বাংলাদেশ কবে ‘আফগানিস্তান’ হতে পারবে
Published: 27th, February 2025 GMT
তুলনাটা না চাইলেও ওঠে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটি দলের বয়স হয়ে গেল ২৮ বছর। এখনো শুধু প্রত্যাশা আর প্রতিশ্রুতি পূরণ হয় সামান্যই। প্রস্তুতি যেমনই হোক, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টুর্নামেন্টে গিয়ে শেষ পর্যন্ত বাঁচামরার ম্যাচে বোলিংয়ে আসতে হয় স্বয়ং অধিনায়ককেই, যিনি আসলে ব্যাটসম্যান।
আরেকটি দলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বয়স হলো ১৬ বছর। শুরুতে তাদের কেউ গোনায় ধরেনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ, যেখানকার ক্রিকেট–সংস্কৃতি আবার প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান থেকে ধার করা। শরণার্থী হিসেবে দেশটির নাগরিকেরা পাকিস্তানে না গেলে ক্রিকেট তারা আদৌ খেলত কি না, কে জানে!
কিন্তু পর্বতসংকুল প্রতিকূল প্রকৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠা মানুষদের বুকের বলটা হয় অদম্য। ভাঙবে তবু মচকাবে না! প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ব্যাট করেও তাই হয়তো সে দেশের একটি ছেলের পায়ে ‘ক্র্যাম্প’ হয় না। প্রতিপক্ষের সামনে ১২ বলে ১৬ রানের সহজ সমীকরণ থাকতেও তাঁদের ম্যাচ ধরার মুঠো এতটুকু ঢিল হয় না, উল্টো চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় সেই ম্যাচ তারা বেরও করে আনে।
জানি, দল দুটির নাম না বললেও চলে। বাংলাদেশের সমর্থক হিসেবে যে দলটির সঙ্গে হামেশাই তুলনা ওঠে, সেই আফগানিস্তান কাল রাতে যা করেছে, তাতে তুলনাটা বোধ হয় এখন আর চলে না। যে গল্পটি আমরা পড়েছিলাম ইশপের—সেই খরগোশ ও কচ্ছপের দৌড়, সেখানে কচ্ছপকে হেলা করে খরগোশ যেমন একটু দৌড়ে আরেকটু থামি করতে করতে হেরেছে, তেমনি বাংলাদেশও বুঝি হেরে যাচ্ছে আফগানিস্তানের কাছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় দল হয়ে ওঠার দৌড়ে।
আরও পড়ুনডট, ডট, ডট—এভাবেই কি খেলে যাবে বাংলাদেশ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তুলনাটা তাই এখন একটু অন্যভাবে ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে চায়ের দোকানে, বাংলাদেশ দল কবে আফগানিস্তানের মতো হবে?
অথচ সবাই একসময় ভেবেছিলেন প্রশ্নটি উল্টো হবে। কারণ, ঘরোয়া ক্রিকেট অবকাঠামো থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব—সবকিছুতেই বাংলাদেশ এগিয়ে। তারকাদের আবির্ভাব ধরলেও তাই নয় কি! আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম থেকে মোহাম্মদ আশরাফুল, আফতাব আহমেদের সময়ে আফগানিস্তান ক্রিকেটের নামগন্ধ ছিল কতটা, কিংবা আদৌ কি ছিল?
আরও পড়ুনতাহলে কি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের ব্যর্থতার জন্য বিপিএলই দায়ী২১ ঘণ্টা আগেকিন্তু কালের ঘরে শনি ডেকে আজ উল্টে গেছে পাশার দান। বিশ্বব্যাপী টি–টোয়েন্টির ফ্র্যাঞ্চাইজি বাজারে আফগানদের রমরমা অবস্থা। এদিকে বাংলাদেশ থেকে ছিলেন এক সাকিব আল হাসান, তাঁর বাইরে বাকিদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়েই শুধু নাম জমা দেওয়া পর্যন্তই। কারণ, যুগের চাহিদা মিটিয়ে আফগানিস্তান যে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলছে, প্রজন্মকে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেভাবে খেলতে শেখাচ্ছে, বাংলাদেশ কি তা পারছে? ওয়ানডে ক্রিকেটে সময় এখন তিন শ পেরিয়ে সাড়ে তিন শ ছোঁয়ার। বাংলাদেশের নব্বই দশকের আড়াই শর ঘর ছুঁতেই ঘাম ছুটে যাচ্ছে!
১৭৭ রান করে ইতিহাস গড়েছেন আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
মে মাসে বিজিবির অভিযানে ১৩৩ কোটি টাকার চোরাচালান জব্দ
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৩ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি জানায়, জব্দ করা চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১ কেজি ৫১২ গ্রাম স্বর্ণ, ১০ হাজার ৫৪৪টি শাড়ি, ৫ হাজার ১৪০টি কাপড়, ৩ হাজার ৪৭২টি তৈরি পোশাক, ১৯ হাজার ৩১৪ মিটার থান কাপড়, ২ লাখ ৫২ হাজার ২৯টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৫ হাজার ৪৪৩টি ইমিটেশন সামগ্রী, ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৫১টি আতশবাজি, ১৭ হাজার ৫২৩ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ১৫১ কেজি চা পাতা, ৯২ হাজার ৪৮৭ কেজি সুপারি, ৫৩ হাজার ৪০ কেজি চিনি, ২০ হাজার ৪৪২ কেজি সার, ২৯ হাজার ৯৮৫ কেজি কয়লা, ১০০ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ৩৪১টি মোবাইল, ১৭ হাজার ৬৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৬ হাজার ৫৪০টি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১৫,১১২টি চশমা, ৬ হাজার ৫৪৩ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫ হাজার ৯৬০ কেজি ভোজ্য তেল, ১০১০ লিটার ডিজেল/অকটেন, ১ হাজার ৫২৬ কেজি পিঁয়াজ, ৮ হাজার ৮২৬ কেজি রসুন, ২০ হাজার ৬৪২ কেজি জিরা, ১১ হাজার ২৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৫০ হাজার ১৯১ কেজি ফুচকা, ৯ হাজার ১৭৯ কেজি মাছ, ৫০ হাজার ৬০৩ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ৯৩৪ কেজি কফি, ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৩ পিস চকোলেট, ১ হাজার ১৩১টি গরু/মহিষ, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১৩টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ১৫টি পিকআপ, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯২টি নৌকা, ২৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৭২টি মোটরসাইকেল এবং ২২টি বাইসাইকেল।
আরো পড়ুন:
ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ
ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ৫টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ৯মি.মি. পিস্তল, ২টি শট/পাইপ গান, ৫টি ম্যাগাজিন, ৪টি ককটেল, ২৪টি গুলি এবং ১টি হ্যান্ড গ্রেনেড।
এছাড়া গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৯৬৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১০ কেজি ৯৩৫ গ্রাম হেরোইন, ২৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১ কেজি ৪১০ গ্রাম কোকেন, ১০ হাজার ৫২১ বোতল ফেনসিডিল, ৮ হাজার ৯৮৩ বোতল বিদেশি মদ, ৭১.২৫ লিটার বাংলা মদ, ৮১৩ বোতল ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৯১৩ কেজি ৬৩০ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৬০২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩০ হাজার ১১৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫৪ ঞাজার ৩৪৭ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫ বোতল এলএসডি, ২০ হাজার ৪৯৩টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৭৩৭টি এমকেডিল/কফিডিল এবং ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৪ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৫ জন চোরাকারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৭১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৯০ জন মিয়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/এসবি