ভোটে সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়: তারেক রহমান
Published: 28th, February 2025 GMT
সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য নিরাপদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘বিরাট সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, যতক্ষণ না জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ ও সরকার গঠন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়।
শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। খবর বাসসের।
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৫ আগস্ট ‘কংসরূপী নৃশংস গণহত্যাকারী স্বৈরাচার’ বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। স্বৈরাচার পালালেও গণতন্ত্র কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের যে দোসর, এরা নানা কৌশলে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টায় প্রতিনিয়ত লিপ্ত।
তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু একটি দেশের জনসংখ্যার চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য একটি শব্দ মাত্র, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। এ বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী কিংবা সংশয়বাদী, দেশের প্রতিটি নাগরিকের গর্বিত পরিচয়– আমরা বাংলাদেশি।
‘বাংলাদেশ সবার’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, সব নাগরিক সমঅধিকার ভোগ করবে– এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এবং বিএনপি বিশ্বাস করে দলমত, ধর্ম, দর্শন যার যার, রাষ্ট্র কিন্তু সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। সুতরাং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সবার সামনে আগামী জাতীয় নির্বাচন একটি বিরাট বড় সুযোগ।
সনাতনী সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিতাড়িত পলাতক স্বৈরাচারের সময় গত দেড় দশকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কিংবা তাদের ধর্মীয় স্থাপনা ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনাগুলো যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, হাতেগোনা দু-একটি ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশের সংখ্যালঘুকেন্দ্রিক অধিকাংশ হামলার ঘটনা কিন্তু কোনো ধর্মীয় কারণে হয়নি। ঘটনাগুলো যাচাই করলে দেখা যাবে, এসবের নেপথ্যে ছিল অবৈধ লোভ-লাভের জন্য দুর্বলের ওপর সবলের হামলা। কিংবা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সে জন্যই আপনাদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।
একটি রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন রয়েছে কিনা, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রে যদি আইনের শাসন না থাকে, কেউ নিরাপদ নই। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনোই বিকল্প নেই। একমাত্র আইনের শাসনই যে কোনো মানুষের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারে।
চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হল মাঠে আয়োজিত জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রদীপ চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সিটি মেয়র ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ ত র ক রহম ন গণতন ত র ব এনপ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।
শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।