প্রস্তুতি-পরিকল্পনার ঘাটতি ছিল, স্বীকার কোচ সালাউদ্দিনের
Published: 26th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যাত্রা শুরুর আগে হেড কোচ ফিল সিমন্স এবং জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল শান্ত দুই রকম কথা বলেছিলেন। কোচের মতে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অনুশীলনে কিছুটা ঘাটতি থেকে গেছে। তবে শান্ত জানান, বিপিএল দিয়েই তাদের ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। ব্যাটাররা রানের মধ্যে ছিলেন। প্রস্তুতিতে ঘাটতি নেই।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যাত্রায় ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ হাতে থাকতেই আসর থেকে বিদায় লেখা হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ওই ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, প্রস্তুতিতে তাদের কিছু ঘাটতি ছিল। প্রস্তুতি ঘাটতির পেছনে পরিকল্পনার দায় দেখেন তিনি।
সালাউদ্দিন বলেন, আমাদের প্রস্তুতিতে কিছু ঘাটতি ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ড পাকিস্তানে এসে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছে। এগুলো তো হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়নি। এক বছর আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হয়েছে। আমরা বিপিএলটা ১৫ দিন আগে শেষ করতে পারলে ভালো হতো। আমি মনে করি, চেষ্টা থাকলে সেটা সম্ভব ছিল।
শান্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা বলে দেশ ছেড়েছিলেন। কিন্তু গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিয়েছে দল। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন কোচ সালাউদ্দিন- ‘কী বলা উচিত হতো? আমরা শুধু অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি?’ এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিনি জানান, দলের অধিনায়ক শান্ত। তার জন্য বড় স্বপ্ন নিয়ে টুর্নামেন্ট খেলতে আসাই স্বাভাবিক।
এছাড়া সিনিয়র সহকারী কোচ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা জয়ের কথা চিন্তা করেই খেলবেন তারা। এই ম্যাচ থেকে টুর্নামেন্টে পাওয়ার কিছু নেই। তবে দলের অনেক কিছু পাওয়ার আছে। তার মতে, প্রতিটি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ এবং শেখার সুযোগ। তিনি মনে করেন, এমন ম্যাচ থেকে এমন কিছু হতে পারে যা একটা ক্রিকেটারের পৃথিবী বদলে দিতে পারে।
বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে পাকিস্তানও আসর থেকে বিদায় নিয়েছে। ওই ম্যাচে অবশ্য বৃষ্টির শঙ্কা আছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, পরিত্যক্ত হয়ে যেতে পারে ম্যাচটি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।