পাকিস্তানকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করতে চায় বাংলাদেশ
Published: 25th, February 2025 GMT
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেটের পরাজয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে এই ফলাফলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে পাকিস্তানেরও। আগামী বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়মরক্ষার ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।
প্রথম দুই ম্যাচেই হেরে সেমিফাইনালের আশা শেষ হয়ে গেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের। তবে শেষ ম্যাচে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করাই এখন বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য। দলের অধিনায়ক শান্ত জানিয়েছেন, দেশের সমর্থকদের জন্য অন্তত একটি জয় উপহার দিতে চান তারা।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে শান্ত বলেন, ‘আমরা ম্যাচটি জিততে চাই। আমাদের লক্ষ্য থাকবে শতভাগ দিয়ে জয় পাওয়া। দেশের হয়ে খেলা সব সময়ই গর্বের, তাই আশা করি, ছেলেরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনবে।’
আইসিসির টুর্নামেন্টে বরাবরই ব্যর্থতার গল্প লেখা হয়েছে বাংলাদেশের নামে। এখন পর্যন্ত ২২টি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও একবারও শিরোপা ছুঁতে পারেনি টাইগাররা। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে পৌঁছানোই বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। বরং বিশ্বমঞ্চে সব ম্যাচ হেরে বিদায় নেওয়ার নজিরও রয়েছে টাইগারদের। এবারও ব্যর্থতার একই চিত্র।
বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান সমস্যা ব্যাটিং। কখনো কখনো বোলারদের নৈপুণ্যে কিংবা কোনো ব্যাটারের অসাধারণ ইনিংসে জয় এলেও, টুর্নামেন্ট জয়ের মতো ধারাবাহিক পারফরম্যান্স কখনোই আসেনি। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ব্যাটিং ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলীর ব্যাটে ২২৮ রান তুললেও, তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিংবান্ধব উইকেটেও ২৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ, যা কিউইদের সহজেই টপকে যেতে কোনো সমস্যা হয়নি।
শান্ত মনে করেন, দলের উন্নতির জন্য ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়ে আরও মনোযোগ দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলিং ইউনিট বেশ শক্তিশালী, কিছু ভালো পেসার আছে, এমনকি একজন রিস্ট স্পিনারও পেয়েছি। তবে ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়ে আমাদের অনেক উন্নতি করতে হবে।’
ব্যাটিং নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করলেও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। শান্ত বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শেষে ব্যাটিং ইউনিটে কিছু পরিবর্তন আনা হবে। ব্যাটিং নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে এবং উন্নতির চেষ্টা করতে হবে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম
চট্টগ্রাম টেস্টে আজ প্রথম দিনে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেনতাইজুল ইসলাম। টেস্টে এ নিয়ে ১৬তমবার ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম দিনের খেলা শেষে তাইজুলের প্রশংসা করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন তামিম ইকবাল।
আরও পড়ুনতাইজুলের মনে হয় না তারা খেলা বোঝে১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের পেজে তাইজুলের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত (আন্ডাররেটেড) বোলার। এখন খেলা অন্য বোলারদের পরিসংখ্যান দেখুন, তাহলে আমার কথাটা বুঝতে পারবেন। আরেকবার ৫ উইকেট নিয়ে দারুণ খেলেছ তাইজুল।’
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে টেস্ট ও ডিসেম্বরে ওয়ানডে অভিষেক তাইজুলের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ২০১৯ সালে। ওয়ানডে (২০) ও টি-টোয়েন্টির (২) চেয়ে টেস্ট ম্যাচই (৫২) বেশি খেলেন তাইজুল। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি টেস্টে প্রথম দিনের পারফরম্যান্সসহ মোট ৫৩ টেস্টে এ পর্যন্ত ২২৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। তাঁর টেস্ট সংস্করণের পারফরম্যান্সটা যাচাই করে দেখা যায়।
এখনো যাঁরা খেলছেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নাথান লায়নের। অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনারের টেস্ট অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেকের সময় থেকে লায়নের পারফরম্যান্স— ১০৩ টেস্টে ২৯.৪৮ গড়ে ৪৪১ উইকেট। মোট ২৪ বার ৫ উইকেট নিলেও তাইজুলের অভিষেকের পর থেকে ১৯ বার ৫ উইকেট নেন লায়ন। তবে অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলায় লায়ন এ সময়ে তাইজুলের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বোলিং গড় এবং স্ট্রাইকরেটে লায়ন ও তাইজুলের মাঝে ব্যবধান বেশি না। তাইজুলের বোলিং গড় ৩১.৫৬, স্ট্রাইক রেট ৬১.৯, যেখানে লায়নের স্ট্রাইকরেট ৬১.৬ ও গড় ৩০.১৯।
আরও পড়ুনতাইজুলের ভেলকি, শেষ সেশনে গেল ৭ উইকেট২ ঘণ্টা আগেভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন গত বছর ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়েন। টেস্টে তার অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেক থেকে এই সংস্করণে ৮৫ ম্যাচে ২২.৮৪ গড়ে ৪৩০ উইকেট নেন অশ্বিন। এ সময়ে ২৮ বার পেয়েছেন ৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার মতো ভারতও বেশি বেশি টেস্ট খেলায় স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে তাইজুলের তুলনায় বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন অশ্বিন।
ভারতের আরেক স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। তাইজুলের অভিষেকের দুই বছর আগে টেস্টে অভিষেক জাদেজার। তাইজুলের অভিষেকের সময় থেকে এ পর্যন্ত ৬৮ টেস্টে ২৭৮ উইকেট নিয়েছেন জাদেজা। তবে তাঁর চেয়ে এ সময়ে বেশি সংখ্যকবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। জাদেজা এ সময়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৩ বার, তাইজুল নিয়েছেন ১৬ বার।
তাইজুল ৫ উইকেট নেওয়ার পর তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অধিনায়ক নাজমুল