অগ্নিকাণ্ডের কারণে উৎপাদন বন্ধ থাকায় জাহিন স্পিনিং মিলস লিমিটেডের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২৪) আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির লোকসান আরও বেড়েছে এবং অন্যান্য সূচকেও অবনতি হয়েছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি ক্ষতি (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা শূন্য ৮ পয়সা। গত বছরের একই সময় যা ছিল ১১ পয়সা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ারপ্রতি ক্ষতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ১৫ পয়সা; আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ২০ পয়সা। অর্থাৎ প্রথম ছয় মাসে লোকসান বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়ের পরিমাণ হ্রাস এবং উৎপাদন বন্ধ থাকায় পণ্য উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি এই ক্ষতির প্রধান কারণ। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে উৎপাদন স্থগিত থাকায় আয় কমলেও খরচ বেড়ে যায়। এ ছাড়া জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহের (এনওসিএফপিএস) সামান্য উন্নতি হয়েছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, উৎপাদন বন্ধ থাকায় কারখানার ওভারহেড ও অন্যান্য অপারেটিং খরচ কমে যাওয়ায় এই উন্নতি হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব কোম্পানির স্থিতিপত্রেও পড়েছে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) নেমে এসেছে ২ টাকা ৭৮ পয়সায়; ২০২৪ সালের ৩০ জুনে যা ছিল ৩ দশমিক ৯৬ টাকা। সংরক্ষিত আয় কমে যাওয়াকে এই পতনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত এক বছরে জাহিন স্পিনের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৯ টাকা ৮০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ৫ টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটি তেমন একটা লভ্যাংশও দেয় না। ২০২৪ সালে তারা শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে তারা ৫ শতাংশ, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড স ম বর ২০২৪ স

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন

যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।

যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে

২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।

শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’

গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক
  • বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ভারতীয় পাসপোর্টের অবনতি কেন?