মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। ১৯৭৫ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা বাদ দিয়ে বন্ধু পল অ্যালেনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন মাইক্রোসফট। পরে মাইক্রোসফট বিশ্বের অন্যতম সফল প্রতিষ্ঠান এবং নিজে বিশ্বের সেরা ধনীদের তালিকায় জায়গা করে নিলেও নিজের একটি সিদ্ধান্তের জন্য এখনো অনুতপ্ত বিল গেটস। নিজের লেখা সোর্স কোড বইয়ে অনুতপ্তের কারণও তুলে ধরেছেন তিনি।

এ মাসের শুরুতে বিল গেটসের লেখা সোর্স কোড বই প্রকাশিত হয়েছে। বইটিতে নিজের শৈশবে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা তুলে ধরার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিও তুলে ধরেছেন বিল গেটস। বইটির তথ্য মতে, ১৯৭৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হন বিল গেটস। ১৯৭৪ সালে বড়দিনের ছুটিতে বন্ধু পল অ্যালেনকে সঙ্গে নিয়ে আলটেয়ারে বেসিক নামের একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ তৈরি করেন তিনি। এই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের সফলতার কারণে পড়াশোনা শেষ না করেই ১৯৭৫ সালে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন তাঁরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও কাজের ভারসাম্য বজায় রাখতে বেশ সমস্যার মুখে পড়েন বিল গেটস। আর তাই মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এরপর মাইক্রোসফটে বেশি মনোযোগ দেওয়ার জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা বাদ দেন বিল গেটস।

আরও পড়ুনবিল গেটসের শৈশব কেমন ছিল২২ ডিসেম্বর ২০২৪

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন নিয়ে এখনো নস্টালজিয়ায় ভোগেন বিল গেটস। শুধু তাই নয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনুতপ্তও তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সত্যি হার্ভার্ড উপভোগ করেছি। আমি সেখানে ক্লাস উপভোগ করেছি। মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি ও ইতিহাসের মতো বিষয়ে আমি ক্লাসে বসে থাকতাম। আমি ক্লাসে স্মার্ট মানুষ দিয়ে ঘিরে থাকতে পছন্দ করতম। আমরা নানা বিষয়ে আলোচনা করার জন্য অনেক দেরি করতাম।’

আরও পড়ুনবিল গেটসের জীবনের মজার কিছু কাহিনি১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিল গেটসের শিক্ষক ছিলেন অধ্যাপক হ্যারি লুইস। বিল গেটসের বিষয়ে তিনি জানান, ‘সে যখন পড়াশোনা বাদ দেয়, তখন আসলে আমি অবাক হইনি। সে সব সময় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতো।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, সিএনবিসি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব ল গ টস ব ল গ টস র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসুর নির্বাচনে নতুন চার সম্পাদকীয় পদ যুক্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ১০ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ডাকসুর সংশোধিত বিধিমালায় নতুন করে চারটি পদ যুক্ত করা হয়েছে। ডাকসুর উদ্দেশ্যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণের পাশাপাশি চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

বিধিমালার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অংশ হিসেবে এবার যে চারটি নতুন সম্পাদকীয় পদ যুক্ত করা হয়েছে সেগুলো হলো, ছাত্র সংসদে–গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক। এ সম্পাদকরা শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মশালা, সেমিনার, সম্মেলন, গবেষণা জার্নাল, চাকরি মেলা, স্বাস্থ্যসচেতনতা কার্যক্রম এবং মানবাধিকারবিষয়ক উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, প্রত্যেক আবাসিক হল বা ক্যাম্পাসের উপযুক্ত স্থানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সংশ্লিষ্ট হলে সংযুক্ত শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত বুথে ভোট দিতে পারবেন। ফলাফল ঘোষণার পর কেউ আপত্তি জানাতে চাইলে তিন কর্মদিবসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে তা দাখিল করতে হবে। তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কমিশন গঠন এবং সংশোধিত বিধিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়। উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন পরিচালনায় প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সহায়তার জন্য আরও ৯ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা রাখা হয়েছে। 

তারা হলেন– মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম মহিউদ্দিন; সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী; তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তাক গাউসুল হক; উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম; স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা; ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম (শহীদুল জাহীদ); বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তারিক মনজুর; গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর। 

প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক জসীম উদ্দিন সমকালকে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার পর বাকিদের নিয়ে সভা করে উপাচার্যের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্বাচনের তারিখসহ যাবতীয় বিষয় এগিয়ে নেব। নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে– ক. ছাত্র সংসদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতা আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালন করা। খ. বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ বাংলাদেশের ইতিহাসে সংঘটিত সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা। গ. পাঠ্য ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ উৎকর্ষ অর্জনে সহযোগিতা করা। 

নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী, যারা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে বর্তমানে স্নাতক, মাস্টার্স বা এমফিল পর্যায়ে অধ্যয়নরত এবং কোনো আবাসিক হলে অবস্থানরত বা সংযুক্ত, তারাই ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন। সান্ধ্যকালীন, পেশাদার, এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট ও ভাষা কোর্সের শিক্ষার্থীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও সংযুক্ত কলেজ/ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ