ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টানা ভালো পারফরম্যান্স করে যাচ্ছে লিভারপুল। অল রেডরা যেন হারতেই ভুলে গিয়েছে। বিশেষ করে বড় দলগুলোর বিপক্ষে তাদের পারফরম্যান্স বেশ নজর কাড়া। ইপিএলের ম্যাচে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) দিবাগত রাতে আরেক শক্তিশালী ক্লাব নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ২-০ গোলের দারুণ এক জয় পেয়েছে লিভারপুল। ফলে এই মৌসুমের লিগ প্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনাল অপেক্ষা ১৩ পয়েন্ট এগিয়ে গেল আর্নে স্লটের দল। ম্যাচ শেষে লিভারপুলের ডাচ ম্যানেজার স্লট জানালেন দলের মানসিকতায় তিনি দারুণ খুশি।

যদিও এই ম্যাচটা গ্যালারি থেকে দেখতে হয় লিভারপুল বসকে। এভারটন ম্যাচে রেফারির সঙ্গে কথা কাটাকাটি করায় দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন এই ৪৬ বছর বয়সী ম্যানেজার। তবে এর প্রভাব পড়েনি অল রেডদের খেলায়।

ঘরের মাঠে অ্যানফিল্ডে ম্যাচের ১১ মিনিটেই দমিনিক সবোসলাইয়ের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বিরতির পর ম্যাচের ৬৩ মিনিটে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার আরেকটি গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন।

আরো পড়ুন:

হেরে তরুণ ফুটবলার কেনার কথা জানালেন গার্দিওলা

মৌসুমের সবচেয়ে বড় অঘটন: লিভারপুলের বিদায়

গ্যালারিতে বসে খেলা দেখা স্লট ম্যাচের পর গণমাধ্যমকে বলেন, “আমি সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ হয়েছি দলের মানসিক শক্তি দেখে। বিশেষ করে তারা নিউক্যাসল এবং ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচ দুটি যেভাবে খেলেছে। সবাই আমাদের খেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল এভারটন এবং উলভসের ম্যাচের পর।”

বেশি প্রশংসায় ফুটবলারদের গা-ছাড়া ভাব চলে আসে। তবে লিভারপুলের খেলোয়াড়দের মাঝে সেটা নেই বলেই দাবি করেন স্লট, “যদি বেশি প্রশংসা পায় তাহলে  ১০ জনের মধ্যে ৮ জন একটু অলস হয়ে যায়। শুধু যারা কিছু অর্জন করতে চায় তারা তা করেন না। আর সেই মানসিকতা আমরা আজ রাতে দেখেছি।”

অন্যদিকে বুধবার রাতের আরেক ম্যাচে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনাল গোলশূন্য ড্র করেছে নটিংহাম ফরেস্টের বিপক্ষে। ফলে লিভারপুল প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার দিকে আরও এক ধাপ পৌঁছে গেল। তবে স্লট নিশ্চিত যে তার খেলোয়াড়রা কোনো তৃপ্তি বা শিথিলতার লক্ষণ দেখাচ্ছে না।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চূড়ায় থাকা লিভারপুলের সংগ্রহ  ২৮ ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট। অন্যদিকে তিনে থাকা নটিংহ্যাম ফরেস্টের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করা আর্সেনাল ২৭ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

স্বপ্নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জুয়েল, অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভুটান যাত্রা

ভুটান প্রিমিয়ার লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব পারো এফসিতে খেলার সুযোগ পেয়েছেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামের তরুণ ফুটবলার মো. জুয়েল রানা। কিন্তু অর্থাভাবে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে তার স্বপ্নপূরণের যাত্রা।

শৈশব থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল জুয়েলের গভীর ভালোবাসা। স্থানীয় পর্যায়ের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নিজেকে চিনিয়েছেন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও। খেলেছেন ঢাকা সিটি কাপ, মেয়র কাপ, এমনকি বসুন্ধরা অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় ডাক পান ভুটানের পেশাদার ফুটবল লিগের ট্রায়াল ক্যাম্পে, যেখানে ৫০ জনের মধ্যে বাংলাদেশের মাত্র তিনজন নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একজন জুয়েল। বর্তমানে জুয়েল ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যামার স্কুল, রংপুর-এর নবম শ্রেণির বাংলা ভার্সনের শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:

১০ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে সিউলকে বিধ্বস্ত করল বার্সেলোনা

রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে

নভেম্বর মাসের শেষের দিকে হতে যাওয়া লিগে অংশ নিতে হলে এর আগেই পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট ও খেলার কিটসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু এখানেই সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ।

জুয়েলের বাবা একজন দিনমজুর ও ভ্যানচালক। এমন আর্থিক অবস্থায় এত ব্যয়ভার বহন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

জুয়েল রানা বলেন, “আমি ডোমার হাইস্কুল মাঠে খেলা শুরু করি, ডোমার ফুটবল একাডেমির কোচ সুজন ভাইয়ের কাছেই প্রথম হাতে খড়ি। এরপর উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে এবং বসুন্ধরা অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে খেলি। ভুটান থেকে পারো এফসির প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। তাদের নেয়া ট্রায়ালে ৫০ জনের মধ্যে ৫ জন নির্বাচিত হই, পরে মেডিকেল টেস্টের পর আমিসহ ৩ জন সুযোগ পাই। লিগ শুরু হওয়ার এক মাস আগেই যেতে হবে। কিন্তু এখন অর্থের কারণে যাওয়া হবে কি না, সেটা অনিশ্চিত। পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট, কিটস সবকিছুতেই টাকা দরকার। আমি শুধু চাই কেউ পাশে দাঁড়াক। আমি দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই।”

জুয়েলের মা রশিদা বেগম বলেন, “ছেলেটা অনেক কষ্ট করে আজ এই পর্যন্ত এসেছে। এখন যদি শুধু টাকার অভাবে তার স্বপ্ন থেমে যায়, সেটা আমাদের সহ্য হবে না।”

জুয়েলের বাবা জয়নুল ইসলাম বলেন, “আমি দিনমজুর মানুষ, ছেলের স্বপ্নপূরণে কিছুই করতে পারছি না। এই কষ্ট ভাষায় বোঝানো যায় না। সরকার কিংবা কেউ যদি সাহায্য করত, আমার ছেলে বিদেশে গিয়ে খেলতে পারত।”

এলাকাবাসীরাও জুয়েলের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, “জুয়েল অনেক ভালো খেলে, সে আমাদের গর্ব। কিন্তু তার পরিবার অত্যন্ত অসচ্ছল। সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে সে একদিন দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।”

ডোমার ফুটবল একাডেমির কোচ মো. সাদিকুর রহমান সুজন বলেন, “জুয়েল আমাদের একাডেমির অন্যতম প্রতিভাবান খেলোয়াড়। সে তার পরিশ্রমে অনেক দূর এগিয়েছে। সে ভুটানে খেলার সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু এখন শুধু অর্থের অভাবে তার যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে। তার বাবা একজন ভ্যানচালক—এই খরচ বহন তার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি অনুরোধ করব সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা যেন জুয়েলের পাশে দাঁড়ায়।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শায়লা সাঈদ তন্বী বলেন, “আমরা জুয়েলকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। আপনারাও সকলে জুয়েলের পাশে দাঁড়ান, সে যেন দেশের গর্ব হয়ে ওঠে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

একজন উদীয়মান প্রতিভাবান ফুটবলারের স্বপ্ন যেন শুধু আর্থিক সংকটে থেমে না যায়। এই লক্ষ্যেই জুয়েলের পরিবার সমাজের দানশীল, খেলাপ্রেমী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন।

ঢাকা/সিথুন/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিনিয়রদের দ্বন্দ্বে বরিশালে অস্বস্তি
  • সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু
  • স্বপ্নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জুয়েল, অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভুটান যাত্রা
  • রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে