সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা সবকিছুর নিয়ন্ত্রক মহান আল্লাহ। মন সব সময় ভালো রাখা কঠিন। নানা কারণে মন খারাপ হতে পারে। মন খারাপ হলে ভেঙে পড়বেন না। আল্লাহ মানুষকে কষ্টের ওপর নির্ভরশীল করেই সৃষ্টি করেছেন।
মন খারাপ হলে কী করতে হবে, এ সম্পর্কে নবী-রাসুল ও সাহাবাদের জীবনেই রয়েছে মানুষের জন্য সর্বোত্তম শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা। আল কোরআনে আছে, ‘অবশ্যই আমি মানুষকে কষ্ট নির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা বালাদ, আয়াত: ৪)
নবী ও রাসুলদের জীবন আমাদের কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পেতে সহায়তা করে।
হজরত আদম (আ.
হজরত নুহ (আ.) তার পরিবারের সবাইকে হেদায়েতের পথে আনতে পারেনি। সাড়ে ৯০০ বছর দাওয়াত দিয়ে মাত্র ৮০ জনকে হেদায়েতের পথে আনতে পেরেছিলেন। তাই কোনো কারণে পরিবার ও সন্তানকে যথাযথ পথে আনার সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে হতাশ হওয়া যাবে না।
হজরত ইব্রাহিম (আ.)–এর বাবা পৌত্তলিক ছিলেন। তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ হয়।
আরও পড়ুননামাজে রাকাত নিয়ে সন্দেহ হলে১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪হজরত ইউসুফ (আ.)–এর ভাইয়েরা গভীর কূপে ফেলে দিয়েছিলেন। এরপর জীবনের এক পর্যায়ে এসে তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। সেই ভাইদের মুখে নিজের ব্যাপারে মিথ্যা দোষারোপও শুনেছিলেন। রক্তসম্পর্কীয় কেউ কারও সঙ্গে প্রতারণা করলেও নিজের সৎসাহসে অটল থাকতে হবে।
হজরত ইউনুস (আ.) আটকে ছিলেন মাছের পেটে। সেখান থেকে উদ্ধার পাওয়ার উপায় ছিল না। আল্লাহর রহমতে পেয়েছিলেন। চরম বিপদে আল্লাহর ওপর ভরসা ছাড়া যাবে না।
আল্লাহর নবী হজরত আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। আল্লাহ তাকে নিজে সুস্থ করেছিলেন।
মহানবী (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির ষষ্ঠ বছর। মক্কায় তিনি দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। হামজা (রা.) ও ওমর (রা.)-সহ মক্কার প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছেন। বিপরীতে মক্কায় মুশরিকদের ক্রোধ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবিদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি মহানবী (সা.)-কে থামানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অন্যদিকে গোত্র বনী হাশেম ও বনী মুত্তালিবকেও মহানবী (সা.)-এর সাহায্য থেকে বিরত রাখতে পারছিল না মক্কার অবিশ্বাসীরা। ফলে তারা এ দুই গোত্রসহ মুহাম্মদ (সা.)-কে বয়কট করার ফন্দি আঁটে। ইসলামের ইতিহাসে যা শিআবে আবি তালিবের বয়কট নামে পরিচিত। কিন্তু মহানবী (সা.) অবিচল থেকে বিজয় অর্জন করেন।
আরও পড়ুননামাজে অন্য যেকোনো সুরা পড়ার আগে সুরা ফাতিহা পড়তে হয়১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ র জ বন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আফ্রিদি-জয় শাহর ভাইরাল ভিডিওটি এশিয়া কাপের নয়
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাসছে। স্টেডিয়ামে বিশেষ অতিথিদের গ্যালারিতে পাশাপাশি বসে বর্তমান আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এবং পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। বেশ হাসিমুখে কথা বলছেন দুজন। জয় শাহর পাশেই বসে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। মাঝে একটি আসন দূরে বসে বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সংসদ সদস্য অনুরাগ ঠাকুর। তিনিও জয় শাহ ও আফ্রিদির সঙ্গে বেশ হাসিমুখে কথা বলছিলেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ এশিয়া কাপে কয়েকবারের ‘চ্যাম্পিয়ন’, ভেবেছিলেন আফগানিস্তান কোচ১০ ঘণ্টা আগেদুবাইয়ে গত পরশু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই দাবি করেন, এই ভিডিও চলমান এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের। সমালোচনা করে অনেকেই বলেন, ভারতে যেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বয়কটের দাবি উঠেছে, সেখানে তাঁদের মধ্যে এত হৃদ্যতা আসে কোত্থেকে? একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর জনতার ক্ষোভের মধ্যেই এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে জয় শাহ ও অনুরাগ ঠাকুরকে শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। গোটা দেশ যখন ম্যাচটি বয়কটের ডাক দিয়েছে, তখন বিজেপির নেতা অনুরাগ ঠাকুর ও জয় শাহ শহীদ আফ্রিদি ও মহসিন নাকভির সঙ্গে মজা করছেন ও সময়টা উপভোগ করছেন।’
ভিডিওটির সত্যতা পরীক্ষা করে ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও গত পরশু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের নয়। এটি গত ২৩ ফেব্রুয়ারির ভিডিও। তখন দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচের এই ভিডিও নতুন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই এটাকে গত পরশুর ম্যাচের ভেবে ভুল করেছেন। ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গত ২২ এপ্রিল। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার আগে।
আরও পড়ুনকেন পাকিস্তানের এমন হার—ব্যাখ্যা দিলেন আকরাম, আফ্রিদি ও গাভাস্কার১০ ঘণ্টা আগেভিডিওটি আরেকটু ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় মাঠের হোর্ডিংয়ে ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫’ লেখা। পাশাপাশি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক ‘এক্স’ ব্যবহারকারী একই ভিডিও শেয়ার দিয়ে ক্যাপশনে লেখেন, ‘দুবাই স্টেডিয়ামে শহীদ আফ্রিদি ও জয় শাহ একসঙ্গে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ দেখছেন।’ ক্যাপশনের নিচে হ্যাশট্যাগ দিয়ে ভারত–পাকিস্তান ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি লেখা। গত ফেব্রুয়ারি–মার্চে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচিতেও দেখা যাচ্ছে, দুবাইয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। ম্যাচে ৬ উইকেটে জেতে ভারত।
এশিয়া কাপে গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের সহজ জয় পায় ভারত। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচ বয়কটের দাবি তুলেছিলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররাই। দেশটির সাবেক অফ স্পিনার হরভজন সিং ও সাবেক ক্রিকেটার কেদার যাদবরা এই ম্যাচ বয়কটের আহ্বান জানান। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস (ডব্লুসিএল) টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। এর পর থেকে এশিয়া কাপের ম্যাচটি বয়কটের ক্যাম্পেইন আরও বেশি করে শুরু হয় ভারতে। এমনকি ম্যাচটি বাতিলে পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন (পিআইএল) আবেদন করা হয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্টে। যদিও জরুরি ভিত্তিতে তা শুনানির জন্য রাজি হননি আদালত।