ইট, কাঠ কিংবা টিনের বাড়ি নয়। এই বাড়িটি একেবারে অভিনব। দেখতে সাধারণ হলেও বাড়িটি একেবারে সাধারণ নয়। পরিবেশবান্ধব বাড়ি বানানোর উপায় খুঁজতে গিয়ে এই অভিনব উপায় আবিষ্কার হয়েছে কিরগিস্তানে।
ছবির বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে ধানের তুষ দিয়ে তৈরি ব্লক দিয়ে। মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তানে আকমাতবেক উরাইমভ- এই বাড়িটি তৈরি করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ঝুঁকিতে থাকা দেশটি পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কিরগিজস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের কায়জাল-কিয়া গ্রামে আকমাতবেকের বাড়ি। তিনি এএফপিকে বলেন‘‘মানুষ আগে এটা সম্পর্কে জানত না। এখন তারা চোখের সামনে এই বাড়ি দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। নিজেরা আলাপ করছেন। অনেকে ফোন করে বিস্তারিত জানতে চাইছেন।’’
আরো পড়ুন:
পাবনায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
হবিগঞ্জে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষে নিহত ১
এটিই কিরগিস্তানের প্রথম বাড়ি নয়, যেটি তুষ দিয়ে বানানো হয়েছে। সে দেশে ধানের তুষ দিয়ে বাড়ি তৈরির ব্লক বানানোর কাজে অগ্রপথিকদের একজন নুরসুলতান তাবালদেয়েভ। স্থানীয় বাতকেন এলাকায় নুরসুলতানের বাড়ি। সেখানেই একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে তার। ওই ওয়ার্কশপে পরিবেশবান্ধব তুষের ব্লক বানান শ্রমিকেরা। সাধারণত ধানের তুষ ফেলে দেওয়া হয় বা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেগুলোকেই কাজে লাগাচ্ছেন তাবালদেয়েভ।
এএফপিকে নুরসুলতান জানান, ‘‘একেকটি ব্লকের ৬০ শতাংশ থাকে ধানের তুষ। বাকিটা কাদা, সিমেন্ট আর রাসায়নিক মুক্ত আঠা। সব মিশিয়ে শুকানোর পর এই ব্লক সিমেন্টের মতো ভীষণ শক্ত হয়ে যায়। শ্রমিকেরা কাজ করার সময় মাস্ক ব্যবহার করেন।’’
নুরসুলতান শৈশবে বাবার সঙ্গে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। তখনই প্রচলিত কংক্রিটের বদলে বিকল্প কিছু দিয়ে বাড়ি বানানোর ভাবনা তার মাথায় চেপে বসে। গত ৫ বছরে বিকল্প এই পদ্ধতিতে ৩০০ ঘর বানিয়েছেন নুরসুলতান। প্রথমটি বানিয়েছিলেন কাঠের গুঁড়া দিয়ে। পরে সেটাও বদলে নেন। বর্তমানে ধানের তুষের ব্লক দিয়ে বাড়ি বানানোর কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাড়া ফেলেছে আফগান ট্যাক্সি চালকদের তৈরি করা এয়ার কুলার
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার শহরে তাপমাত্রা নিয়মিতভাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। অতিরিক্ত গরমে দীর্ঘসময় চালানোর কারণে গাড়ির ভেতরে থাকা এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটগুলো প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ পেতে আফগান ট্যাক্সি চালকরা নিজেরাই তৈরি করেছেন এয়ার কুলিং সিস্টেম। গাড়ি শীতলীকরণের এই ব্যবস্থা সাড়া ফেলেছে পুরো আফগানিস্তানে।
আব্দুল বারী নামে একজন চালক এএফপি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “এটি (বিল্ট-ইন) এসির চেয়ে ভালো কাজ করে। এসি কেবল সামনের অংশকে ঠান্ডা করে। এই কুলারটি গাড়িজুড়ে বাতাস ছড়িয়ে দেয়।”
এএফপির একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আব্দুল বারী স্টিকি টেপ ব্যবহার করে কুলারের এক্সহস্ট ভেন্টটি ট্যাক্সির জানালায় সংযুক্ত করছেন। এসময় একজন সহকারী ট্যাক্সির উপরে উঠে ইউনিটের বডি ঠিক করছেন।
এই সেটআপের একমাত্র সমস্যা হল দিনে দুবার ইউনিটে ম্যানুয়ালি পানি রিফিল করার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “এরপরেও এটি আমার জন্য ভালো কাজ করে।”
বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম আফগানিস্তান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। আগামী সপ্তাহগুলোতে দেশের বেশিরভাগ অংশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে সরকার সতর্ক করেছে।
কান্দাহারের আরেক ট্যাক্সি ড্রাইভার গুল মোহাম্মদ জানান, তিনি কয়েক বছর আগে আবহাওয়া ‘অত্যন্ত গরম’ হতে শুরু করায় এই কাস্টমাইজড কুলারগুলোর দিকে ঝুঁকেছিলেন। এই গাড়িগুলোর এসি সিস্টেমগুলি কাজ করেনি এবং মেরামতগুলি খুব ব্যয়বহুল ছিল।
তিনি বলেন, “তাই আমি একজন টেকনিশিয়ানের কাছে গিয়েছিলাম, (এবং) একটি কাস্টম কুলার তৈরি করিয়েছিলাম। এতে তিন হাজার আফগানি (৪৩ মার্কিন ডলার) খরচ হয়েছিল।”
যাত্রীরা অবশ্য এই সৃজনশীল সমাধানের প্রশংসা করেছেন।
১৯ বছর বয়সী নুরুল্লাহ বলেন, “যখন কোনো কুলার থাকে না, তখন পরিস্থিতি খুব কঠিন হয়ে পড়ে।”
ঢাকা/শাহেদ