জ্বালানি খাতে রাষ্ট্রীয় মদদে ডাকাতি হয়েছে: প্রেস সচিব
Published: 27th, February 2025 GMT
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জ্বালানি খাতকে চুরির কারখানা বানিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ক্যাপাসিটি চার্জের মাধ্যমে ডাকাতির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মদদে জ্বালানি খাতে ডাকাতি হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত ডিজেএফবি টকে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব।
সংগঠনের সভাপতি হামিদ-উজ-জামানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মুহিবের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন সংগঠনের সহসভাপতি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য কর্ণফুলী টানেল করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। সেখানে তেমন কিছু নেই। নিজের এলাকায় যাওয়ার জন্য তিনি কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প নিয়েছেন। টানেল এলাকায় ৪৫০ কোটি টাকার হোটেল করেছেন, যা অপচয়। তিনি ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন ধরে নিয়েই এসব করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ধসে পড়ার (কলাপসড) সম্মুখীন এমন একটি অর্থনীতি পেয়েছে। যে কোনো সময় ধসে পড়ার ঝুঁকি ছিল। এমন অর্থনীতিকে মাত্র ছয় মাসের মাথায় পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। টানা পাঁচ মাস রপ্তানি বাড়ছে। গত ছয় মাসে অর্থনীতির অনেক উন্নতি হয়েছে, যা অকল্পনীয়।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার অপ্রয়োজনীয় অনেক প্রকল্প করেছে। অনেক রেলপথ বানিয়েছে, যেখানে দিনে একটি ট্রেন চলে। প্রকল্প খরচ ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে পছন্দের লোককে সুবিধা দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার হয়েছে। কানাডায় বেগমপাড়া হয়েছে। লন্ডনে ব্লকের পর ব্লক কেনা হয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকার এখন অর্থনীতির ‘যক্ষ্মা’ ঠিক করছে। পরে স্বাস্থ্য ঠিক করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, গত দুই মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমেছে। জুন মাসের মধ্যে সাত শতাংশে নেমে আসবে। এখন প্রয়োজন জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা। আমানতকারী কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না– এ বার্তা বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর বারবার দিচ্ছেন। আগের সরকার এখন পর্যন্ত থাকলে এখন কেউ এক টাকাও ব্যাংকে রাখত না।
বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, ভারত যৌথ বিদ্যুৎ গ্রিড লাইন পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে, তাতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। বাণিজ্য যুদ্ধে বাংলাদেশ বড় সুবিধাভোগী হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, থানায় অভিযোগ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় কয়েক বখাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়ভাবে বখাটে হিসেবে পরিচিত আল-আমিন নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, যে শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা, তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যান। মেয়েটি নানা আজগর আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিশুটিকে প্রায় উত্ত্যক্ত এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করত আল-আমিন। এ নিয়ে আজগর আলীসহ মেয়েটির স্বজন বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যায়। তারা বৃদ্ধ আজগর আলীকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাটিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আজগর আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত বখাটে আল-আমিন।
সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, নিহতের বড় ছেলে আইয়ুব খান বুধবার আল-আমিনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।