খালেদের আগুন ঝরানো স্পেলে রংপুরের গ্লোবাল যাত্রা বিজয়ের সুরে
Published: 11th, July 2025 GMT
গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্স তাদের যাত্রা শুরু করল এক রোমাঞ্চকর জয়ে। গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সকে ৮ রানে হারিয়ে উজ্জ্বল সূচনা করল নুরুল হাসান সোহানের দল।
তবে এই জয়ের নায়ক একজনই— খালেদ আহমেদ। আগুন ঝরানো পেস আর দুর্দান্ত লাইন-লেন্থে গায়ানার ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন এই ডানহাতি পেসার। তার দুরন্ত স্পেলেই জয় নিশ্চিত করে রংপুর।
সকালে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পর ভালোই শুরু করেছিলেন সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। কিন্তু সেই জুটি বেশিক্ষণ টিকেনি। গুড়াকেশ মোতির ঘূর্ণিতে ফেরেন সাইফ (১৮), এরপর সৌম্যও থামেন ৩৫ রানে।
আরো পড়ুন:
ঢাকায় এসিসি সভা, আসতে রাজি নয় ভারত
শূন্য থেকে শুরু বিপিএলের প্রস্তুতি
এরপর তাণ্ডব চালান ইমরান তাহির। এক বলের ব্যবধানে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও ইয়াসির আলী রাব্বিকে ফিরিয়ে রংপুর শিবিরে নেমে আসে বিপর্যয়। অধিনায়ক সোহানও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
তবে ছয় নম্বরে নেমে দৃঢ়তার প্রাচীর গড়েন কাইল মেয়ার্স ও ইফতিখার আহমেদ। দুজনই পান জীবন, আর সেটাকেই কাজে লাগিয়ে গড়েন ৭৬ রানের অপরাজিত জুটি। তাদের ব্যাটেই রংপুর দাঁড় করায় লড়াই করার মতো সংগ্রহ, ১৬২ রান।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গায়ানা ব্যাটিং শুরু করে ধীর গতিতে, আর সেই ছন্দ ভাঙে দ্রুত। ৮ রানেই ফিরিয়ে দেন গুরবাজকে, উইকেট শিকার করেন ওমরজাই।
জনসন চার্লস (৪০) কিছুটা চেষ্টা করলেও পাশে সঙ্গী পাননি। মঈন আলীও থেমে যান ২৭ রানে, দুর্দান্ত ক্যাচে তাকে ফেরান সোহান।
এরপর রানের চাপ আর রংপুরের বোলিং দাপট মিলিয়ে গায়ানার ইনিংসে নামে ধস। একে একে ফিরে যান রাদারফোর্ড, হেটমায়ার, প্রিটোরিয়াস, স্প্রিঙ্গার, আর শেষে ভিসে।
আর এই ধসের নেতৃত্বে ছিলেন খালেদ আহমেদ। ১৯তম ওভারে টানা দুই বলে দুটি উইকেট— প্রিটোরিয়াস ও স্প্রিঙ্গারকে ফিরিয়ে কার্যত কফিনে পেরেক ঠুকে দেন। শেষ উইকেটটা ছিল ওমরজাইয়ের শিকার, যিনি বোল্ড করে দেন ডেভিড ভিসেকে। গায়ানার ইনিংস থামে ১৫৪ রানে। ৮ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
খালেদ আহমেদ ৪ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের নায়ক। ম্যাচসেরাও হন তিনি।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহম দ উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
মাহাথিরের দীর্ঘ ও সফল জীবনের রহস্য
মানবজীবন দীর্ঘ হতেই পারে। কিন্তু সব দীর্ঘজীবনই মহিমান্বিত হয় না। দীর্ঘ সে জীবন যদি ত্যাগ স্বীকারের হয়, অপরের কল্যাণে হয়, তবে সে জীবন একই সঙ্গে হয় সফল।
দীর্ঘ ও সফল জীবনের এক উদাহরণ ড. মাহাথির মোহাম্মদ। তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি, যিনি প্রথম দফায় (১৯৮১-২০০৩) দীর্ঘ ২২ বছর সফলভাবে দেশটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। মালয়েশিয়াকে করেছেন একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র।
ড. মাহাথির চল্লিশের দশকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সিতি হাসমাহর। পরিচয় থেকে অন্তরঙ্গতা, এরপর বিয়ে। সিতি হাসমাহও ওই মেডিকেলেরই শিক্ষার্থী ছিলেন।
দ্বিতীয় দফায় (২০১৮-২০২০) রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসেন ৯৪ বছর বয়সে। তাঁর কর্মস্পৃহা, উদ্যম রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। এখন ১০০ বছর বয়সেও প্রায় সুস্থ জীবন যাপন করছেন মাহাথির।
২০২৩ সালে ঢাকার বাংলা একাডেমির সবুজ চত্বরে হয়ে যাওয়া লিট ফেস্টে একটি সেশনে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন মাহাথিরকন্যা মেরিনা মাহাথির। তিনি একজন সুপরিচিত মানবাধিকারকর্মী ও লেখক। মাহাথিরকে নিয়ে তাঁর লেখা বই ‘দ্য অ্যাপল অ্যান্ড দ্য ট্রি’ নিয়েই মূলত আলোচনা হচ্ছিল। সেখানে মানবাধিকারসহ অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ছোট্ট করে উঠে এল মাহাথিরের দীর্ঘ জীবনের প্রসঙ্গও।
সেই জায়গা থেকেই এ লেখার অনুপ্রেরণা। আসলেই তো! মাহাথিরের দীর্ঘ ও সফল জীবনের প্রকৃত রহস্যটা কী?
মাহাথিরের রাজনৈতিক জীবন, বিরোধী মত দমন, মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে তাঁর সীমিত অঙ্গীকার—এসব নিয়ে কম আলোচনা, তর্কবিতর্ক হয়নি। এখনো হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর জীবনবোধ, একনিষ্ঠতা, নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাও আলোচনায় এসেছে।
কিন্তু যে মানুষ শত বছর বয়সেও কর্মক্ষম থাকেন, সেই মানুষটি ভিন্ন।
মাহাথিরের জীবনের পাণ্ডুলিপি
মাহাথিরের জীবনের পাণ্ডুলিপিতে চোখ বুলিয়ে আসা যাক। জন্ম মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যের প্রধান শহর আলোর সেতারে। তাঁর দাদা ভারতের কেরালা থেকে সেখানে অভিবাসী হন। বিয়ে করেন এক মালয় নারীকে।
ছোটবেলা থেকেই তুখোড় মেধাবী ছিলেন মাহাথির। বাবা মোহাম্মদ ইস্কান্দার, যিনি ছিলেন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রধান শিক্ষক, শৈশবেই ছেলের মধ্যে শৃঙ্খলা ও একাগ্রতার বীজ বপন করে দিয়েছিলেন। পড়াশোনা করতে গিয়ে তাই খেলাধুলায় মনোযোগ দিতে পারেননি মাহাথির।
ড. মাহাথির চল্লিশের দশকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সিতি হাসমাহর। পরিচয় থেকে অন্তরঙ্গতা, এরপর বিয়ে। সিতি হাসমাহও ওই মেডিকেলেরই শিক্ষার্থী ছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে মেডিকেল কলেজ বন্ধ থাকে। এ সময় মাহাথির কফি, চকলেট বিক্রি করে কিছু উপার্জন করেন।
১০০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কেক কাটছেন মাহাথির মোহাম্মদ