Samakal:
2025-11-03@21:22:21 GMT

কাঁঠাল অভিযান...

Published: 28th, February 2025 GMT

কাঁঠাল অভিযান...

বার্ষিক পরীক্ষার পরের ছুটিতে ঢাকা থেকে দূরের কোনো শহরে বেড়াতে যাবার জন্য আপু প্রতিদিন আব্বার কাছে ঘ্যান ঘ্যান করতে লাগলো। আব্বা প্রতিদিনই বলেন, এই সময়ে সবাই বেড়াতে যাওয়ায় টিকিট পাওয়া যাবে না; ভালোভাবে কোথাও সময় কাটানো যাবে না। আমার কাছেও মনে হলো একটু ঘুরে এলে কী এমন হয়? শেষ পর্যন্ত আব্বা রাজি হয়ে গেলেন। আগের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা জানতাম না, কোথায় যাবো? আব্বা যখন বললেন, কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে যাবেন, তখন আম্মু বিরক্ত হয়ে বলেন, ‌‘ওটাতো তোমাদের সরকারি অফিসারদের ট্রেনিং সেন্টার, সেখানে বাচ্চারা মজা পাবে না।’ আব্বা মুচকি হেসে বলেন, ‘বাংলার একটি প্রাচীন জনপদে গিয়ে বাচ্চারা অনেক কিছু শিখতে পারবে। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি যাকে বার্ড বলে, সেটিও খুব সুন্দর আর নিরাপদ।’
আমরা সকালে মহানগর প্রভাতী ট্রেনে কুমিল্লা রওনা দিয়ে দুপুরের আগেই পৌঁছে গেলাম। এতো সুন্দর পাহাড়, লন টেনিসের কোর্ট, সুইমিং পুল, হাজার হাজার গাছ দেখে মনটা ভরে গেলো। আব্বা একে একে বার্ডের ভেতর ট্রেনিং সেন্টার, ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, লাল-গোলাপি অসংখ্য রঙের ফুলের বাগান ঘুরিয়ে দেখালেন। 
আপু মামুন দাদাকে মোবাইল ফোনে জানালো, আমরা বার্ডে এসেছি। মামুন দাদা আমাদের বললেন, ‌‘লালমাইয়ের ময়নামতি বিহার-যাদুঘর, নব শালবন বৌদ্ধ বিহার, রাণীদিঘি, শালবন অবশ্যই ঘুরে আসবে।’ তিনি কুমিল্লা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের একটা ছবি তুলে দিতে বলেন। কেননা, সেই স্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। এই স্কুলটি বর্তমানে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ। ছোটবেলায় মামুন দাদা বার্ডের ঠিক পাশেই কোর্টবাড়িতে থাকতেন। আমরা বার্ডের নীলাচল পাহাড়ে উঠে ক্যাডেট কলেজের ছবি তুলে মামুন দাদাকে পাঠিয়ে দিলাম।            
কয়দিনের বেড়ানোর সময় কুমিল্লার বিখ্যাত মাতৃভাণ্ডারের মজার রসমালাই, ছানামুড়কী খাই। আসার দিন আব্বাকে বললাম, ‘মামুন দাদার জন্য কী নেব?’ একটি বড় গাছের নিচে এসে সবুজ রঙের ফল দেখিয়ে বলেন, ‘বার্ডের এই ফলটি নিয়ে যাও। তোমার মামুন দাদা অনেক খুশি হবেন।’ এটা কী ফল, বলায় আব্বা হাসতে হাসতে বলেন, ‘মুচি’। আপু রাগ করে বলে, ‘তুমি কী আমাদের বাচ্চা পেয়েছো? মুচি, আবার কোনো ফল হতে পারে?’ শেষ পর্যন্ত আব্বা বুঝিয়ে বলেন, কাঁঠালের কচি অবস্থাকে মুচি বলে। আমি একটি আস্ত কাঁঠাল টিস্যুপেপার দিয়ে মুড়িয়ে পকেটে রেখে দিলাম মামুন দাদাকে দেবো বলে। আসলে এটি হচ্ছে আমার কাঁঠাল অভিযান! 

বয়স : ১+২+২+৩+৪ বছর; ষষ্ঠ শ্রেণি, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ