয় তাঁর আরেকটা নতুন যাত্রা। বিশালাকৃতির পাহাড়ের কাছে গেলে এই অনুভূতিগুলো উপলব্ধি হয়। খুব কম পর্বতারোহী শীতকালে পর্বতারোহণে যান। এই সময়টা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। শীতকালীন অভিযানের অভিজ্ঞতা নিতে এবার ৫ জন নারী যাত্রা করেন। দেশ থেকে প্রচণ্ড শীতে নারীদের দলের হিমালয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। এ অভিযান প্রমাণ করেছে, নারীরা চাইলে সবই করতে পারেন। তিনি বলেন, অভিযাত্রী সংগঠন এ ধরনের রোমাঞ্চকর কার্যকলাপের মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়নে কাজ করে।

পাহাড় অভিযানের মধ্যেই ২ জানুয়ারি জন্মদিন ছিল পর্বতারোহী ইয়াছমিন লিসার। একটি চকলেট দিয়ে সহযাত্রীরা তাঁর জন্মদিন পালন করেন। ইয়াছমিন বলেন, পাহাড় হচ্ছে একটি জীবনদর্শন। পাহাড় শেখায় কীভাবে কম জিনিস দিয়ে জীবনে চলা যায়। পকেটভর্তি ডলার নিয়ে উঠেও পাহাড়ের চূড়ায় উঠে কিছু কেনার সুযোগ নেই। অনেক কিছু বহন করে পাহাড়ে আরোহণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘শীতকাল হওয়ায় মাইনাস ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। ইয়ালা পাহাড়চূড়ায় ওঠার সময় মনে হচ্ছিল হয়তো ওঠা যাবে না। এত বরফ!’ তিনি জানান, প্রান্তিক নারীদের জীবনসংগ্রাম থেকে তিনি পাহাড় জয়ের শক্তি পান।

অনলাইনে যুক্ত হয়ে পর্বতারোহী তাহুরা সুলতানা রেখা বলেন, মায়ের পরই তাঁর জীবনে পাহাড়ের স্থান। প্রতিবার পাহাড় থেকে ফিরে আসার পর তাঁর মনে হয় এর চেয়ে সুখের কিছু আর হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকেই একেকজন সুলতানা। আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেককে স্বপ্ন দেখাই, পাহাড় থেকে ফিরে প্রতিবারই নিজেকে নতুনরূপে আবিষ্কার করি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, প্রত্যেক নারী প্রতিদিন পাহাড়সম প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেন। মানসিক দিক দিয়ে এর ব্যাপ্তি অনেক। তাই পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার জন্য কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, কতখানি মূল্য দিতে হয়, তা নারীরা জানেন। পাহাড়ে অভিযান করে আসা এই নারীরা বিজয়ের প্রতীক। তাঁদের পথ ধরে এগোতে হবে। এগিয়ে চলার আকাঙ্ক্ষায় নারীর যে স্বপ্ন, তা যেন পুরুষের চোখেও থাকে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানবিক ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাংলার নারীসমাজকে পিতৃতন্ত্রের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করার আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করেছেন। তাঁর এই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে ‘সুলতানার স্বপ্ন’ বইটিতে। রোকেয়ার স্বপ্ন চোখে নিয়ে এই পাঁচ নারী দুর্গম স্বপ্নযাত্রা সফল করে ফিরেছেন। এই পর্বতারোহী নারীদের স্বপ্নযাত্রা দেশের ভবিষ্যৎ তরুণীদের অনুপ্রাণিত করবে। তাঁরা নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে যে কষ্ট করেছেন, তা অনেক নারীর হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সংগঠন সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম এবং জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি কর্মকর্তা ফজিলা খাতুন লতা। অনুষ্ঠানে পাঁচ পর্বতারোহীর পাহাড় অভিযান নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন কর ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ